7:00 pm , June 8, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বৃষ্টির জন্য আল্লাহ পাকের দরবারে ফরিয়াদ জানিয়ে গতকাল মহানগরীর জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে সর্ববৃহৎ জুমায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। নামাজ শেষে মোনাজাতে ইমাম বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবারে আর্জি জানান। এসময় হাজার হাজার মুসুল্লী আল্লাহুম্মা আমীন বলে দোয়া কবুলিয়াতের আর্জি জানান। শেষ জৈষ্ঠ্যের গ্রীষ্মের দুঃসহ গরমে বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলবাসী চরম কষ্টে আছেন। গত ৬ দিন ধরে বরিশালে কোন বৃষ্টি নেই। তাপমাত্রার পারদও প্রায় ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে।
এদিকে ভরা বর্ষা মাথায় করে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকুল হয়ে মধ্যঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করার কথা বলা হলেও দুসঃহ দাবদাহে দক্ষিণাঞ্চলের রোজাদার থেকে আমজনতার দূর্ভোগের শেষ নেই। গরমে রোজাদারদের ছাতি ফাটার উপক্রম। তাপমাত্রার পারদ প্রতিদিনই ওপরে উঠছে। বৃহস্পতিবার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫.৬ ডিগ্রীতে বৃদ্ধি পায়। গতকালও তা ৩৫ ডিগ্রীর কাছে পীঠে ঘোরা ফেরা করে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ এলাকার সৃষ্টির খবর দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরেই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকা জুড়েই জৈষ্ঠ্যের দাবদহের দাপট চলছে। ফলে সাধারন মানুষের দূর্ভোগ এখন সব বর্ণনার বাইরে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকা যড়ে মৃদু তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকার কথাও বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। দিনভরই নীল আকাশে সাদা মেঘপুঞ্জ ভেসে বেড়ালেও বৃষ্টির কোন দেখা নেই। তবে গতকাল দুপুরের পরে বরিশালের আকাশ কিছুটা কালো মেঘ পুঞ্জিভূত হলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি। আর দিনরাতের দাবদাহের সাথে বিদ্যুতের লাগামহীন বিড়ম্বনা চরম দূর্ভোগে ফেলছে রোজাদার সহ সাধারন মানুষকে। খোদ বরিশাল মহানগরীতেও দিন ছাড়িয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভ্রাট আর সংকট চরম বিড়ম্বনায় ফেলছে রোজাদার সহ সাধারন মানুষকে। এমনকি ঈদের বাজারেও ছন্দপতন ঘটাচ্ছে প্রচন্ড তাপদহের সাথে এ বিদ্যুৎ সংকট।
তবে গত মাসে বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ১৬% বেশী ছিল। এসময় সারা দেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ১৪.৩% বেশী বৃষ্টি হলেও আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে চলতি মাসে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও স্বাভাবিক ৪৮৩ মিলিমিটারের স্থলে ৪৩৫-৫৩০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার কথা বলা হয়েছে। গতমাসে বরিশাল অঞ্চলে ২৬০ মিলিমিটারের স্থলে ৩০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের এ পরিমান ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ১৫.৯% বেশী।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকলভাগ হয়ে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। আবহাওয়ার অবস্থা মৌসুমী বায়ু আরো অগ্রসর হবার অনুকুলে রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে এবার সময়মত মৌসুমী বায়ু দেশে বিস্তার লাভ করলেও বৃষ্টিবিহীন তাপদাহের বিষয়টি সকলকেই ভাবিয়ে তুলেছে। যথেষ্ট দূর্ভোগে দক্ষিণ জনপদের রোজাদার থেকে মানুষও।