আজ বিশ্ব পরিবার দিবস আজ বিশ্ব পরিবার দিবস - ajkerparibartan.com
আজ বিশ্ব পরিবার দিবস

3:01 pm , May 14, 2019

কাজী আফরোজা ॥ পরিবার হল সামাজিক বন্ধনের প্রথম স্তম্ভ। পারিবারিক বন্ধন একটি পবিত্র বন্ধন। রক্তের বাধনে পবিত্র বাধন। পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে অকৃত্রিম বন্ধন, সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তা অটুট রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। হাদিসে এ বন্ধনে অসম্ভব গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বর্নিত আছে রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। সকল শিক্ষার সূতিকাগার হচ্ছে পরিবার। আমাদের চিরায়ত এ সমাজ ব্যবস্থায় সুন্দর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে সুন্দর পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে সম্পর্ক সুন্দর, সুহৃদ হলে যে কোন জটিল সমস্যা অনায়াসে পরস্পরে মিলে মোকাবিলা করা যায়। সকলের এগিয়ে চলার পথে হয় মসৃন। মূলত এ প্রেক্ষাপটেই আজ দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। যৌথ পরিবারের এতিহ্য ধরে রাখার মানসিকতা সৃষ্টির মানসে দিবসটি পালিত হচ্ছে। সময়ের তাগিদে যৌথ পরিবার কিংবা পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখার বিষয়টি যখন সমাজে ক্রমান্বয়ে গুরুত্বহীন হয়ে উঠেছে ঠিক সে সময়ে আজকের এই আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। আজ ১৫ মে বিশ্ব পরিবার দিবস। দিবসটি উদযাপন হচ্ছে নানা আয়োজনে। বর্তমান সময়ের পারিবারিক অবস্থার চিত্রলিপি নিয়েও চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন সংস্কৃতির পরিবারের ভূমিকা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরিলক্ষিত হয়। এর উল্লেখ্যযোগ্য বৈশিষ্ট হচ্ছে বৈচিত্রপূর্ণ নানামুখী ধারা যে কারনে ইতিহাসের ধারাবাহিতকায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে এর গঠন ও অন্যান্য অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং হচ্ছে। সমাজ স্বীকৃত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বামী স্ত্রীর একত্রে বসবাস করাকে পরিবার বলে। আমাদের দেশে সাধারণত মা-বাবা, ভাই-বোন, চাচা-চাচি ও দাদা-দাদির সমন্বয়ে পরিবার গড়ে ওঠে। তবে শুধু একজন মহিলা বা একজন পুরুষকে পরিবার বলা হয় না। জন্মের পর আমরা প্রথমে শিক্ষা নেই পরিবার থেকে। সামাজিক আচার-আচরন, পরিবারের সবা প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, দুঃখ কষ্ট ভাগাভাগি করার মধ্যে দিয়ে আমরা মানবিক বন্ধনে একত্রিত হওয়ার গুনাবলি শিখে থাকি। পারিবারিক জীবনে শৃঙ্খলার বিকল্প কিছু নেই। পরিবার শব্দটি চার অক্ষরের হলেও এর অর্থ ব্যাপক। পরিবারের মাধ্যমে আমরা একে অপরের উপর নির্ভরশীলতা বাড়াই। সমাজে যে আমরা এক্যবদ্ধভাবে বসবাস করি সেটাও শিক্ষা নেই পরিবার থেকে। গ্রামাঞ্চলে আগে যৌথ পরিবার দেখা যেত। এখন আর সে রকম দেখা যায় না। আর শহরের জীবনে তো দেখা যায়না বললেই চলে। এখন মনে হচ্ছে জীবনের তাগিদেই আগের মত আর যৌথ পরিবার নেই। কোন মানুষ বিয়ে করার পর একটি সন্তান হলেই একটি ছোট্ট পরিবারের পত্তন করে নিচ্ছে। ইলামের দৃষ্টিতে পরিবার সমাজের মূল ভিত্তি। আর হিন্দু ধর্ম মমে সমাজের পরিবার হচ্ছে একটি মন্দিরের মতো। যেখানে দেবতা স্বরূপ মা বাবাকে মনে করা হয়। আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে আমাদের প্রত্যাশা বিশ্বের প্রতিটি পরিবারের বন্ধন দৃঢ় হোক। আর পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি পাক। পাশাপাশি পৃথিবীর সকল পরিবার সুখী হোক এই কামনা আমাদের সকলের আজকের দিনে। আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালন শুরু হয় ১৯৯৫ সাল থেকে। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। তাছাড়া ১৯৯৫ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিশ্ব শীর্ষক সম্মেলনে সামাজিক বন্ধনের উপর গুরত্ব আরোপ করা হয়। পারিবারিক বন্ধন গুলো দিন দিন ভেঙ্গে ছোট হয়ে যাচ্ছে। যার কারনে সামাজিক নানা সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। বাড়ছে নানা ধরনের অস্থিরতা। আমাদের ইসলাম ধর্মে এ কারনে রক্তের সম্পর্কের উপর জোর দেয়া হয়েছে। তাই আজকের আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসে আমাদের আশা থাকবে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় থাকুক। আর প্রতিটি পরিবার অনাবিল সুখ শান্তিতে থাকুক। একটি শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এই যে, ভবিষ্যতের নাগরিক তার মনোজগত প্রস্তুত হয় তার পরিবার থেকে। সে কিভাবে গড়ে উঠবে তা নির্ভর করে তার পরিবারের প্রথা, রীতিনীতি এ সবের উপর। তাই যে কোন শিশু সুষ্ঠু পারিবারিক শিক্ষা শৈশবেই নিয়ে থাকে। তাই পরিবার পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের যেটা মেনে চলা দরকার তা হচ্ছে সবার সাথে ভাল সম্পর্ক থাকা, সংসারের শৃঙ্খলা বজায় রাখা, পরিবারের সদস্যদের সাথে মিথ্যা না বলা, গুরুজনদের শ্রদ্ধা করা, রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে ফেরা, নিজস্ব কাজগুলো নিজে করা। বিশ্ব পরিবার দিবসে পরিবারের বন্ধন আবারো সুদৃঢ় হোক এই আমাদের প্রত্যাশা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT