জনবলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংকটে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত জনবলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংকটে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত - ajkerparibartan.com
জনবলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংকটে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম ব্যাহত

3:47 pm , February 24, 2024

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ জনবলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের কার্যক্রম এখনো কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। নৌ পথ সহ নদ-নদীর নিরাপত্তা বিধানে গঠিত বাংলাদেশ নৌ পুলিশের ১১টি অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নদীবহুল বরিশাল অঞ্চল। তবে মাত্র দুটি নৌ থানা আর ১৭টি নৌ পুলিশ ফাঁড়িতেই এ পুলিশের কার্যক্রম এখনো সীমাবদ্ধ। অনেক পদ শূন্য থাকায় পুলিশের সেবা এখনো কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। এরসাথে প্রয়োজনীয় টহল নৌযান সহ তা ব্যবহারে সম্পদের সীমাবদ্ধতাও যথাযথ দায়িত্ব পালনে অন্যতম অন্তরায় হয়ে আছে। এমনকি দুটি নৌ থানাতে জনবল মাত্র ২০ জন  করে। নৌ ফাঁড়িগুলোতে জনবল প্রয়োজনের তুলনায় কম।
প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার ছোট বড় নদ-নদী ছাড়াও সাড়ে ১২শ কিলোমিটার নৌ পথের নিরাপত্তায় নৌ পুলিশের বরিশাল অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। এমনকি আশি^নের বড় পূর্ণিমার সময় ২২ দিন ইলিশ সহ সব ধরনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা এবং নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নৌ পুলিশের গুরুত্ব ও দায়িত্ব অপরিসীম। সাগরে ৬৫ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়েও নৌ পুলিশের  টহল প্রদান সহ নজরদারীর দায়িত্ব থাকলেও তাদের সে ধরনের টেকসই ও নিরাপদ নৌযানের ব্যবস্থা নেই।
পাশাপাশি এ অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান ছাড়াও সড়ক অধিদপ্তরের ২৩টি ও বিআইডব্লিউটিসি’র ২টি ফেরি সেক্টরেও প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক পণ্য ও যাত্রী পারাপার হচ্ছে। এসব স্থাপনা সহ জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় নৌ পুলিশের গুরুত্ব অপরিসীম হলেও জনবল আর যানবাহন স্বল্পতার কারণে মূল দায়িত্ব পালন অনেক ক্ষেত্রেই বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তবে দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে নৌ পুলিশ বরিশাল অঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সম্ভব সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। নদ-নদী ও তার  তীর থেকে দেড়শ মিটার পর্যন্ত নৌ পুলিশের সীমানা নির্ধারিত রয়েছে।
নদ-নদী, নৌপথ এবং নদী সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারী স্থাপনা সহ জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সরকার ২০১৩ সালে নৌ পুলিশ গঠন করলেও এর পরিচালনসহ আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের সূচনা হয় ২০১৭ সালে। বরিশাল সহ দেশের ১১টি অঞ্চলের প্রতিটিতে একজন করে এসপির তত্ত্বাবধানে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একজন অতিরিক্ত আইজিপি’র নেতৃত্বে পুরো নৌ পুলিশ দেশের নৌ পথ ও নদ-নদী সমূহ, সংশ্লিষ্ট স্থাপনার নিরাপত্তা বিধানের কাজে নিয়োজিত।
বরিশাল নদী বন্দরে স্থাপিত সদর নৌ থানা ছাড়াও  পূর্ব ইলিশা সদর নৌ থানা এবং নাজিরপুর, হিজলা, কালিগঞ্জ, চামটা-নিয়ামতি, মির্জাকালু, চর কুকরি-মুকরি, পায়রাকুঞ্জ, কালাইয়া, দশমিনা, পায়রা, কুয়াকাটা, নিদ্রা সখিনা, কাকচিড়া ও চর দুয়ানী নৌ পুলিশ ফাঁড়ি নিয়ে নৌ পুলিশের বরিশাল অঞ্চল গঠিত। একজন এসপি ও একজন অতিরিক্ত এসপি সহ ৩৪০ জনের জনবলের মঞ্জুরী নিয়ে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের কার্যক্রম পরিচালিত হবার কথা থাকলেও অনেক পদ শূন্য থাকায় সুষ্ঠু কার্যক্রম অনেক ক্ষেত্রেই  বিঘিœত হচ্ছে। এসআই, এএসআই,নায়েক ও কনষ্টেবলের অনেক পদ শূন্য পড়ে থাকায় থানা ও ফাঁড়িগুলোর সুষ্ঠু কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বরিশাল অঞ্চলের একটি বিশাল এলাকার নৌ পথ ও নদ-নদীর নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে অন্য অঞ্চলের নৌ পুলিশের কাছে। ফলে  ওইসব এলাকার নদী-নালার  নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে না।
বরিশালে আরো অন্তত ১০টি নৌ থানা ও নৌ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। এ ব্যাপারে নৌ পুলিশের বরিশাল অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ কফিল উদ্দিনের সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, বরিশাল অঞ্চলে আরো বেশ কয়েকটি নৌ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের প্রস্তাবনা রয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এসব ফাঁড়ি স্থাপনের অনুমোদন মিললে বরিশাল অঞ্চলে নৌ পুলিশের সার্বিক নজরদারী আরো বৃদ্ধির পাশাপাশি নদ-নদীতে নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তারমতে, একটি পুলিশ ইউনিট গড়ে উঠতে যে সময়ের প্রয়োজন, ধাপে ধাপে আমরা সে লক্ষেই এগুচ্ছি। সরকারও এলক্ষে ইতিবাচকভাবেই সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT