6:34 pm , May 7, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সদর উপজেলার বন্দর থানা এলাকায় ইসলাম ধর্মবিরোধী প্রচারনাকারী হিযবুত হেযবুত তওহীদের চার নারী সদস্যকে জেলে পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার তাদের জেলে পাঠানোর আদেশ দেন মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শাহীন আহম্মেদ। তারা হলো- চরকাউয়া ইউনিয়নের মোতালেব কারিকরের স্ত্রী তাসলিমা বেগম, আহমদ কারিকরের স্ত্রী হাফিজা বেগম, মিজানুর রহমান কারিকরের স্ত্রী হোসনে আরা বেগম, আব্দুল আজিজ কারিকরের ছেলে তাসলিমা বেগম (২)। এদিকে, সংবাদ সম্মেলন করে হেযবুত তাওহীদ থেকে দাবী করা হয়েছে তাদের পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। সোমবার বিকালে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবী করেন হেযবুত তাওহীদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মাহাবুব আলম মাহফুজ। এ সময় লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি হেযতবুত তওহীদ’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চরমোনাই’র পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র নেতা-কর্মীদের দায়ী করছেন। এমনকি ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবেও আখ্যায়িত করেছে ডা. মাহাবুব আলম মাহফুজ।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, সাতানী গ্রামে হেযবুত তাওহীদ চার সদস্য ইসলাম ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর বিরুদ্ধে নানা অপ্রপচার করে। এই ঘটনায় কয়েক শ’ এলাকাবাসী তাদের বাড়ি ঘেরাও করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে। এই ঘটনায় বন্দর থানার এসআই মো. জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা করেছে। মামলার আসামী হিসেবে সোমবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তাদের জেলে পাঠানোর আদেশ দেয়।
অপরদিকে হেযবুত তাওহীদের সদস্যদের বসতবাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার দাবিতে বিকেলে করা সংবাদ সম্মেলনে ডা. মাহাবুব আলম মাহফুজ বলেন, ‘৪ মে সকাল ১০টায় বন্দর থানাধীণ সাতানী গ্রামের বাসিন্দা হেযবুত তওহীদের সদস্য তাসলিমা বেগমের বসত বাড়িতে সশস্ত্র হামলা, ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বন্দর থানা শাখার সভাপতি কাওছার আহম্মেদ সহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর এই ঘটনায় হামলার শিকার তাসলিমাসহ বাকি ৪ জন থানায় অভিযোগ দিতে চাইলেও থানার ওসি অভিযোগ না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়। পরে ওই চারজনকে বাড়ি থেকে থানায় ডেকে নিয়ে ইসলাম এবং ধর্মবিরোধী প্রচারনার মিথ্যা অভিযোগ এনে আটক ও পরবর্তীতে মামলা করে।
ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ অভিযোগ করে বলেন, মূলত স্থানীয় কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা আমাদের কার্যক্রমে খুশি ছিল না। আমরা ধর্ম প্রচার করতাম, ব্যবসা নয়। এটাই মূলত সমস্যা ছিল। তাদের ধর্ম ব্যবসায় সমস্যা হওয়ায় এই ঝামেলা করেছে এবং পুলিশের উপর চাপ প্রয়োগ করে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর নেতা-কর্মীরা আমাদের উপর হামলার আরো কিছু পরিকল্পনা করছে। আমরা বিষয়টি পুলিশের উপ-কমিশনার গোলাম রউফকেও জানিয়েছি। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও ওসি আমাদের চার সদস্যকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। অবশ্য যে চারজন গ্রেফতার হয়েছে তার মধ্যে একজন নারী হেযবুত তওহীদ এর সদস্য এবং বাকি দু’জন সমর্থক বলে দাবী করেছেন ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ।
সংবাদ সম্মেলনকালে অন্যান্যদের মধ্যে হেযবুত তওহীদের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি রুহুল আমিন মৃধা, আন্ত: রাজনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক নূর মোহাম্মদ আরিফ, মহানগর শাখার সভাপতি খোকন হাওলাদার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর বন্দর থানা কমিটির সভাপতি কাওছার আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ এর চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অবশ্য বন্দর থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোস্তফা কামাল জানান, ‘স্থানীয়রা হেযবুত তাওহীদের ৪ সদস্যকে থানায় সোপর্দ করেছিল। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সংগঠনটির কার্যক্রম কিভাবে চলছে সে বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি।