3:32 pm , December 21, 2018
পরিবর্তন ডেস্ক ॥ ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনজাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী এখন পুলিশ। যেসব নির্বাচনি এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তারা হামলা, মামলা ও গ্রেফতার করে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের নির্বাচনি এলাকা ছাড়া করছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে অবিলম্বে তাদের প্রত্যাহার করে সেখানে নিরপেক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।’
শুক্রবার বিকালে পল্টনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের সহসভাপতি জগলুল হায়দার আফ্রিক। পরে ড. কামাল হোসেন মৌখিক বক্তব্যের পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন। ড. কামাল বলেন, ‘নির্বাচনের যে চিত্রটা আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো, তা নজীরবিহীন। আমি ৪০/৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের নির্বাচন দেখছি। কিন্তু কোনও দিন এমন চিত্র দেখিনি। এতে বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় আদেশ-নির্দেশের ভিত্তিতে এগুলো করা হচ্ছে। এটা সংবিধানকে সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘন।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন জিনিসটা কী? একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নির্বাচনে সরকারি দলের লোক থাকে, বিরোধী দলের লোক থাকে। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদেরকে জনগণ ভোট দেবে। তাই ভোট চাওয়ার জন্য এদেরকে জনগণের কাছে যেতে হয়, আবেদন করতে হয়। এখনই যে অবস্থা চলছে, সাত দিন পর কী অবস্থা হবে? সেটা তো আপনারা বুঝতে পারছেন। এখন যারা প্রার্থী তাদের কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করে চেষ্টা করতে হচ্ছে নির্বাচন করার, এটা নজীরবিহীন।’ লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৩টি নির্বাচনি এলাকায় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থিতা শূন্য হয়ে গেছে। ২০ ডিসেম্বরও ১১ জনের প্রার্থিতা স্থগিত করেছেন কোর্ট। ১৬ জন প্রার্থী কারাগারে। নির্বাচন কমিশন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের ক্ষেত্রে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান করেছে। অন্যদিকে উচ্চ আদালত একে একে তাদের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করে চলেছেন। এতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের নির্বাচনের আগেই মাঠ থেকে সরে যেতে হচ্ছে এবং এর সুবিধা নিচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা। প্রায় প্রতিদিন নানাভাবে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হচ্ছে, যা ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের বাইরে ঠেলে দেওয়ার শামিল। বিএনপি নাকি ব্যালট পেপার ছাপিয়েছে-প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে উদর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা দাবি করে ঐক্যফ্রন্ট এই নেতা বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীদের প্রচার কাজে প্রকাশ্যে বাধা দিচ্ছে সরকারি দলের সন্ত্রাসী বাহিনী। প্রার্থীসহ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর সশস্ত্র হামলা থামছেই না। প্রশাসনের সহযোগিতা ও নির্বাচন কমিশনের নিষ্ক্রিয়তাই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এসব অপকর্মে সাহস জোগাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে ঐক্যফ্রন্ট।’ সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা, ভাঙচুর ও নির্যাতনের খতিয়ান তুলে ধরা হয়।