6:16 pm , October 19, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আগামী ২৩ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩টায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তার আগে ২২ অক্টোবর সকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে শপথ পড়াবেন। শপথ শেষে দুপুরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ এবং ঐদিনই টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন। ২৩ অক্টোবর বিকালে বর্ণাঢ্য আয়োজনে তাকে দেয়া হবে নাগরিক সংবর্ধনা। আর তাই সংবর্ধনা ও বরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে চলছে ব্যাপক আয়োজন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের পাশাপাশি নবনির্বাচিত মেয়রকে বরণ প্রস্তুতির দিক থেকে থেমে নেই সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। নগর ভবন জুড়ে সাজসজ্জার সাথে চলছে রং-তুলি আর আলোকসজ্জার কাজ। রহমতপুর থেকে নগরী পর্যন্ত সড়ক সাজছে তোড়ন আর শুভেচ্ছা ব্যানারে।
অপরদিকে শপথ গ্রহনের লক্ষ্যে আজ শনিবার ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত কাউন্সিলররা। পাশাপাশি সাদিক আবদুল্লাহর শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আগামীকাল রোববার ঢাকার উদ্দেশ্যে যাবেন বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তবে বরিশালের অধিকাংশ নেতা-কর্মী নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে বরণ করবেন টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে।
মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, ব্যাপক জাকজমক পূর্ন আয়োজনের মাধ্যমে নবনির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে সংবর্ধনা জানানো হবে। কেননা গত ৩০ জুলাই নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেন। কিন্তু জাতীয় শোক দিবস এবং শোকের মাস হওয়ায় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে নেতা-কর্মীরা কেউ সংবর্ধনা জানাতে পারেননি। এমনকি নেতা-কর্মীদের কোন ফুল পর্যন্ত গ্রহণ করেননি তিনি। আর তাই দায়িত্ব গ্রহনের দিনে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে জাকজমক পূর্ন আয়োজনের মধ্যেমে সংবর্ধণা জানাতে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি চলছে। যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে ব্যতিক্রম ধর্মী।
সরেজমিনে দেখাগেছে, সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে বরণ এবং সংবর্ধনা জানাতে নগর জুড়ে সাজসজ্জা চলছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে চলছে বিশাল বিশাল ব্যানার এবং বিলবোর্ড স্থাপনের কাজ। রহমতপুর থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত সড়কের উপর দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে তোড়ন নির্মান করা হচ্ছে। তাছাড়া নগরীর সিএন্ডবি সড়ক, বান্দ রোড, পোর্ট রোড এলাকা, সদর রোড, দলীয় কার্যালয়, বিএম কলেজ সড়ক, হাসপাতাল রোড ঘিরে তোড়ন নির্মান করছেন নেতা-কর্মীরা। সদর রোড এবং নগর ভবনে প্রবেশের প্রধান সড়ক ফজলুল হক এভিনিউ ঘিরে প্রস্তুতি বেশি চলছে। কেননা ওই দুটি সড়ক হয়েই নগর ভবনে পৌছবেন নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তাছাড়া নগর ভবন চত্ত্বরের মুক্ত মঞ্চে তাকে দেয়া হবে বর্ণাঢ্য নাগরিক সংবর্ধনা।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, আমাদের নেতাকে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বরণ করা হবে। সে জন্য প্রস্তুতি চলছে। তাকে বরণ সহ দায়িত্বগ্রহন পর্যন্ত নানান কর্মসূচিও রয়েছে। আমরা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নবনির্বাচিত মেয়রকে সংবর্ধনার আয়োজন চলছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, নবনির্বাচিত সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে। সেভাবে করেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর আগে ২২ অক্টোবর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর শপথ অনুষ্ঠানে গণভবনে অংশ নিবেন। ২১ অক্টোবর আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যাব।
তবে তার আগেই আজ ২০ অক্টোবর বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নবনির্বাচিত সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরা ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। প্রত্যেক কাউন্সিলর এর সাথে একজন করে ডেলিগেট নগর ভবনে অংশ নিতে পারবেন। নবনির্বাচিম মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধানমন্ত্রী শপথ করালেও কাউন্সিলরদের শপথ করাবেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী। গণভবনে প্রবেশ অধিকার সংরক্ষিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী ঢাকায় যাচ্ছে না।
এ্যাড. একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ২২ অক্টোবর শপথ শেষ করেই টুঙ্গিবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে যাবেন। সেখানে তিনি নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মাজার জিয়ারত করবেন। সেখান থেকে সরাসরি বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। বঙ্গবন্ধুর মাজার থেকেই আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রহন করে নিয়ে আসবেন এবং রাতে তিনি কালিবাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত ভবনেই থাকবেন।
এর পর ২৩ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩টায় নগর ভবনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি তার দায়িত্ব ভার বুঝে নেবেন। ওইদিন বিকালেই নগর ভবন চত্ত্বরে মঞ্চ স্থাপন করে তাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র নিজ দলীয় নেতা-কর্মীরাই নয়, সুশীল সমাজের পাশাপাশি সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মেয়র প্রার্থীদেরও আমন্ত্রন জানানো হবে। কর্মক্ষত্রে তাদের সহযোগিতা পেতে এবং সকলকে সাথে নিয়েই নগর উন্নয়নে কাজ করার লক্ষ্যেই তাদেরকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর।
অপরদিকে বিসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নবনির্বাচিত মেয়রকে বরণের লক্ষ্যে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। এই প্রস্তুতি দাপ্তরিক কাগজপত্র ঠিক করে রাখা হচ্ছে। চলছে সাজসজ্জা এবং উন্নয়নের কাজ। নগর ভবনে বাইরে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সীমানা প্রচীরে রং-তুলির আচড় লেগেছে। গোটা নগর ভবন আলোকসজ্জার প্রস্তুতি রয়েছে। নগর ভবনে পৌছার পর পরই সেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করা হবে। এছাড়া পুষ্প বৃষ্টিতে নবনির্বাচিত মেয়রকে সিক্ত করবেন বিসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।