2:46 pm , May 19, 2019
সাঈদ পান্থ ॥ ‘সত্য, প্রেম, পবিত্রতা’ এই শ্লোগানে দিক্ষিত বরিশালের ঐতিহ্যবাহী ব্রজমোহন বিদ্যালয় (বিএম স্কুল) আজও সরকারি হয়নি। ১৩৬ বছর বয়সী এই স্কুলের অবকাঠামো ও নগরীর মধ্যে প্রায় ৬ একর জমি থাকার পরও সরকারি কারণ হচ্ছে না। এ বিষয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিলেও কোন সুফল পায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই ব্রজমোহন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ, বিজ্ঞানী সব্যসাচি বোষসহ দেশ বরেন্য অনেক ব্যক্তিবর্গ।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ব্রজমোহন বিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৮৮৪ সালে ব্রজমোহন ইনস্টিটিউশন নামে প্রথম শ্রেণীর ইংরেজী উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বরিশাল জিলা স্কুল এর পরে এটি বরিশাল শহরের দ্বিতীয় প্রাচীনতম উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে এখানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে পাঠদান করানো হয়। এছাড়া ব্রজমোহন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ বরিশালের বাংলা নববর্ষ উদযাপনের কেন্দ্র ও বিদ্যালয়ের বিস্তৃত মাঠে প্রতিবছর বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৮৮৪ সালের ২৭ জুন প্রখ্যাত সমাজসেবক, রাজনীতিক ও শিক্ষানুরাগী অশ্বিনী কুমার দত্ত তার বাবা ব্রজমোহন দত্তের নামে বরিশাল শহরে কালীবাড়ী রোড এলাকায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময় এটি ছিল বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন উচ্চ বিদ্যালয়।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, প্রাচীনতম এই স্কুলের প্রতিটি ভবনই নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে। বিশেষ করে ৫ একর ৮৫ একর জমিতে দেয়া হয়েছে সীমানা প্রাচীর। করা হয়েছে বিশাল মাঠ সংস্কার, অভিভাবকদের চজন্য স্থাপন করা হয়েছে ছাউনী, সাইকেল স্ট্যান্ড, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবসহ রয়েছে দুই টি ল্যাব, করা হয়েছে শহীদ মিনার সংস্কার, ৪টি কোয়াটার, পুকুর সংস্কার, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাসহ নানা কর্মকান্ড। কিন্তু তারপরও স্কুলের প্রায় ১২ শতাংশ জমি বেদখল করে রেখেছে দখলদাররা। এই স্কুলের শিক্ষার্থীরা গত ২০১৪ সালে আন্ত: স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সারা দেশের মধ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহাবুব মোর্সেদ শামিম বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটি সার্বিক অবস্থায় অন্যান্য স্কুলের তুলনায় ভাল রয়েছে। বয়সের দিক দিয়েও প্রাচীন। সরকারিকরণে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কিন্তু সরকারি হচ্ছে না। পাশের হারেও এই স্কুল আগের তুলনায় ভাল করছে। এব্যাপারে বিএম স্কুলের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, স্কুলটি সরকারি করণের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও চিঠি দেয়া হয়েছে। তারপরও স্কুলটি সরকারি হচ্ছে না। শহরের মধ্যে এই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠন সরকারি হওয়া উচিৎ।