স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিক শক্ত অবস্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিক শক্ত অবস্থানে - ajkerparibartan.com
স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিক শক্ত অবস্থানে

3:06 pm , December 11, 2018

মোঃ সাইফুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ ॥ বরিশাল জেলার ৬টি আসনের মধ্যে বরিশাল-৩ আসনটি গুরুত্বর্পূণ একটি আসন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রসহ মোট ৬ জন প্রার্থী নির্বাচন করছেন। এবং প্রত্যেকেই স্ব-স্ব প্রতীকের বিপরীতে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি সমর্থিত পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সাংসদ গোলাম কিবরিয়া টিপু লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এবং মহাজোট মনোনিত অপর প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক এ্যাডভোকেট শেখ মো. টিপু সুলতান নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এদিকে একই সংসদীয় আসনে মহাজোটের দুই প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা পড়েছে বিপাকে। মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি সমর্থিত প্রার্থী টিপু সুলতান আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়ে এ আসনের সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিপরীতে মহাজোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টির আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ¦ গোলাম কিবরিয়া টিপুও জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এ আসনে ভোট যুদ্ধে নেমেছে। এতে করে মহাজোটের প্রার্থীদের মধ্যে দেখা দিতে পারে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। এ ছাড়াও একই আসনে একই জোটের ২ প্রার্থী হওয়ায় ভোটাররা পড়েছে মহাসংকটে। এ আসনে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। কিন্তু বরিশাল-৩ সংসদীয় আসনের বিএনপির নেতৃত্ব রয়েছে কেন্দ্রীয় ২ নেতার হাতে। বাবুগঞ্জ-মুলাদী আসনের বিএনপির একাশেংর নেতৃত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান। অপরাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এ নির্বাচনে দুজনই এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিল। কিন্তু দলীয় মনোনয়ন পেয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে কারণে বিষয়টি সাধারণভাবে নিতে পারেননি সেলিমা রহমান অনুসারীরা। সংগত কারণে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ভোটের মাঠে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। গত সোমবার বিএনপির প্রার্থী জয়নুল আবেদীন ঢাকা থেকে বরিশাল বিমান বন্দরে আসলে নেতা কর্মীরা তাকে বিমান বন্দরে স্বাগত জানাতে যান। এসময় নিজেদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রনে আনেন। এদিকে এ বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে দেখছেন না সাধারণ ভোটাররা। তারা মনে করছেন বিএনপির অনুসারী দ্বন্দ্বের সুফল পেতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। এছাড়াও আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী না থাকায় এ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিগত দিন থেকেই ক্ষোভ রয়েছে। কোন কোন নেতার সরাসরি বক্তব্য ছিলে এমন যে, প্রকৃত নৌকার মাঝি না থাকলে ভোট প্রয়োগেও অনিহা প্রকাশ করেন। এমন ক্ষোভের মধ্যে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক তুলে দেওয়া হয়েছে মহাজোটের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সম্পাদক শেখ টিপু সুলতানের হাতে। কিন্তু বিপরীতে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির গোলাম কিবরিয়া টিপুও এ আসনে মহা জোটের প্রার্থী হয়েছেন। আর স্বতন্ত্র ভাবে এ আসনটিতে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক। স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান বহু আগে থেকেই নির্বাচনী গনসংযোগসহ বিভিন্নভাবে এলাকার মানুষের সাথে থেকে সাধ্যমত কাজ করেছেন। যার ফলে এ আসনটিতে যখন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পাওয়ার আশায় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন, ঠিক তখনই স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক নিজেকে বরিশাল-৩ আসনের জনগনের প্রকৃত সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করেছেন। অবদান রেখেছেন উন্নয়নেও। সাধারণ মানুষকে সাধ্যমত দান-সহযোগিতাও করেছেন। যার কারণে সাধারণ ভোটারদের মতে দলীয় প্রার্থীর চেয়ে ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান এখানে ফ্যাক্টর হতে পারেন। আতিকুর রহমান দলীয় নেতাকর্মী ও তৃণমূল ভোটারদের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। যার ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বলে সাধারণ ভোটারদের ধারণা। অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তী বরিশাল-৩ আসনে বরাবরই বিএনপির দলীয় অবস্থান বেশ ভালো ছিলো। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে (উজিরপুর-বাবুগঞ্জ) আসনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পর ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে মহাজোটের প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপুর কাছে মাত্র ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী সেলিমা রহমান। ওই নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মাঠে থাকায় হারতে হয় তাকে। কারণ বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এড. জয়নুল ১৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। এর পর থেকেই বিএনপির অবস্থান এ আসনটিতে আস্তে আস্তে নাজুক হয়ে যায়। পরে বিএনপির দূর্গ বলে খ্যাত বরিশাল-৩ আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠে জোট-মহাজোটের প্রার্থীরা। কিন্তু আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচানে জোট-মহাজোটের একাধিক প্রার্থী ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং তৃণমুল নেতাকর্মীরা বিভক্ত থাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এ আসনটি ধরে রাখতে কতটুকু সফলতা অর্জন করতে পারেন সেটা নিয়ে ভাবছেন সাধারণ ভোটাররা। এর বিপরীতে এ আসনটিতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান আতিক নিজের ব্যক্তি ইমেজকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বলে সাধারণ ভোটারদরে ধারণা। যে কারনে এ আসনটিতে মহাজোটের দুই প্রার্থীর লড়াই ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং তৃণমুল নেতাকর্মীদের কাছ থেকে পিছিয়ে থাকার কারণে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে আতিকুর রহমান আতিক ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী বলে তিনি জানান। এ আসনে অন্য প্রার্থীরা হলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী মাওলানা মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম হাতপাখা প্রতীক নিয়ে এবং বিকল্প ধারার প্রার্থী এনায়েত কবির নির্বাচন করছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT