আবারো রুপাতলী থেকে ১৮ রুটে বাস চলাচল বন্ধ আবারো রুপাতলী থেকে ১৮ রুটে বাস চলাচল বন্ধ - ajkerparibartan.com
আবারো রুপাতলী থেকে ১৮ রুটে বাস চলাচল বন্ধ

6:50 pm , June 21, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দুই বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্বে ফের বরিশাল থেকে দক্ষিনাঞ্চলের ১৮ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টা থেকে নগরীর রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালি, কুয়াকাট, ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ঈদ পরবর্তী বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন রুটের কর্মস্থলমুখী লাখ লাখ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এজন্য প্রশাসনের অসহযোগিতাকেই দায়ি করছেন বাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

বরিশাল জেলা বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকার পরে ঈদের আগে গত ১৩ জুন বৃহস্পতিবার বরিশাল থেকে ঝালকাঠি রুটে সরাসরি বাস চলাচল শুরু হয়। বিভাগীয় কমিশনারের আহ্বানে দুই সমিতির নেতৃবৃন্দর মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাস চলাচল শুরু হয়েছিলো। যার ফলে ওইদিন থেকে বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে সরাসরি বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা জেলার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। ঈদের মধ্যে ভোগান্তি’র হাত থেকে রক্ষা পায় লাখ লাখ যাত্রী। ঈদের পরে পুনরায় প্রশাসনের মধ্যস্ততায় বৈঠক করে দুই সমিতির দাবীর বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগেই ঝালকাঠি সমিতি বরিশাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঝালকাঠি জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি তাদের বাস বরিশাল থেকে পুনরায় সরিয়ে নেয়। পূর্বের মত করে নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে কালিজিরা ব্রিজের পরে রায়াপুরে ঝালকাঠি সমিতির আওতাধিন অস্থায়ী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী পরিবহন শুরু করে।

শহীদুল ইসলাম টিটু বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল মালিক সমিতির বাস যাত্রী নিয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। কিন্তু রায়াপুর এলাকায় বাস আটকে দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহায়তায় সেখান থেকে বাস ছাড়িয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। কিন্তু ঝালকাঠি বাসস্ট্যান্ডে বাস পৌছানো মাত্রই ভাংচুর ও স্টাফদের মারধর করা হয়েছে। এ অবস্থায় বেলা ১১ টা থেকে নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস মালিক ও শ্রমিক নেতারা দক্ষিনাঞ্চলের ১৫ টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস সমিতির সাধরান সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝালকাঠির জেলার সড়ক হয়ে দক্ষিনের ৬টি রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ ছিলো। কিন্তু বিভাগীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঈদের আগে তা স্বাভাবিক হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারো বাস চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি। সকালে তারা আমাদের বাস ভাংচুর ও স্টাফদের মারধর করলে রূপাতলী থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

বরিশাল-পটুয়াখালী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, ঈদের পূর্বে বিভাগীয় প্রশাসনের আহ্বানে নগরীর সার্কিট হাইসে বরিশাল ও ঝালকাঠি সমিতির মধ্যে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে বিভাগীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিত থাকার কথা ছিলো। কিন্তু তারা ছিলেন না। তার মধ্যেও আমরা দুই সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়ে ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে সকাল রুটে সমন্বয় করে সরাসরি বাস চলাচল শুরু করি। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের পরে ২০ জুন বিভাগীয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আরো একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু বৈঠকটি শেষ পর্যন্ত হয়নি। যে কারনে ঝালকাঠি সমিতির পুনরায় বরিশাল থেকে বাস সরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি আমাদের সমিতির বাস শ্রমিকদের মারধর করেছে। বাস মালিক সমিতির এই নেতার দাবী প্রশাসনের সহযোগিতা এবং উদাসিনতার কারনেই ঝালকাঠি সমিতি বাড়াবাড়ি করছে। চলমান সংকটের সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন আজিজুর রহমান শামীন।

উল্লেখ্য রুটের ন্যায্য হিস্যা নিয়ে বরিশাল বাস মালিক সমিতির সাথে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির দ্বন্ধ দেখা দিলে গত ৩ জানুয়ারি বরিশাল থেকে ঝালকাঠী, পিরোজপুর, খুলনার বেশ কয়েকটি রুটে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির কোন বাস বরিশালে আসতো না এবং বরিশালের রূপাতলীস্থ বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস সমিতির কোন বাস ঝালকাঠিতে যেতে পারতো না।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT