ফণী’র প্রভাবে বরিশালে রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ ফণী’র প্রভাবে বরিশালে রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ - ajkerparibartan.com
ফণী’র প্রভাবে বরিশালে রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ

3:09 pm , May 4, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে জেলায় বড় ধরনের তেমন কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি। তবে আংশিক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে রবি ফসলি জমির। এ সকল ফসলি জমির আর্থিক ক্ষতির পরিমান নির্ধারনের জন্য কাজ চলছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এ কথা জানান তিনি। ভারতের ওডিশায় আঘাত হানার ২১ ঘণ্টা পর শনিবার সকাল ছয়টার দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী। তবে বরিশালে ঘূনীঘড় ফণী’র প্রভাব কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমান। তবে আবহাওয়ার পূভাবাসে ৭ নম্বর সর্তক সংকেত বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, বরিশালে সকালে কিছুটা দমকা হাওয়া বয়েছে। তবে এখন আমরা বিপদ মুক্ত। নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এখনো কিছুটা বাতাস থাকার কারনে নদীতে ছোট ডিঙ্গি নৌকা ও স্প্রীট বোর্ডে চলাচল না করার জন্য তিনি আহবান জানিয়েছেন। এর জন্য বরিশাল নৌ পুলিশ , কোস্ট গার্ডকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ চলাচল শুরু করতে পারবে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারনে জেলায় কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী’র কারনে বরিশালের ৩৩১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা ছিল। যেখানে ৫০ হাজার ৫৬৫জন আশ্রয় গ্রহন করে। যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৩১ হাজার ৬শ ২১ জন এবং পুরুষের সংক্ষা ১৮ হাজার ৯শ ৪৪ জন। বর্তমানে তারা অনেকই নিজ নিজ বাসায় ফিরে গেছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার লোক আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে নিরাপত্তা ও খাবার সরবারহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে বরিশালে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়নি। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ক্ষয় ক্ষতির একটি পরিমান প্রকাশ করা হয়েছে। এতে গবাদি পশুর কোন ক্ষয় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় ৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান ধানের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ১৫শ ১০ হেক্টর জমির মুগডাল, ১৪শ ৬৬ হেক্টর জমির মরিচ, ২৫০ হেক্টর জমির তিল, ৯৪০ হেক্টর জমির শাকসবজি, ১২০ হেক্টর জমির ভুট্টা, ৫৩৫ হেক্টর জমির পান, ৫৫২ হেক্টর জমির সয়াবিন এর ক্ষনি নিরুপন করা হয়েছে। এ সকল ফসলি জমির আর্থিক ক্ষতির পরিমান নির্ধারনের জন্য কাজ চলছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আঘাতে ১ হাজার ১৫টি বসত বাড়ির সামান্য ক্ষতি হয়েছে। উজিরপুর উপজেলার সাতলা-বাগধা বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের শিবপুর পয়েন্টে ২০ মিটার পরিমান সামান্য ক্ষতি হওয়ার সাথে সাথে মেরামত করা হয়েছে। তাছাড়া বরিশাল সিটি কপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নদী ভাঙ্গন রোধ কল্পে নির্মিত বাঁধের সামান্য অংশ ভাঙন সৃষ্টি হলে তাও তাৎক্ষনিক মেরামত কমা হয়েছে।
এছাড়া ছোট বড় সব মিলিয়ে ৬ হাজার ৬৫টি গাছের আংশিক ও সম্পূর্ন ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য সম্পদের মধ্যে ব্যাক্তি মালিকানাধীন ২৫টি পুকুরের মাছ আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার আংশিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।
তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমান চুড়ান্তভাবে নির্ধারনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে যেসকল উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র মানুষ এখনও রয়েছে তাদের জন্য খিচুর খাওয়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন দূর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রান মন্ত্রালয়ের সচীব।
আয়োজিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক (সাবেক সংসদ সদস্য) এ্যাভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুচ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইকবাল আক্তার, বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক হরি দাস শিকারী, জেলা ও প্রাণী সম্পদ অফিসার ড. নুরুল আলম সহ সরকারী ও বেসরকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এরআগে বেলা ১১টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় নৌ বন্দর পরিদর্শন করেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT