3:08 pm , March 30, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দুঃখ প্রকাশ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দেয়া বক্তব্য ও আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য তার বক্তব্যের মাধ্যমে মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ তাদের। এজন্য ভিসি’র পদত্যাগের দাবীই একমাত্র দাবী হয়ে দাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবী না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন তারা। এর আগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর কলাবাগানে লিয়াজু অফিসে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন ভিসি। সভা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।’ আমি এই বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে রাজাকার সম্বোধন করিনি। বরং যারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে বাঁধা সৃষ্টি করতে চায় তাদের এমন কার্যক্রমকে রাজাকার সাদৃশ্য মর্মে মন্তব্য করেছি। তবে এ শব্দটি আমি কোনভাবেই আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলিনি। এর পরেও যদি আমার বক্তব্যে কোন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, তবে তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। এদিকে উপাচার্য লিখিত ভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বক্তব্য দিলেও তা প্রত্যাহার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বরংচ তাদের এক দফা এক দাবী উপাচার্যের পদত্যাগ। এ দাবীতে প্রতি দিনের ন্যায় শনিবার আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে চারটা থেকে শহীদ মিনারে তারা প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে রণসঙ্গীত, ব্যঙ্গ নাটিকা, কবিতা ও প্রতিবাদী গান পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম, সিফাত আহমেদ ও লোকমান হোসেন সহ আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলেছেন, উপাচার্য শুক্রবার যে বক্তব্য দিয়েছে তা তার মিথ্যাচার। কেননা তিনি শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেননি বলে দাবী করেছেন। অথচ তিনি যে গালি দিয়েছেন সেটা একেবারেই সত্যি এবং এর অনেক প্রমানও রয়েছে। তাছাড়া তিনি যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন তাতেও শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করেছেন, যারা আন্দোলন করছে তাদেরকে রাজাকার বলেছেন। আন্দোলনতো শিক্ষার্থীরাই করেছে। বাহির থেকে এসে কেউ আন্দোলন করেনি। সুতরাং আমরা ভিসি’র ওই মিথ্যাচার করে দেয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছি। প্রসঙ্গত: ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আয়োজন শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। পরে ভিসি রাজাকারের বাচ্চা বলে শিক্ষার্থীদের গালি দেওয়ার ইস্যু ধরে নতুন করে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। যে কারণে টানা পাঁচদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।