মাদক বিরোধী অভিযানে বাউফলে ছয় মাসে গ্রেপ্তার-১৮০ মাদক বিরোধী অভিযানে বাউফলে ছয় মাসে গ্রেপ্তার-১৮০ - ajkerparibartan.com
মাদক বিরোধী অভিযানে বাউফলে ছয় মাসে গ্রেপ্তার-১৮০

6:42 pm , May 25, 2018

বাউফল প্রতিবেদক ॥ বাউফলে বিগত ছয় মাসে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক সেবন ও বিক্রির দায়ে ১’শ ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করলেও মূল হোতারা রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এ উপজেলায় মাদক ব্যবসার নেপথ্যে ক্ষমতাসীন দলের তিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বাউফল পৌরসভার তিন কাউন্সিলর, সাবেক এক ইউপি সদস্য, ছয়-সাত জন যুবলীগ নেতা ও সাবেক এক যুবদল নেতার নাম রয়েছে। এদের ছত্র-ছায়াতেই বাউফলে চলছে মাদক ব্যবসা। এসব বিষয়ে কয়েক মাদকসেবীর সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, উপজেলায় ইয়াবাসহ ও বিভিন্ন মাদক ব্যবসার মূল হোতা ওই ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় এলাকা ভিত্তিক মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে আরো অন্তত ২৫ জন মাদক বিক্রেতা। এই ২৫ বিক্রেতার কাছ থেকে ইয়াবা বড়ি ক্রয় করে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করছে আরও প্রায় দুইশত খুচরা মাদক বিক্রেতা। খুচরা এই বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে অন্তত ১৫-২০ জন নারী বিক্রেতা। এ সবই হয় মুঠোফোনের মাধ্যমে। খুচরা পর্যায়ের কোনো মাদক বিক্রেতা ধরা পড়লে মূল হোতাদের পক্ষ হয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনার জন্য রয়েছে আরও একটি চক্র। এই চক্রে রয়েছে একাধিক ইউপি সদস্য। এভাবে মোট চার স্তরে পরিচালিত হয় মাদক ব্যবসা। কিভাবে মাদক আসছে তাঁদের হাতে? এবং কিভাবে বিক্রি হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই মাদকসেবীরা বলেন, নৌপথে চট্টগ্রাম থেকে ভোলার ভেলুমিয়া হয়ে মাদকের চালান প্রবেশ করছে বাউফলে। পুলিশের তৎপরতা সত্ত্বেও থেমে নেই মরনঘাতী এই ইয়াবার ব্যবসা। রিক্সাচালক, মটরসাইকেল চালক, ডাব বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতার ছদ্দবেশে ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে দেদারছে। মোবাইলে দরদাম ঠিক করে বিকাশে মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করার পর খুচরা বিক্রেতাদের কথা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে এসে অপেক্ষা করে মাদকসেবীরা। এরপর খুচরা বিক্রোতারা ইয়াবা পৌঁছে দেয় অপেক্ষমান মাদকসেবীদের হাতে। পুলিশি অভিযানের কারনে বর্তমানে স্থান আর কৌশল পাল্টে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এই মাদক ব্যবসায়ীরা। এদিকে মাদক সেবন করে এ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও শ্রমমজীবী যুবকেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। আর এই মাদক ক্রয়ের টাকার জন্য বেড়েছে নানা ধরনের অপরাধ প্রবণতাও। টাকার জন্য তাঁরা বাবা-মাকে মারধর করা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করার মত ঘটনা ঘটাচ্ছে। লোকলজ্জার ভয়ে অভিভাবকেরা তা প্রকাশ করতে পারছেন না। দিন দিন পারিবারিক কলহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকের ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে মাদকসেবী ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাউফল পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন তার ছেলে আবুল বশার রনিকে গত বছর পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযান পরিচালনা করে গত ছয় মাসে আমরা ১’শ ৮০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছি। মাদক ব্যবসার মূল হোতাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে কিনা এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তাদেরকে পর্যবেক্ষন করছি। উপযুক্ত প্রমাণ হাতে পেলেই তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT