শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত - ajkerparibartan.com
শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বিপর্যস্ত

1:00 am , June 7, 2022

ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট বিকলসহ জনবল সংকটে

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান, বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্নয়ে নানামুখী সীমাবদ্ধতায় চিকিৎসা কার্যক্রম যথেষ্ট ব্যাহত হলেও তা থেকে উত্তরণে তেমন কোন উদ্যোগ নেই। ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুপমেন্ট ও জনবল সংকটও এ হাসপাতালের সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালন-এ সব চেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে আছে। এখনো ১ হাজার শয্যার হাসপাতলটি চলছে ৫শ শয্যার জনবল দিয়ে। কিন্তু দৈনিক গড়ে ১ হাজার ৮শ রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও ৫শ শয্যার জন্য অনুমোদিত জনবলেরও প্রায় ৩৫ ভাগ এখনো শূণ্য।
চিকিৎসক থেকে শুরু করে রেডিওলজিস্ট, রেডিওথেরাপিস্ট ও ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর অনেক পদ দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য থাকায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত রোগীদের রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকদেরও দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে গরীব ও অসহায় রোগীরা বাইরে থেকে ক্লিনিক্যাল পরিক্ষা সহ এক্স-রে করতে না পারলে দিনের দিন হাসপাতালের বেড বা মেঝেতে অবস্থান করতে গিয়ে আরো কাতর হয়ে পড়ছেন।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগে ৪ জন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন দু জন। ১০ জন টেকনিশিয়ানের ৪ জনই রাজশাহী, ঢাকা ও বরিশালের অন্য হাসপাতালে প্রেশনে নিযুক্ত থাকায় বিশাল এ হাসপাতালটিতে রোগ নির্ণয় কার্যক্রমে যথেষ্ট বিপত্তি সৃষ্টি হচ্ছে। এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪শ রোগীর রক্ত সহ বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার জন্য গ্রহন করতে হয়। কিন্তু ১ জন সিনিয়র ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট ও দুজন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজিস্ট-এর পক্ষে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেও এ বিপুল সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
হাসপাতালটির রেডিও এন্ড ইমেজিং বিভাগে ১৫টি এক্স-রে মেশিনের ১৩টি বিকল। সচল দুটি এক্স-রে মেশিনের সাহায্যে হাসপাতালের ইনডোর ও আউট ডোরের চাহিদার ১০ ভাগ রোগীরও এক্স-রে করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সিংহভাগ রোগীকেই হাসপাতালের বাইরে এক্স-রে করতে হচ্ছে। ৪টি পোর্টেবল এক্স-রে মেশিনের দুটি শিশু বিভাগ ও হৃদরোগ বিভাগে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এখানেও রেডিওলজিস্ট থেকে শুরু করে অন্যসব পদেও জনবল সংকট ব্যাপক। হাসপাতালটির রেডিওলজি, জেনারেল রেডিওলজি ও নিউরো রেডিওলজি বিভাগে অধ্যাপকের পদও শূণ্য। দুজন সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে একজন দায়িত্বে থাকলেও ৩ জন সহকারী অধ্যাপকের বিপরীতে কর্মরত একজন।
এ হাসপাতালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ‘কোবাল্ট-৬০’ মেশিনটিও গত প্রায় ৫ বছর ধরে বিকল। ফলে ক্যান্সারের মত জটিল রোগীদের রেডিয়েশন দেয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে ঢাকা বা অন্যত্র ছুটতে হচ্ছে। এ হাসপাতালে স্থাপিত এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান মেশিন দুটিও বিকল দীর্ঘদিন ধরে।
এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ হাসপাতালে মাত্র ৮টি আল্ট্রাসোনো মেশিন থাকলেও তার ৭টিই বিকল। অথচ মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলিভার, গ্যাস্ট্রো এ্যান্টোরলজি, ইউরোলজি সহ পরিপাকতন্ত্রেরও বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে আল্ট্রাসোনোর কোন বিকল্প নেই। অর্থোপেডিক বিভাগের ‘সিআর মেশিন’টিও বিকল হয়ে আছে। দীর্ঘদিনের পুরনো মেশিনটি কয়েক দফায় মেরামত করা হলেও এখন তা আর কার্যকর নেই।
এ সব ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল আলম জানান, এসব মেশিন মেরামতে কয়েকবার ঢাকা থেকে টিম আসলেও তেমন কোন কাজ হয়নি। এখনো প্রকৌশলীরা কাজ করছেন। চেষ্টা চলছে বিকল ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইকুইপন্টেগুলো সচল করার। আমরা বারবারই বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় লিখছি। এখনো ইতিবাচক ফল না হলেও নতুন মেশিন সংগ্রহ হলেই বরিশালে আসবে বলেও জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT