4:12 pm , May 4, 2024

ঢাকাসহ সারাদেশের সাথে বাস চলাচল বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দফায় দফায় মারামারি, হামলা-পাল্টা হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লা রুটের সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। হর্ণ বাজানো নিয়ে বাস চালক ও হেলপারকে মারধর নিয়ে এ ঘটনায় শনিবার দুপুরের পর থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীন ও দুরপাল্লা রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোন রুটে বাস চলাচল করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেলা ১২টার দিকে মাদারীপুর থেকে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস নথুল্লাবাদ টার্মিনালে প্রবেশ করে। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা নুরুল ইসলাম বাবাইর মোটরসাইকেল সামনে থাকায় হর্ণ দেয় চালক সোহাগ। এতে ক্ষুব্ধ হয় বাবাই। তিনি মোটরসাইকেল রেখে বাসে চালক সোহাগ ও হেলপার সৌরভকে মারধর করেন। শ্রমিকরা সোহাগকে নিয়ে শের ই বাংলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় নগরীর চৌমাথা এলাকায় বাবাইর গ্রুপ তাদের উপর হামলা চালিয়ে সোহাগকে অপহরন করে। এ খবর পেয়ে শ্রমিকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে বাস টার্মিনালে বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপে কার্যালয়ে হামলা করে। পরে বাসি টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারের সামনে ভাংচুর করে। ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ঢুকে সেখানে বহিরাগত শ্রমিক সৈয়দ রাব্বিকে মারধর করে। পুলিশ এসে শ্রমিকদের শান্ত করে কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। শ্রমিকরা টার্মিনালে বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ও বাস মালিক গ্রুপের সভাপতির ব্যানার ফেষ্টুন ভাংচুর করে। পরে তারা সড়ক অবরোধ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন, সন্ধ্যার দিকে ঘটনা সমাধান করে বাস চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ সময় আবার বাস ও থ্রি হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এ কারনে সন্ধ্যা সোয়া সাতটা পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হয়নি বলে জানান তিনি।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান বলেন, বাস চলাচল চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শ্রমিকদের একটি গ্রুপ প্ররোচনা দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। তাই এখনো বাস চলাচল শুরু করা সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস চলাচল শুরু করার চেষ্টা চলছে। একটি সূত্র জানায়, বাস মালিক সমিতির সাবেক কিছু নেতৃবৃন্দ ইন্ধন দিয়ে রাতে পুনরায় মাহিন্দ্রা ও দোকান পাট ভাংচুর করে। পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছে।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাস শ্রমিকদের সাথে থ্রি-হুইলার (মাহেন্দ্র) শ্রমিকদের সাথে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে শ্রমিক রাজু (৩০), আব্দুর রহমান (২৫) ও শাকিল (২৪) আহত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময় অন্তত ৩০ টি মাহেন্দ্রসহ বাসষ্ট্যান্ডের আশে-পাশের দোকান ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ টি.আর সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নথুল্লাবাদ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে যানবাহন ভাংচুরের কারণে নথুল্লাবাদসহ ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন নগরীর আমতলা মোড়ে আটকা পড়ে।