গৌরনদী সদরের রিকসা ষ্টা- থেকে সরিকল সড়ক দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার তবুও খানাখন্দ গৌরনদী সদরের রিকসা ষ্টা- থেকে সরিকল সড়ক দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার তবুও খানাখন্দ - ajkerparibartan.com
গৌরনদী সদরের রিকসা ষ্টা- থেকে সরিকল সড়ক দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার তবুও খানাখন্দ

3:11 pm , June 8, 2019

গৌরনদী প্রতিবেদক ॥ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্টান্ড রিকসা ষ্টান্ড হইতে উপজেলার সরিকল বাজার পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭শত ৫০ মিটার সড়কটি দীর্ঘ দিন যাবত মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এ সড়কটি সংস্কারে বরিশাল এলজিইডি প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যায় করার পরেও সড়কটি খানাখন্দ ও জলাশয়ে পরিনত হয়েছে। এই সড়কটি দিয়ে দিয়ে উপজেলা পরিষদ, পৌর ভবন, মডেল থানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বরিশাল পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সহ উপজেলা সদরে আসা মন্ত্রী সাংসদসহ সকল ধরনের ভিআইপির যাতায়াত হলেও সড়কটির বেহাল দশা দেখার যেন কেউ নেই। সম্পূর্ন সড়কটিতে ছোট বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কটি জলাশয়ে পরিনত হয়। সড়কে অহরহ দূর্ঘটনাসহ ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক যান চলাচল। ঈদ উদযাপন করতে দেশে মানুষের জিজ্ঞাসা এ জনদূর্ভোগের শেষ কোথায়? কিছুদিন পর পর কয়েক ভ্যান বালি আর ইটের টুকরা ফেলে মেরামতের নামে সরকারি অর্থ লুটপাট। স্থানীয় লোকজন, সওজ ও বরিশাল এলজিইডিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৯৫-১৯৯৬ ইং অর্থ বছরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্টান্ড রিকসাষ্টান্ড হইতে উপজেলার সরিকল বাজার পর্যন্ত ১৫ হাজার ৭শত ৫০ মিটার দৈর্ঘ সড়ক নির্মানের প্রকল্প গ্রহন করে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি পাকা সড়ক নির্মান করেন। সড়কটি দিয়ে গৌরনদী উপজেলা সদরের জনগুরুত্বপূর্ন সরকারি দপ্তর সমূহ ও উপজেলার নলচিড়া ও সরিকল বন্দরের ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে ব্যবহার হয়ে আসছিল। ২০০৫ সালে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটি এলজিইডিকে হস্তান্তর করেন। সেই থেকে সড়কটির রক্ষনাবেক্ষনসহ যাবতীয় দায়ভার এলজিইডি গ্রহন করেন। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশী সময় ধরে সড়কটির বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১০-২০০১১ইং অর্থ বছরে ১৩ লাখ ৭০ হাজার, ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে ১৪ লাখ, ২০১৩-২০১৪ইং অর্থ বছরে ১কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার, ২০১৪-২০১৫ইং অর্থ বছরে ১৪ লাখ টাকাসহ সড়কটি সংস্কারে এক কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যায় করা হলেও সড়কের কোন পরিবর্তন হয়নি। স্থানীয়রা জানান দুই কোটি সংস্কারে ব্যায় করা হলেও সড়কটি থানাখন্দ ও আর জলাশয়ই রয়ে গেছে। সড়ক সংস্কারে নামে সামান্য কিছু খোয়া ও বালু ফেলে প্রভাবশালী নেতারা হাতিয়ে নিয়েছে সরকারি অর্থ। সড়কের সুবিধাভোগী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসি জানান, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্টান্ড রিকসাষ্টান্ড থেকে উপজেলার সরিকল বাজার পর্যন্ত সড়কটি গৌরনদীর একটি জন-গুরুত্বপূর্ন সড়ক। গৌরনদী বাসষ্টান্ড রিকসা ষ্টান্ড হইতে এই সড়ক দিয়ে উপজেলা পরিষদ, পৌর ভবন, মডেল থানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, বরিশাল পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়সহ সকল সরকারি দপ্তরে সেবা নিতে আসা জনসাধারনকে এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। গৌরনদী উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদামে মালামাল পরিবহনের একমাত্র সড়ক এটি। এ ছাড়া ঢাকা-গৌরনদী, নারায়নগঞ্জ- গৌরনদী লঞ্চে ব্যবসায়ীদের অমদানিকৃত পন্য টার্মিনালে নামানোর পরে এই সড়ক ব্যবহার করেই বিভিন্ন হাট বাজারে আনা নেওয়া হয়। এ ছাড়া গৌরনদী বৃহৎ ব্যবসায়ী বন্দর সরিকল ও নলচিড়ার যাতায়াতের মাধ্যমও হচ্ছে এই সড়কটি। বছরের পর বছর সড়কটি মরন ফাঁদে পরিনত হলেও দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ সড়কে মন্ত্রী, এমপিসহ নেতারা যাতায়াত করলেও জনসাধারনের দূর্ভোগ কি তাদের চোখে পরে না? ট্রাক চালক তকদির হোসেন (৪৫), মিনি ট্রাক চালক আলম চকিদার(৩৫), অটো চালক সহিদুল ইসলাম (৩৩)সহ অনেকেই জানান, দিন দিন সড়কটির দুরাবস্থা বেড়েই চলছে। অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে বাস চলাচল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল যাত্রী পরিবহন করতে হয় । তারা আরো জানান, গৌরনদী বাসষ্টান্ড হইতে সরকিল পর্যন্ত সড়কের মধ্যে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে “কোথাও কোথাও মনে হয় এটা সড়ক নয়, যেন খাল”। যাতে যানবাহন চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। নিরুপায় হয়ে চলাচল অযোগ্য এ সড়কে যানবাহন চলাচল করেছে। ঈদে ঘরে মানুষ, পথচারি ও রিকসা চালকসহ অনেকই ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করে বলেন, রাস্তাটি মরন ফাঁদে পরিনতসহ জনদুর্ভোগে পরিনত হয়েছে। দেখার কেই নেই। বৃষ্টির কারনে রাস্তার ওপর ঢালাই দেয়া পিচ উঠে বড় বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার সড়কটি ডোবায় পরিনত হয়েছে। সড়কটিতে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা বেড়েই চলছে। সরেজমিনে গিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী বাসষ্টান্ড রিকসা ষ্টান্ড থেকে উপজেলার সরিকল বাজার পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায় সড়কটির বেহাল চিত্র। কয়েক দিনের টানা বর্ষনে সৃষ্টি হয়েছে হাজারও ছোট বড় গর্তের। যা এক মহা খানাখন্দ। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তগুলো ডুবে যাওয়ায় সড়কে চলাচলকারী যানবাহন চালকসহ মিনিট্রাক, অটো টেম্পু, নসিমন, মটরসাইকেলসহ যানবাহন চালকরা গর্তগুলো দেখতে পান না ফলে তাদের অজান্তেই যানবাহন খাদে পরে বিকল হয়ে পরে। গৌরনদীর রিকসা ষ্টা-, সিসিডিবি, ক্রাথলিকচার্জ, কারিতাস, উপজেলা পরিষদ গেট, পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে, থানা মোড়, তাকওয়া ভবন, সার্কেল অফিস মোড়, তুলাতলা, টিখাসার, পিংলাকাঠী, কালনা, কুতুবপুর, কা-পাশাসহ অধিকাংশ এলাকার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। এ সব স্থান গুলেতে ছোট বড় হাজারো গর্ত। কোথাও কোথাও গর্তগুলো জলাশয়ে পরিনত হয়েছে। এ সময় পথচারী হেদায়েত হোসেন (৩৫), নজরুল ইসলাম (৪০) জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০)সহ স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে সড়কটির বেহাল দশা থাকলেও দেখার যেন কেউ নাই। উন্নয়নে দেশ ভাসলেও গৌরনদীর এ সড়কটি পানিতে ভাসছে। কয় দিন পর পর দেহি কয়েক ভ্যান বালি আর ইটের টুকরা হালায় । এ যেন রাস্তা মেরামতের নামে সরকারি কোটি কোটি টাকার লুটপাট। গৌরনদী এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান, সড়কটি সংস্কার ও পুনঃ নির্মানের জন্য ২০১৮-২০১৯ইং অর্থ বছরে ১৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরী করে অনুমোদনের জন্য প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা প্রকৌশলী মো. অহিদুর রহমান জনগুরুত্বপূর্ন সড়কে জনসাধারনের মহাদূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, সড়কটি বাস্তবায়নে দরপত্র প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। জরুরীভিত্তিতে দরপত্র আহবান করে ঠিকাদার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনদূর্ভোগ দুর করা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT