পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত শুরু পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত শুরু - ajkerparibartan.com
পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত শুরু

3:15 pm , June 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সদর উপজেলার কড়াপুর পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত কম্পিউটার শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত শুরু হয়েছে। সদর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার দেয়া ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন বাতিল করে এবার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এরই মধ্যে দেলোয়ার হোসেন এর কম্পিউটার সনদ অবৈধ বলে প্রমান করেছে। সেই সাথে দেলোয়ার হোসনকে পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে সমবায় কর্মকর্তার ন্যায় তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে আনতে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে ম্যানেজের চেষ্টা করছে অভিযুক্ত শিক্ষক দেলোয়ার হেসেন।
জানাগেছে, জাল ও অবৈধ কম্পিউটার সনদের মাধ্যমে ২০০৩ সালের ১ মার্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করে। ২০১৪ সালে সর্ব প্রথম তার বিরুদ্ধে জাল সনদের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তক তদন্ত হয়। উক্ত তদন্তে তার জাল সনদের গোপনীয়তা প্রমানিত হয়। উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে তার নাম এমপিও থেকে বাতিল করে দেয়। যদিও বিদ্যালয়ের কার্য নির্বাহী কমিটি উক্ত জাল সনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে তার সরকারি- বেসরকারি বেতন ভাতা স্থগিত করে দেয়।
তাছাড়া ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক সদস্য জেলা প্রশাসকের নিকট তার জাল সনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক অভিযোগটি তদন্তের জন্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরকে নির্দেশ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে তদন্ত না করে বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসানকে দায়িত্ব প্রদান করেন। সমবায় কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা পেলেও রহস্যজনক কারনে তিনি প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে কম্পিউটার শিক্ষকের পক্ষে অসত্য তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পক্ষান্তরে বিদ্যালয়ের কার্য নির্বাহী কমিটি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে দেলোয়ার হোসেনের কম্পিউটার সনদ যাচাইয়ের জন্য ঢাকায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নিকট প্রেরণ করেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উক্ত কম্পিউটার সনদ যাচাই করে সনদ পত্রের ফটোকপিতে মন্তব্য করেন, ‘ইয়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ইস্যুকৃত নয়’। পরবর্তীতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকগন পুনরায় জেলা শিক্ষা অফিসারকে সনদ যাচাইয়ের বিষয়টি একই বছরের ১২ নভেম্বর লিখিতভাবে অবহিতপত্র প্রেরন করেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী বরিশাল সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একই বছরের ১৮ নভেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জাল সনদের বিষয়টি উল্লেখ করে একটি অবহিতপত্র প্রেরন করেন। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মো. আনছার আলী হাওলাদার চলতি বছরের ২২ মে বর্তমান জেলা প্রশাসকের নিকট সদর উপজেলা সমবায় অফিসার মো. কামরুল আহসানের দাখিলকৃত জাল সনদের অসত্য তদন্ত প্রতিবেদনের পুনঃতদন্ত চেয়ে আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক পুনরায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলেন।
তার নির্দেশ মোতাবেক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি পুনঃ তদন্তের জন্য সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরকে দায়িত্ব প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষকের অভিমত কম্পিউটার শিক্ষক তার জাল সনদের বিষয়টি আড়াল করার জন্য বিভিন্ন মহলে জানায় যে বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সাথে তার পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও জমি নিয়ে মামলা রয়েছে। তাই সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে হয়রানী করছে। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, কম্পিউটার শিক্ষক তার জাল সনদের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে নেয়ার জন্য সর্বোচ্চ তদবীর চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশান শিক্ষক আরও বলেন, বিদ্যালয়ের কার্য নির্বাহী কমিটি কম্পিউটার শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রমানের ভিত্তিতে গত ১০ জুনায়ারী তাকে চুড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT