6:09 pm , July 27, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপন বলেছেন, ৩০ জুলাই নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ১২৩টি কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষন হয়েছে। এমনকি এজেন্টদের ভোটার স্লিপ ও তালিকা দিয়ে তাদের স্ব স্ব কেন্দ্রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই এই মুহুর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতা-কর্মী ও জণগন আমার সাথে রয়েছেন। আমি তাদের সাথে প্রতারনা করতে পারব না।
৩০ জুলাই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার বিকাল ৩টায় জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস এসব কথা বলেছেন। অক্সফোর্ড মিশন রোডে লাঙ্গল প্রতীকের নির্বাচনী প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে মেয়র প্রার্থী তাপস বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ লাঙ্গল প্রতীক দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমাকে বরিশালে পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেই দায়িত্বই পালন করেছি।
তাপস বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান বিদেশে যার সময় আমাকে বলে গেছেন, তোমার সাথে একজন লোক রেখে গেলাম। সে তোমার সাথে যোগাযোগ করবে। সেই লোক বরিশালে এসেছিলেন। তিনি দেখেগেছেন আমার নির্বাচনী মাঠ ভালো। তাই সে আমাকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যেতে বলেছেন। সে অনুযায়ী আপি পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশনাই মেনে চলছি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্র আমি পেয়েছি। কিন্তু আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে তিনি সমর্থন দিয়েছেন এ ধরনের কোন নির্দেশনা আমি পাইনি। এমনকি প্রত্যাহার করার বিষয়েও কোন চিঠি পাইনি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ’র সাথে যোগাযোগ করেছি। তারাও আমাকে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির আমিই একমাত্র প্রার্থী। তাছাড়া আমি যতটুকু যেনেছি তাতে মহাজোটে আমরা জাতীয় পার্টি নেই। তার দাবী একটি মহল গুঞ্জন ছড়িয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। তাই তিনি গুঞ্জনে কান না দিয়ে ৩০ জুলাই কেন্দ্রে গিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে জাতীয় পার্টিকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান ভোটারদের।
জাতীয় পার্টি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র পক্ষে এক যোগে কাজ করার ঘোষনার বিষয়ে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আমাদের কোন নেতা-কর্মী কৌকার পক্ষে কাজ করছে না। তারা সবাই লাঙ্গলের পক্ষেই আছে। তবে তাদের মধ্যে দু’একজন লোক থাকলেও থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন মেয়র প্রার্থী তাপস।
এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ এবং কালোটাকার বিষয়ে সংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ইকবাল হোসেন তাপস বলেছেন, শুধু নির্বাচন নয়, সব জায়গাতেই কালো টাকার প্রভাব রয়েছে। আটা আমার একার পক্ষে দূর করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার ও সাধারণ মানুষের সচেতন হতে হবে। তাছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত খারাপ দেখা যাচ্ছে না দাবী করে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, এখন পর্যন্ত এখানে কোন সহিংসতা ঘটেনি। সব প্রার্থীরা সহবস্থানে রয়েছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে বিশাল একটি মোটর সাইকেলের মহড়া হয়েছে। প্রশাসনিক কিছু লোক আছে যারা ভীতি ছড়াচ্ছে। তাই প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ সংহিংসতা রোধ এবং কারো পক্ষপাতিত্ব না করার জন্য।
ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমরা এখনো পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছিনা। কারন তারা ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনায় দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়ে একটি শক্তিশালী অবস্থান আমাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে এখনো আমরা পর্যবেক্ষন করছি এবং জনগনকেও আহ্বান জানাবো জনসম্পৃক্ততার মধ্যে দিয়ে যাতে তাদের ভোটাধিকার রক্ষা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টি বরিশাল জেলার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল, মহানগর জাপা’র সহ-সভাপতি রুস্তম আলী খান, আক্তার রহমান সপ্রু, ফরহাদ হোসেন হাবিল, জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্য ফোরকান, জেলা জাপার সদস্য সচিব মীর আলফাজ উদ্দিন জসিম, এ্যাড. জলিল, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।