3:53 pm , March 21, 2025

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগরীর মধ্যভাগ দিয়ে চলে যাওয়া দেশের ৮নম্বর জাতীয় মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে নির্মিত সিটি করপোরেশনের একটি দ্বিতল অবকাঠামো এখন পরিপূর্ণ মরনফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমান নগর প্রশাসনও এটি অপসারণ করতে পারছে না আইনগত জটিলতা সহ আর্থিক বিষয় জড়িত থাকার কারণে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনর ৪র্থ নগর পরিষদের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যায়ে নগরীর সিএন্ডবি রোডে জাতীয় মহাসড়কের জমি দখল করে তার প্রয়াত মায়ের নামে ‘শাহান আরা আবদুল্লাহ পার্ক’ নির্মানের পাশাপাশি এর দক্ষিণ পাশে সড়ক অধিদপ্তরের জমি দখল করে একটি দ্বিতল ভবনের অবকাঠামো নির্মান করেন। এ কাজের বিপরীতে ঠিকাদারকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও নির্মান প্রতিষ্ঠানটি ভবনটির দোতালার ছাদ ঢালাই দিয়ে অসমাপ্ত অবস্থায়ই ফেলে রাখে।
সাদিক আব্দুল্লাহর পরে তার আপন চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ৫ম নগর পরিষদের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু তিনি তার কর্মকালে সাবেক মেয়রের অবৈধভাবে নির্মিত পার্ক ও ভবনটির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেননি। গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পরে দেশের অন্যসব সিটি করপোরেশনের মত বরিশাল নগর পরিষদেরও বিলুপ্তি ঘটে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার নগর প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ৭ মাস কেটে গেলেও জাতীয় মহাসড়কের জমি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ পার্ক ও তারই পাশের ভবনটির ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি বিসিসি।
ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতা দু’দফায় অবৈধ পার্কটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে। অতি সম্প্রতি পার্কের পাশাপাশি অবৈধ ভবনটির অবকাঠামোও ভাঙচুর করে ছাত্র-জনতা। এতে বিসিসির বুলডোজার ও এ্যাক্সেবেটর ব্যবহার করা হলেও এখন এসব অবৈধ অবকাঠামোর দায় দায়িত্ব নগর ভবনের কেউ গ্রহণ করছে না। এমনকি পুরো পার্কটি অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিনত হবার পাশাপাশি দ্বিতল ভবনের অবকাঠামো জাতীয় মহাসড়কটির পাশে মরনফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যেকোন সময় ক্ষতবিক্ষত ওই দ্বিতল ভবনের অবকাঠামো মহাসড়কটির ওপর ভেঙে পড়তে পারে।
বিসিসির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওসার বলেন, এসব অবকাঠামো নির্মানের কোন বৈধতা ছিল না। বিপুল অর্থ ব্যায়ে এসব অবকাঠামো নির্মিত হলেও তা নগরবাসীর কোন উপকারে আসেনি। এখন পার্ক ও ভবনটির অবকাঠামো অপসারণেও বিপুল অর্থের প্রয়েজন। কিন্তু সে তহবিল কোথা থেকে আসবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। উপরন্তু এসব অবৈধ স্থাপনার পেছনে আরো অর্থ ব্যায়ের বৈধতা কে দেবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে জাতীয় মহাসড়ক থেকে এসব অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে নিতে নগর ভবনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা তাদের অনুরোধ করেছি সব কিছু নিয়ে নিতে। কিন্তু তাদেরও তো তহবিলের প্রয়োজন হবে। সব মিলিয়ে একটি অচলবস্থার কথা স্বীকার করে নগর প্রশাসক বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে কথা বলে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা জানান।