6:04 pm , August 3, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশব্যাপী পরিবহন সেক্টরের নৈরাজ্যের ঢেউ দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল সকাল থেকেই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে মালিক-শ্রমিকরা। এর ফলে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হচ্ছে। অপরদিকে ঝালকাঠী বাস মালিক-শ্রমিকদের খামখেয়ালীর কারনে গত তিন দিন ধরে বরিশাল সহ অন্য ৩টি জেলার কোন বাস চলছে না। শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র হাতে গোনা কয়েকটি বাস সীমিত কিছু রুটে চলাচল করলেও তাতে ১% যাত্রীও গন্তব্যে পৌছুতে পারছে না। গতকাল সকালে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে অনেক যাত্রী আটকা পড়েন। মিনিবাস টার্মিনাল থেকে ঝালকাঠী, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা সহ আরো কয়েকটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় গাড়ী কম থাকায় পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলার বাস টার্মিনালগুলোতে অনেক যাত্রী আটকা পড়েছে। ঢাকা সহ দেশের বেশীরভাগ এলাকা থেকে কোন বাস না আসায় সংকট আরো বাড়ছে। তবে গতকাল বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও সড়ক-মহাসড়কে ছাত্র-ছাত্রীদের বিক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়নি।
এদিকে, টানা চার ঘন্টা পর নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দূরপাল্লার কোনো বাস নথুল্লাহবাদে আসতে পারেনি, তেমনি বরিশাল থেকে কোনো বাস যেতেও পারেনি। বিষয়টি নিশ্চিত করে সাকুরা পরিবহনের ম্যানেজার আনিসুর রহমান জানান, বেলা আড়াইটায় প্রথমে সাকুরা পরিবহনের একটি বাস ২০ জনের অধিক যাত্রী নিয়ে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এরপর বেলা ৩ টার পর থেকে ঈগল ও হানিফসহ অন্যান্য দূরপাল্লার পরিবহনের বাস নির্ধারিত সময়ে যাত্রী নিয়ে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এরআগে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব হোসেন জানান, সকাল থেকে মাদারীপুর বাস মালিক সমিতি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে কোন বাস চলাচল করতে দেয়নি। তাই বরিশালে যেমন ঢাকা, যশোর, রাজশাহীসহ দূরপাল্লার কোন বাস আসতে এবং বরিশাল থেকে কোন বাস ওইসব রুটে যেতে পারেনি। তবে বরিশাল মালিক সমিতি কোন ধর্মঘট আহবান না করায় আভ্যন্তরীন রুটের বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। এদিকে কয়েকঘন্টার ধর্মঘটের কারনে যাত্রীরা বেশ বিপাকে পড়ে।
অপরদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্নস্থান থেকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় হাজারখানেক যাত্রী বেনাপোল স্থল বন্দরে গতকাল সকাল থেকে আটকে আছে। প্রতিবেশী দেশ ফেরত এসব যাত্রীদের বেশীরভাগের কাছেই থাকা ও খাবার সংগ্রহের মত কোন টাকা পয়সা নেই বলেও জানা গেছে। বরিশাল-বেনাপোল রুটের পরিবহন কর্মী মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল দুপুরে জানান, শুধুমাত্র বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সহ¯্রাধিক যাত্রী গতকাল সকাল থেকে দেশের এ বৃহৎ স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। বেনাপোল-বরিশাল রুটে ৫টি কোম্পানীর অন্তত ২৫টি এসি-নন এসি বাস প্রতিদিন যাত্রী বোঝাই করে চলাচল করলেও গতকাল সকাল থেকে তার সবই বন্ধ ছিল।