দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে আসছে রোজা দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে আসছে রোজা - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলে নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে আসছে রোজা

3:04 pm , April 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রমজান আসন্ন হলেও দক্ষিনাঞ্চলে একাধিক সমস্যা জনজীবনে বিড়ম্বনা বৃদ্ধি করে চলেছে। শবে বরাতের আগে থেকেই শাক-সবজি, মাছ, মুরগী, গরুর মাংস ছাড়াও ছোলা ডাল সহ রমজানের বেশ কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি জনজীবনে দূর্ভোগ নিয়ে আসছে। রোজা আসন্ন হলেও রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা-টিসিবি এখনো মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রয়োজনীয় নিত্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারেনি। এরসাথে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট পানি সরবরাহসহ চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও বিপন্ন করে তুলছে। চলমান এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের চরম বিড়ম্বনায় ফেলছে বিদ্যুৎ সংকট। বাড়ছে অভিভাবকদের উৎকন্ঠাও। সারা দেশের কোথাও ঘাটতি না থাকলেও মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকাতেই দুঃসহ বিদ্যুৎ সংকট সাধারন মানুষের দূর্ভোগকে সব বর্ণনার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। খোদ মহানগরীতে রাত ১২টার পরেও লোডশেডিং অব্যাহত রয়েছে। এবার শবে বরাতের আরো পনের দিন আগে থেকেই চিনি, ছোলা ডাল, খেসারী ডালসহ রমজানের কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংসের দাম শবে বরাতের আগেই কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৫শ টাকায় উঠেছে। ব্রয়লার মুরগীর দামও কেজিতে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২২০ টাকায় ঠেকেছে। এবারে কয়েক দফার কাল বৈশাখীর তান্ডবে সবজি বাগানে পানি জমে ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ফলে সরবারহ ঘাটতিতে দামও এখন চড়া। পটল, করলা, ঢেরশ থেকে শুরু করে সব ধরনের সবজি এখন ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকটি নদ-নদীতে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপিত থাকায় গোটা দক্ষিণাঞ্চল জুড়েই সরবারহ হ্রাসের সাথে দামও উর্ধ্বমুখী। রোজাকে সামনে রেখে সে প্রবনতা আরো বাড়ছে। তবে ১ মে থেকে দক্ষিনাঞ্চলের সব নদ-নদী সহ অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরে পরিস্থিতির উন্নতি হবার কথা রয়েছে। উন্মূক্ত জলাশয়ের সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় বদ্ধ জলাশয়ের মাছের দাম এখনো বাড়তি। এদিকে রোজাকে সামনে রেখে প্রায় ১১ মাস পরে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারেও কয়েকটি নিত্য পণ্য নিয়ে টিসিবি হাজির হবার কথা থাকলেও গতকাল পর্যন্ত শুধুমাত্র মশুর ডাল সহ ৩টি পণ্য নিয়ে ট্রাক নামিয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় এক-তৃতীয়াংশ ডিলারও পণ্য তুলে বিক্রি করছে না। এখনো ছোলাবুট, খেজুর নেই টিসিবি’র কাছে। চিনির সরবরাহও অপ্রতুল।
বিদ্যুৎ নিয়ে নজিরবিহীন দূর্ভোগে রয়েছে খোদ মহানগরবাসী। এ নগরীতে সান্ধ্যÑপীক আওয়ারের সরবারহ জটিলতা এখন মধ্য রাতের পরেও প্রলম্বিত হচ্ছে। ফলে রাত ১২টার পরেও লোডশেডিং হচ্ছে নগরীর অন্তত একÑচতুর্থাংশ এলাকায়। এছাড়াও সরবরাহ ও বিতরন ব্যবস্থার নজিরবিহীন ত্রুটির কারনেও এ নগরীতে দিন-রাত বিদ্যুৎ সরবরাহে বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে ঘন ঘন। রূপাতলীÑকাশিপুর ও রূপাতলীÑপলাশপুর ৩৩ কেভী সঞ্চালণ লাইনের ত্রুটি ছাড়াও কাশীপুর সাব-স্টেশনের ৩৩/১১কেভী ট্রান্সফর্মার ওভারলোড হয়ে যাওয়ায় এ নগরীর বিদ্যুৎ সরবারহ ও বিতরন ব্যবস্থা এখন সর্বকালের নাজুক পর্যায়ে। এমনকি কাশিপুর সাব-স্টেশনের একটি ৩৩/১১ কেভী ট্রান্সফর্মার ওভার লোডেড হয়ে আছে গত দুবছরাধিককাল যাবত। কিন্তু সেখানের সক্ষমতা বৃদ্ধি না করায় সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের পরেও লোডশেডিং করে ট্রান্সফর্মারটি রক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে দূর্ভোগে মহানগরীর একটি বড় এলাকার মানুষ। এসব বিড়ম্বনা আর দূর্ভোগের মধ্যেই রহমত নিয়ে মাহে রমজান দক্ষিণাঞ্চলবাশীর দরজায় কড়া নাড়ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে কতৃপক্ষের যথাযথ নজরদারী ছাড়াও টিসিবি’র দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ওয়াকিবাহাল মহল। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিতরন ও সরবারহ ব্যবস্থার মত অতি স্পর্শকাতর বিষয়টির কাঙ্খিত উন্নয়নে ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দায়িত্ববোধ বৃদ্ধিরও তাগিদ দিয়েছেন মহলটি। তবে কাশীপুর সাব-স্টেশনের ট্রান্সফর্মারের সমস্যা সমাধানে আজকালের মধ্যেই সেখান থেকে হাতেম আলী কলেজ ফিডারটি আলাদা করে রূপাতলী থেকে ফিড করার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওজোপাডিকোর কর্মকর্তাগন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT