3:57 pm , March 11, 2019
সাঈদ পান্থ ॥ এক যুগ পর নিজস্ব ভবন পাচ্ছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)। ১০ তলা পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়টি নগরীর বান্দ রোডের ওয়াপদা কলোনির পাশে নির্মিত হচ্ছে। যা আগামী বছর হস্তান্তর হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন পুলিশ প্রশাসন। আধুনিক এই ভবন নির্মাণের জন্য ১ একর ৩৬ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যায়ে ভবন নির্মান কাজ শুরু করা হয় গত বছর। বিএমপি ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এক যুগেরও বেশি সময় আগে বরিশাল মেট্রোপলিটন ঘোষণার পর শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ওয়াপদা কলোনির পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি ভবনে পুলিশ কমিশনারের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এছাড়া সিটিএসবির (নগর গোয়েন্দা শাখা) কার্যালয়ও স্থাপন করা হয় পুলিশ কমিশনার কার্যালয় সংলগ্ন ওয়াপদা কলোনির অপর একটি ভবনে। সেখানে স্বল্প পরিসরে কাজ করতে মারাত্মক বেগ পেতে হতো পুলিশ সদস্যদের। পরবর্তীকালে সেখানকার পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় এবং সিটিএসবির কার্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ করে পুলিশ কমিশনার কার্যালয় স্থাপণের প্রস্তাব পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী পুলিশ কমিশনার এবং সিটিএসবির কার্যালয়ের ভবনসহ সব স্থাপণা এবং ১ দশমিক ৩৬ একর জমি পুলিশ বিভাগের অনুকূলে চূড়ান্তভাবে অধিগ্রহণ করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে ১০ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার ২৯৮ টাকা ব্যায়ে ওই ভূমির ওপর ১৬ হাজার ৭১৭ দশমিক ১৬ বর্গফুট জুড়ে নির্মিত হবে ১০ তলা আধুনিক ভবন। এদিকে নতুন ভবন নির্মানের জন্য নগরীর আমতলা মোড় বিজয় বিহঙ্গের পাশে একটি ভাড়া করা ভবনে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নতুন ভবন পেলে সেখানেই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে পুলিশ প্রশাসন দাবী করেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমকেই এবং এমকেবি (জেভি) এর অংশীদার মো. মিজান বলেন, ভবনের পাইলিং কাজ শেষ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ২০২০ সালের শেষ দিকে ভবন হস্তান্তর করা হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পে বেজমেন্ট, সাবস্টেশন, ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল বিদ্যুৎ, স্যানেটারি, ড্রেন ও পাম্প মোটর স্থাপণ। ভবনের অভ্যন্তরে আধুনিক ফিটিংস, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, কনফারেন্স রক্ষ, ক্যান্টিনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এছাড়াও কার্যালয়ের অঙ্গনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ২০ ফুট প্রশস্ত সড়ক থাকবে।
বিএমপি সূত্র জানিয়েছে, ২০০৬ সালে বরিশাল নগরী ও সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ৪টি থানা নিয়ে গঠিত হয় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ। ওই সময় কোতোয়ালি মডেল থানা ব্যতীত বাকি ৩টি থানা, পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়, মহানগর ট্রাফিক ও গোয়েন্দা বিভাগ এবং সিটিএসবিসহ অন্য দফতরগুলো স্থাপণ করা হয় ভাড়া বাড়ি ও সরকারি অব্যবহৃত ভবনে। আর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনস স্থাপণ করা হয় জেলা পুলিশ লাইনসের পশ্চিম দিকের একটি ভবনে। এর মধ্যে ১টি থানা স্থাপণ করা হয় পূর্বের ১টি পুলিশ ফাঁড়িতে। নগরীর রূপাতলীর বটতলা এলাকায় ৩ একরের বেশি সম্পত্তি মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনস স্থাপণ করার জন্য ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ লাইনস নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অনুমোদন হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরিশালের দ্বায়িত্বে থাকা বরগুনা গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবু জাফর বলেন, ‘আগামী আক্টোবরের মধ্যে ১ম তলা নির্মান কাজ শেষ হবে। পরে ধাপে ধাপে বরাদ্ধের প্রেক্ষিতে কাজ সম্পন্ন করা হবে।’ এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: মোশারফ হোসেন বলেন, ‘নিজস্ব কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে মেট্রোপলিটন পুলিশের কাজে ও জনসেবায় গতিশীলতা আরো বৃদ্ধি পাবে। ভবনটিতে আমরা ২০২০ সালের মধে উঠতে পারবো। তবে মাটির সমস্যার কারণে কাজ একটু বিলম্ভ হচ্ছে। তারপরও পাইলিং, গ্রাউন ফ্লোরের পিলার স্থাপন করা হয়েগেছে। ১ম অবস্থায় ১০ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ৫ তলা ভবন স্থাপন করা হবে। পরে বাকি কাজ করা হবে।’