বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন হাজতী ও বন্দী বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন হাজতী ও বন্দী - ajkerparibartan.com
বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন হাজতী ও বন্দী

6:59 pm , June 26, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ তিল ধরার ঠাঁই নেই বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে। ৩০ নারী সহ মাত্র ৬৩৩ ধারণ ক্ষমতার এ কারাগারে এখন সাজাপ্রাপ্ত ও হাজতি সহ আসামির সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ, ১২শ’রও বেশী। এমনকি ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য ১২টি ‘কন্ডেমড সেল’এ দীর্ঘদিন যাবতই ৭৩ জন আসামি অমানবিক জীবন যাপন করছে। যার মধ্যে দুজন মহিলা। এসব ফাঁসির আসামিদের ডেথ রেফারেন্স এখনো সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন বলে জানা গেছে। ফলে দীর্ঘদিন যাবত বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রতিটি কন্ডেমড সেল-এ গড়ে ৬ জনেরও বেশী করে ফাঁসির আসামিকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এসব তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

বৃটিশ যুগে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল জেলখানাটি ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে উন্নীত করা হলেও অবকাঠামো সহ তার কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। এমনকি বৃটিশ যুগে স্থাপিত ভবনসমুহের মধ্যে কয়েকটিকে ‘বসবাসের অযোগ্য’ বলেও ঘোষনা করে গনপূর্ত অধিদপ্তর। পরবর্তিতে তা ভেঙেও ফেলা হয়। ২০০৮-এর ‘সিডর পুনর্বাসন প্রকল্প’এর আওতায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে তিন তলা ও চারতলা দুটি ভবন নির্মিত হয়েছে। তবে তা এখনো কারা কর্তৃপক্ষের কাছ হস্তান্তর করেনি গণপূর্ত অধিদপ্তর। খুব শীঘ্রই নব নির্মিত ভবন দুটি হস্তান্তরের পরে সেখানে আসামিদের স্থানন্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানা গেছে।

তবে এতে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা বাড়ছে না। বর্তমানে এ কারাগারে ৬০৩ পুরুষ ৩০ নারী বন্দির আবাসন সুবিধা রয়েছে। সেখানে অবস্থান করছে ১ হাজার ২১৮ জন সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন আসামি। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আবার বিনাশ্রমে দন্ডিত আসামির সংখ্যা ৮১ জন। যার মধ্যে ৯ মহিলা সাজাপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছে। এ কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির ধারণ ক্ষমতা মাত্র আড়াইশ হলেও তার প্রায় দ্বিগুণ আসামি রয়েছে।

তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অমানবিক অবস্থায় রয়েছে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। প্রতি ফাঁসির আসামিকে ‘মহা নিরাপত্তা বলয়’এ নির্দিষ্ট কন্ডেমড সেল-এ রাখার বিধান রয়েছে। কিন্তু বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে এধরনের ১২টি সেল-এ দীর্ঘদিন ধরেই ৭৩ জন আসামি অবস্থান করছে। ফলে একজন আসামির জন্য নির্দিষ্ট সেল-এ গড়ে ৬ জনেরও বেশী আসামিকে থাকতে হচ্ছে। কারন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত দুই মহিলাকে একটি সেল-এ রাখার পরে অবশিষ্ট ১১টি সেল-এ ৭১ জন পুরুষ দন্ডপ্রাপ্তকে রাখতে হচ্ছে। অথচ প্রতিটি কন্ডেমড সেল-এ একজন দন্ডিতকেই রাখার বিধান রয়েছে। বিষয়টি যেমনি ঝুঁকিপূর্ণ তেমনি যথেষ্ঠ অমানবিক বলেও মনে করছেন বিভিন্ন মানবিধকার কর্মীরা।

বর্তমানে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারের পদটি শূণ্য রয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্বে থাকলেও তিনি দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এসব বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের অন্য দায়িত্বশীল মহল কোন মন্তব্য করতে চাননি। তাদের মতে সার্বিক বিষয় সম্পর্কে কারা অধিদপ্তর সহ মন্ত্রনালয় অবগত আছে এবং পরিস্থিতি উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ সব সময়ই সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান হয়।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT