কারান্তরীন ভা-ারিয়ার বাসিন্দা কয়েদির রহস্যজন মৃত্যু কারান্তরীন ভা-ারিয়ার বাসিন্দা কয়েদির রহস্যজন মৃত্যু - ajkerparibartan.com
কারান্তরীন ভা-ারিয়ার বাসিন্দা কয়েদির রহস্যজন মৃত্যু

3:37 pm , March 1, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে কারান্তরীন চুরি মামলার সাজাপ্রাপ্ত কয়েদির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কারাগারের ডিভিশন ভবনের রান্না ঘরের স্টোর রুম থেকে কয়েদি কবির সিকদারের (৪০) গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষের দাবী গলায় ফাঁস দিয়ে ওই কয়েদি আত্মহত্যা করেছে। তবে কারাগারের নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবী কতিপয় কয়েদির নির্যাতনে ওই কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক ও জেলার মো. ইউনুস জামান। কয়েদী কবির সিকদার (কয়েদী নং-৫৩২৯/এ) ভা-ারিয়া কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিলো। কারাগারে ফিরে আসার পরে সে ক্লিনার (ঝাড়–দার) হিসেবে কাজ করতো। জেলার ইউনুস জামান বলেন, দুপুরে কয়েদি কবির সিকদারকে কারা অভ্যন্তরে তার ওয়ার্ডে (এলাকায়) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে অনেক খোঁজা খুজির পরে কারাগারের ডিভিশন ভবনের রান্না ঘরের স্টোর রুমের আড়ার সাথে কবিরকে গলায় গামছা পেচানো ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কারাগারের হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় ওই কয়েদি জীবিত ছিলো। তাই কারা হাসপাতালের চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্টদের সাথে কথা বলে তাকে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
ইউনুস জামান বলেন, গত ৭/৮ বছর ধরে ডিভিশনাল ভবনে কোন কয়েদি নেই। তাই ওই ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই রয়েছে। তাছাড়া ভবনটির সামনে এবং ভেতরের দরজায় তালা দেয়া রয়েছে। যাতে কেউ ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে। যতটুকু ধারনা করা হচ্ছে ভবনের সীমানা প্রাচীরের পাশে থাকা কাঠাল গাছ দিয়ে ওই কয়েদি ভেতরে প্রবেশ করে। আর ভেতরে থাকা রান্না ঘরের বেড়া ভাঙা থাকায় সেখান থেকেই সে রান্না ঘরের স্টোর রুমে প্রবেশ করে গলায় ফাঁস দিতে পারে।
তিনি বলেন, এটি প্রকৃত আত্মহত্যা কিনা সে বিষয়টি আমিও নিশ্চিত নই। ময়না তদন্ত করলে এর প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে এটি যে নির্যাতনের ঘটনা নয় সেটা আমরা নিশ্চিত। কেননা বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২৩৮ জন কয়েদী রয়েছে। নির্যাতনের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই সেটা কেউ না কেউ দেখতো। তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এমন কোন অভিযোগ বা তথ্য আমারা পাইনি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী কারা হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট নাসির উদ্দিন বলেন, কারাগারের চিকিৎসক ডা. খুর্শিদ আলম ঘটনার সময় কারাগারে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। তাই আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই মৃতদেহ ডিভিশন ভবনের মেঝেতে পড়ে আছে। আমার ঘটনাস্থলে পৌছানোর পূর্বে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তখন সে মৃত অবস্থায় ছিলো। এর বেশি কিছু জানেন না বলে দাবী করেছেন ফার্মাসিস্ট নাসির উদ্দিন।
এদিকে কয়েকদী কবির সিকদারকে মৃত ঘোষনা করা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার (এএমও) ডা. আমিরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। যারা মৃতদেহ নিয়ে এসেছে তারা আমাকে জানিয়েছে এটি আত্মহত্যা। তবে এটি সত্যিই আত্মহত্যা কিনা সে বিষয়টি আমি নিশ্চিত নই। এটি ময়না তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
এদিকে কোতয়ালী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আমি এবং আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালের মর্গে লাশ প্রত্যক্ষ করেছি। কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে এটি আত্মহত্যা। তবে কারাগারের ভেতরে আত্মহত্যার সুযোগ হলো কিভাবে সে বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষই ভালো বলতে পারবেন। তাই বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক বলেন, আত্মহত্যার পেছনে নির্যাতনের কোন কারন থাকতে পারে না। হতে পারে সে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় আত্মহত্যা করেছে। তবে এই ঘটনায় কারো দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ পেলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান এর সাথে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।উপজেলার জামিরতলা গ্রামের দলিল উদ্দিন সিকদারের ছেলে। ভোলার মনপুরা থানায় ( দন্ডবিধি ৩২৮/৩৮০ ধারা) চুরি মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী ছিল সে। ২০১৮ সালের ২ আগস্ট থেকে তিনি চিকিৎসা জনিত কারনে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের কারান্তরীন ছিল। লাশ উদ্ধারকারী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. ইউনুস জামান জানান, ভোলা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত চুরি মামলায় পৃথক দুটি ধারায় কবির সিকদারকে পাঁচ বছর করে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়। সেই থেকে কবির ভোলা কারাগারেই ছিলো। বুকে ব্যথা জনিত কারনে তাকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসার জন্য প্রেরন করা হয়। এর পর তাকে কিছুদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT