কালাবদর নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবে দুই জেলে নিখোঁজ, লঞ্চ ভাংচুর-লুট কালাবদর নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবে দুই জেলে নিখোঁজ, লঞ্চ ভাংচুর-লুট - ajkerparibartan.com
কালাবদর নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবে দুই জেলে নিখোঁজ, লঞ্চ ভাংচুর-লুট

3:35 pm , January 30, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মেহেন্দিগঞ্জের কালাবদর নদীতে কুয়াশায় নিয়ন্ত্রন হারানো লঞ্চের ধাক্কায় চারটি জেলে নৌকা ডুবেছে। এতে দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে। বিক্ষুদ্ধ জেলে ও স্থানীয়রা লঞ্চে ভাংচুর, কর্মচারীদের মারধর করে গুরুতর আহত করা, মালামাল ও টাকা লুট করেছে বলে এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৫ লঞ্চের সুপারভাইজার জানিয়েছেন। এছাড়াও বিক্ষুদ্ধরা নৌ-পুলিশের উপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিলো। সোমবার ভোর রাত থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত মেহেন্দিগঞ্জের চর শেফালী লঞ্চঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিখোঁজ জেলে হলো হিজলা উপজেলার বরজালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. বাকীউল্লাহ সিকদার (৪০) ও একই ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বাকের মৃধা (৩৫)। উলানিয়া নৌ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্য মো. ফারুক হোসেন জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এমভি এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৫ লঞ্চ চর শেফালী ঘাটে নোঙ্গর করতে গিয়ে মাছ ধরা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ধাক্কা দেয়।
এতে পাঁচটি নৌকা চুর্ন-বিচুর্ন হয়ে ডুবে গেছে। এসব নৌকার জেলেরা লাফিয়ে নদীতে পড়ে রক্ষা পেয়েছে। তবে দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরা চেষ্টা করছে।
পরিদর্শক ফারুক আরো জানান, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা লঞ্চের কর্মচারীদের মারধর, ভাংচুর ও লুট করেছে। মেহেন্দিগঞ্জ থানার পুলিশের সাথে তর্ক-বিতর্ক করেছে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান এসে জনতাকে শান্ত করেছে। বর্তমানে লঞ্চ তাদের হেফাজতে রয়েছে। যাত্রীদের বিকল্প নৌযানে গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে।
মেহেন্দিগঞ্জের জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাদের ফরাজী বলেন, লঞ্চের ধাক্কায় কয়েকটি জেলে নৌকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দুই জন জেলে নিখোঁজ রয়েছে। তাদের উদ্ধারে ডুবুরীরা তল্লাশী করছে।
এমভি প্রিন্স অব রাসেল লঞ্চের সুপারভাইজার মো. সাইদুর রহমান বলেন, রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া হয়।
সোমবার ভোর রাত তিনটার দিকে কালাবদর নদীতে পৌছুলে ঘন কুয়াশার কারনে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না। তখন চরশেফালী লঞ্চঘাটে ভেড়ানোর সিদ্বান্ত নেয় মাষ্টার।
সুপারভাইজার বলেন, লঞ্চঘাটের চারপাশে জাল ফেলে জেলেরা পন্টুনের পাশে ছিল। লঞ্চঘাটে যাওয়ার সময় নদীতে ফেলা জালে লঞ্চের ডান পাশের পাখা আটকে যায়। বাম পাশের পাখা চালু থাকায় লঞ্চ ঘুরে পন্টুনে পাশে জেলে নৌকার উপর উঠে যায়। এতে কয়েকটি জেলা নৌকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। শুনেছি দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
সুপারভাইজার সাইদুর অভিযোগ করেন, এরপর ৩০/৪০ জন লাঠিসোটা নিয়ে লঞ্চ উঠে মাষ্টার মজিবর রহমানকে বেধরকভাবে পেটায়। এছাড়াও লঞ্চে ব্যাপক ভাংচুর করে। মাষ্টারকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে মাসুদ ও ইলিয়াসকে বেধরকভাবে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাকে (সুপারভাইজার) ধরে নামিয়ে একটি ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে বেধরকভাবে পিটিয়েছে।
এছাড়াও ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে জবাই করারও হুমকি দিয়েছে। লঞ্চের যাত্রীরা ৯৯৯ কল করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করেছে। তিনি বর্তমানে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সাইদুর আরো অভিযোগ করেন, পরে এলাকার আরো কয়েক শতাধিক লোক জড়ো হয়ে লঞ্চে তান্ডব চালিয়েছে। তারা লঞ্চের সকল গ্লাস ভাংচুর করেছে। দেড়শ কাটন ফল, নগদ ২০ হাজার টাকা, দুই ব্যারেল ডিজেল লুট করেছে। লঞ্চের তেলের লাই পিটিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে। এতে বিপুল পরিমান তেল নদীতে ভেসে গেছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় ট্রলার ভাড়া করে লঞ্চে থাকা দেড়শতাধিক যাত্রীদের গন্তব্যে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করা হবে কিনা বিষয়টি মালিক ও স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং পুলিশ বসে সিদ্বান্ত নেবেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT