এবারের রোজায় আমাদের কি হবে ? এবারের রোজায় আমাদের কি হবে ? - ajkerparibartan.com
এবারের রোজায় আমাদের কি হবে ?

4:00 pm , March 12, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বরিশালে মঙ্গলবার থেকে রহমতের রোজা শুরু হয়েছে। তবে নিত্যপণ্যের লাগামহীন অগ্নিমূল্য নিয়ে চরম দুর্ভোগ আর অস্বস্তিতে সাধারন মানুষ। রান্নার গ্যাস থেকে শুরু করে চাল, ডাল, চিনি, ছোলাবুট, লবন, পেয়াজ ও ভোজ্য তেল সহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের নিয়ন্ত্রনহীন মূল্য বৃদ্ধির দু:সহ যন্ত্রণায় সাধারন মানুষ। রান্নার গ্যাসের দাম গত ৬ মাসে সাড়ে ৪শ টাকা বেড়ে এখন প্রায় দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফেব্রুয়ারী থেকে বিদ্যুতের আরেক দফা মূল্য বৃদ্ধি রোজার আগেই সাধারন গৃহস্থদের বাড়তি দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। বরিশালের বাজারে বিগত দুটি রমজানের রেকর্ড ছাপিয়ে প্রতি কেজি পেয়াজ এখনো ৮৫-৯৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। রসুন ও আদা সহ সব মসলার বাজরই বিগত দুটি রমজানের চেয়ে অনেক চড়া। ভোজ্য তেলের দাম কাগজে কলমে কমলেও বাস্তবে এখনো ১৮০ টাকা লিটারের নিচে ভালমানের ভোজ্য তেল নেই। সব ভোগ্যপণ্যের সাথে এবার ইফতার সামগ্রীতেও মূল্যবৃদ্ধির ছোঁয়া লেগেছে। খেশারী ডালের কেজিও এবার প্রায় ১৪০ টাকা ছুঁয়েছে। মুুসুর, মুগ সহ অন্যসব ডালের দামও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশী। গত বছরের ১২০ টাকার চিনি এখন বরিশালের বাজারে ১৪৫ টাকা কেজি।
সবজির দামেও তেমন একটা স্বস্তি নেই।  রোজাকে সামনে রেখে গত সপ্তাহ থেকে বাজারে বেগুন ও ফুলকপি সহ অনেক সবজির সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। প্রায় বারমাসি শসা ও বেগুনের কেজি গত এক সপ্তাহে ৪০ টাকা থেকে মঙ্গলবার সকালে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। রেজায় ইফতারীর অন্যতম অনুসঙ্গ ছোলা বুট এবার সেঞ্চুরী পার করে ১৩০ টাকা কেজি। খেজুর এখন আর সাধারন রোজাদারদের ইফতার সামগ্রীতে নেই। এবার সর্বনি¤œ মানের বস্তার ভেজা খেজুরের কেজিও ১৮০ টাকা। মধ্যমানের খেজুরও ৮শ টাকার নিচে নয়।
মাছ, গোশত, ডিম আর দুধে উদ্বৃত্ত বরিশাল অঞ্চলের বেশীরভাগ পরিবারের পাত থেকে এসব আমিষ খাবার উধাও হতে শুরু করেছে।
দেশের ৭০ভাগ ইলিশ উৎপাদনের বরিশাল অঞ্চলে এখন দেড় হাজার টাকা কেজির নিচে তা মিলছে না। গরুর গোসতের কেজি সাড়ে ৭শ টাকা অতিক্রম করেছে গত নির্বাচনের পর দিন থেকেই। প্রথম রোজার দিন কোন কোন এলাকায় ৮শ টাকা কেজিতেও তা  বিক্রী হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি আবার আড়াইশ টাকার ওপরে। কর্ক ও সোনালী মুরগির দাম ৩শ টাকার ওপরে। ফলে মাছ ও গোসত কেনা এখন নি¤œ-মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের জন্যও কল্পনা বিলাসে পরিনত হয়েছে। ফলে রোজাদাররা এবারের রোজায় কি খাবেন, তা নিয়েও দুঃশ্চিন্তা আছে।
১২ লক্ষাধিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত বরিশাল অঞ্চলে আউশের পরে আমনে ভাল উৎপাদনের পরেও চালের দাম কমার পরিবর্তে গত দু মাসে বেড়েছে। বিগত দু বছরের একই সময়ে তুলনায় এবার ফেব্রুয়ারী-মার্চে প্রতি কেজি চালের দাম ১০ টাকা পর্যন্ত বেশী। অথচ সদ্যসমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ২৩ লাখ টন আমন চাল উৎপাদন হয়েছে। এর আগে খরিপ-১ মৌসুমে এ অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন আউশ উৎপাদন হয়েছে বলে ডিএই সূত্রে বলা হয়েছে। এমনকি চলতি রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় আরো প্রায় ১৭ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে আবাদ শেষ পর্যায়ে। আবাদকৃত আরো প্রায় ৬০ হাজার হেক্টরে ১.৬০ লাখ টন গম ঘরে তোলার কাজ শুরু করেছেন কৃষি যোদ্ধারা।
চাল ও সবজি সহ খাদ্যশস্যের কোন সংকট বা ঘাটতির সম্ভাবনা না থাকলেও সব খাদ্যপণ্যের দাম সাধারন মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে। ফলে সাধারন মানুষের হতাশা ইতোমধ্যে ক্ষোভে পরিনত হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT