5:07 pm , March 8, 2025

ভারতীয় পোষাককে পিছনে ফেলে পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি ও আফগানি পোষাক
জুবায়ের হোসেন ॥ প্রতিবছরের তুলনায় এবার বেশ আগেই জমে উঠেছে নগরীর ঈদ পোশাকের বাজার। সচরাচর ১০ রমজানের পর থেকে বাজারে ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভীড় বাড়ে। তবে এবার তা শুরু হয়েছে ৫ রমজানের পর থেকে বলে জানিয়েছে বিক্রেতারা। গত বছরের তুলনায় বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পোষাকে এবার এসেছে বাহারী পরিবর্তন। বিগত কয়েকবছর ধরে ঈদের বাজার ভারতীয় নানা ডিজাইনের পোষাকের দখলে থাকলেও এবার ব্যাতিক্রম দেখা গেছে। পাকিস্তানি, আফগানী সহ মধ্যপ্রাচ্যের নানা ডিজাইনের পোষাক এবার নারী ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বাহারী ডিজাইন ও কাপড়ের চাহিদাও এবার রমরমা ঈদের বাজারে। দেশের পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, এবারের ঈদের বেচাকেনা নিয়ে বেশ আশাবাদী নগরীর পোষাক বিক্রেতারা। তারা বলেছেন, প্রতিবারের তুলনায় আগে জমেছে বেচাকেনা। এখনই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে রয়েছে দেশের সনামধন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুম। এদের মধ্যে ২/৩ রমজান থেকেই বেচাকেনার ধুম পড়েছে আড়ং এর শো-রুমে। বিভিন্ন শ্রেনীর ক্রেতাদের পদচারনায় শো-রুমটির বিক্রয় কর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের নিজস্ব ও ব্যাতিক্রমি পোশাকগুলো বরিশালের মানসম্মত ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। দেশী বিদেশী নানা স্টাইলের পোষাকের সমারোহ থেকে ক্রেতারা আনন্দের সাথে কেনাকাটা করছেন বলে জানায় বিক্রয় কর্মীরা। গত বছরও ঈদুল ফিতরে বেশ ভালো বেচাকেনা হয়েছে। তবে এবার তারা আরও আশাবাদী।
একই পরিবেশ বিরাজ করছে নগরীর ইজি, সেইলর, লে-রিভ, টপ টেন, বি-টু, রিচম্যান, প্লাস পয়েন্ট, নতুন আসা ব্র্যান্ড ফীল সহ প্রায় সবগুলো ব্র্যান্ডের শো-রুমে। সবাই ঈদ উপলক্ষে তাদের ব্যাক্তিগত ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের পোষাকের সমারোহ নিয়ে জমজমাট বেচাকেনা চলছে।
অন্যদিকে নগরীর চকবাজার, গীর্জা মহল্লা, কাটপট্রি সহ পুরো এলাকায় গতকাল শনিবার সারাদিন ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। এই ভীড় গতবছরের ১৫ রমজানের পরেও ছিলনা বলে মন্তব্য করেছে সেখানকার একাধিক ব্যাবসায়ী। এই এলাকায় সব শ্রেনীর ক্রেতারা আসলেও বেশিই আসছে নি¤œ ও মধ্য আয়ের ক্রেতারা। জুতা স্যান্ডেল থেকে শুরু করে পরিবারের সব বয়সের সদস্যের জন্য করছে ঈদের পুরো কেনাকাটা।
এবারের ঈদের পোষাকের মধ্যে রয়েছে মেয়েদের নানান প্যাটার্নের সালোয়ার-কামিজ, ডাবল লেয়ারড সালোয়ার-কামিজ, লং-কুর্তি, রেগুলার কুর্তি, টপস্, ডাবল লেয়ারড কুর্তি, টিউনিক, গাউন, কাফটান, প্যান্টসহ টপস, টপস-স্কার্ট সহ পাকিস্তানি ও আফগানি নানা ধরনের পোষাক। ছেলেদের জন্য রয়েছে রেগুলার, কাট বেইজড ও ফিটেড পাঞ্জাবি। এছাড়া পাওয়া যাবে রেগুলার ও স্লিম ফিট ক্যাজুয়াল শার্ট, এথনিক শার্ট, ফতুয়া ও টি-শার্ট।
কন্যাশিশুদের জন্য আছে সালোয়ার-কামিজ, ফ্রক, কুর্তি, টপস, লেহেঙ্গা সেট, টপস সেট ও স্কার্ট। ছেলেশিশুদের জন্য নানান রঙের পাঞ্জাবি, হাফহাতা শার্ট, ফতুয়া এবং টি-শার্ট।
বিক্রেতারা জানান পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে আরামদায়ক হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে ফেব্রিক হিসেবে বর্তমানে রয়েছে কটন, ডিজাইন্ড কটন, সুইস কটন, স্ল্যাব কটন, হ্যান্ডলুম কটন, লিলেন, জর্জেট, সিল্ক, জয়স্রী সিল্ক, হাফ সিল্ক, সাটিন ও অরগাঞ্জা। এসকল পন্যের দাম যতোটা সম্ভব ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছেন।
ঈদের কেনাকাটায় পরিবার নিয়ে আড়ং এর শো-রুমে আসা ক্রেতা কামরুন্নাহার জানান, বেশ ভালো কালেকশন রয়েছে এবারের ঈদে। তাই একটু আগে ভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। এই কেনাকাটা কয়েকদিন চলবে তাদের। ঈদ মানে আনন্দ তাই কেনাকাটায় একটু আগেই এসেছেন মনের মত পোষাকটি বেছে নেয়ার জন্য। শুধু ব্র্যান্ডেই নয়, নন ব্র্যান্ডের নগরীর শোরুম গুলোতেও এবার রমজানের শুরু থেকেই ক্রেতারা আসছেন বলে জানান।
অন্যদিকে ফ্যাশন হাউসগুলো আশাবাদী, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পরও ঈদের কেনাকাটা আরও জমে উঠবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ উৎসবপ্রিয় এবং নতুন পোশাক ছাড়া ঈদের আনন্দ যেন অপূর্ণ থাকে।