অতঃপর রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করলো স্ত্রী মিন্নি অতঃপর রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করলো স্ত্রী মিন্নি - ajkerparibartan.com
অতঃপর রিফাত হত্যার দায় স্বীকার করলো স্ত্রী মিন্নি

3:23 pm , July 18, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অবশেষে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার দায় স্বীকার করেছেন হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়ন বন্ড ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবিরের কাছে মিন্নি স্বামীকে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে মিন্নি ছাড়াও রিফাত শরীফকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে রিমান্ডে থাকা আরো দুই আসামী। এরা হলো মামলার এজাহারভুক্ত আসামী রাব্বী আকন ও সন্দেহভাজন আসামী আরিয়ান শ্রাবণ।
অপরদিকে রিফাত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রিফাত ফরাজী’র ছোট ভাই হত্যা মামলার তৃতীয় নম্বর আসামী রিশান ফরাজীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, মিন্নিকে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। সে রিমান্ডে থাকাবস্থায় রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে পুলিশের কাছে স্বীকারক্তি দিয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে এখনো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মিন্নি সহ এখন পর্যন্ত ১২ জন আসামী রিফাত শরীফ হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। এদের মধ্যে মিন্নি রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মঙ্গলবার জন্য পুলিশ লাইন্সএ নিয়ে যাওয়া হয়। এতে হত্যার সাথে তার সম্পৃক্ততা খুঁজে পায় পুলিশ। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। অপরদিকে সকালে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তদের অধিকাংশই হত্যার সঙ্গে মিন্নি’র জড়িত থাকার কথার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে। তাছাড়া হত্যাকান্ডের পূর্বের দিন এবং ঘটনার দিন হত্যাকান্ডের আগে নয়ন, রিফাত সহ অন্যান্য আসামীদের সাথে মিন্নি’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। যার কল লিস্ট পুলিশের হাতে রয়েছে। তাছাড়া হত্যার পূর্বের রাতে নয়ন বন্ডের সাথে মিন্নি’র গোপনে পরিকল্পনা হয় বলেও জানাগেছে। তিনি বলেছেন, মুলত নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফ ভালো বন্ধু ছিলো। তাদের মধ্যে মাদকের সংযোগ ছিলো। ঘটনার পূর্বে রিফাত শরীফকে মাদক মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে। তাকে গ্রেফতার করানোর পেছনে নয়ন ও রিফাত ফরাজীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে রিফাত শরীফ সন্দেহ করে। এজন্য জেল থেকে জামিনে বের হয়ে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ থেকেই তাদের মধ্যে শত্রুতা আরো কঠোর হয়। শেষ পর্যন্ত এ নিয়েই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। অপরদিকে বরগুনা জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশিল সূত্র জানিয়েছে, বিয়ের পরেও নয়ন বন্ডের সাথে মিন্নি’র পরকিয়ার সম্পর্ক ছিলো। যাতে বাধার সৃষ্টি করে রিফাত শরীফ। এজন্যই মিন্নি চেয়েছিলো তার স্বামী রিফাত শরীফকে সায়েস্তা করতে। সে জন্য নয়ন ও রিফাত ফরাজীদের সাথে পরিকল্পনা করে মিন্নি। সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় নয়ন ও রিফাত ফরাজী। রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে তারা। আর ঘটনার সময় নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীকে মিন্নি’র জড়িয়ে ধরে রিফাত শরীফকে কোপাতে বাধা দেয়ার যে চিত্র দেখা গেছে সেটা মিন্নি’র নাটক ছিলো বলেও পুলিশের সূত্র নিশ্চিত করেছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT