কবরস্থানের জমির সংকট সমাধান করছেন চেয়ারম্যান নাদিরা কবরস্থানের জমির সংকট সমাধান করছেন চেয়ারম্যান নাদিরা - ajkerparibartan.com
কবরস্থানের জমির সংকট সমাধান করছেন চেয়ারম্যান নাদিরা

2:35 pm , January 24, 2022

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গত ত্রিশ বছর ধরে মৃত্যুর পর কবর দেয়ার জন্য একটু জায়গার কাকুতি মিনতি করে আসছেন বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়ার পতাং গুচ্ছগ্রামের প্রায় দুইশত বাড়ির হাজারেরও বেশি বাসিন্দারা। তাদের জন্য কবরস্থান তৈরীর জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানের উদ্যোগে কিছু লোক বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রবিবার সরেজমিনে পতাং নেহালগঞ্জের গুচ্ছ গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের কথা বিবেচনা করে প্রয়াত চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ ফেরীঘাট এলাকার খাসজমি কবরস্থানের জন্য নির্ধারণ করে দিলেও তা বিভিন্ন জটিলতায় অসমাপ্তই থেকে যায়। ফলে গুচ্ছ গ্রামবাসীর কেউ মারা গেলে তাকে কবর দেয়ার জন্য হাতেপায়ে ধরতে হয় বিভিন্ন জনের। অন্যথায় নদীতে ভাসিয়ে দিতে হয় বলে জানালেন টুঙ্গিবাড়িয়া উইনিয়নে পতাং নেহালগঞ্জের গুচ্ছ গ্রামবাসী। তাদের এই কষ্ট দূর করতে কখনো কেউ এগিয়ে আসেনি বলেও অভিযোগ করেন তারা। দীর্ঘদিন পর তাদের দাবিপূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান নাদিরা খানম এ কাজে এগিয়ে এসেছেন। তিনি এই অঞ্চলের খ্যাতিমান সমাজসেবক ও সাবেক সচিব প্রয়াত এ.আর খানের সহধর্মিণী। ফলে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে গুচ্ছ গ্রামবাসীর জন্য পূর্ব নির্ধারিত পরিত্যক্ত জলাশয়টি ভরাট করার উদ্যোগ নেন বর্তমান চেয়ারম্যান নাদিরা। কিন্তু কাজ শুরু করা মাত্রই বাধার সম্মুখীন হন তিনি বলে জানান গ্রামের অনেকে। নেহালগঞ্জ ফেরীঘাট সংলগ্ন গুচ্ছগ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এখানে চৌচালা টিনের ঘরগুলো বেশিরভাগই নতুন করে নিজ উদ্যোগে সংস্কার করে নিয়েছেন বাসিন্দারা নিজেই। ১৭০টি ঘরে প্রায় দেড় হাজার লোকের বসবাস। বিদ্যুৎ পানি সুবিধা থাকলেও জ্বালানির জন্য কাঠকয়লা ও ভুষিই সম্বল তাদের। এলাকার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম বলেন, বর্ষাকালে ও ভরা জোয়ারের সময় বেশিরভাগ বাড়িঘরের ভিতরে পানি ঢুকে যায়। পথঘাট সব কাদা পানিতে ভরে যায়। মরিয়ম, নাসিমা, এনায়েত মের্ধা, রাজিব হোসেনসহ গ্রামবাসীরা জানান, ত্রিশ বছর আগে এই গুচ্ছগ্রামে আশ্রয় নেন নদী ভাঙনের অসহায় কিছু মানুষ। কেউ বিনামূল্যে আবার কেউ নামমাত্র মুল্যে এখানে বাড়ির মালিক হয়েছেন। তাদের কষ্ট একটাই মরার পরে তিনহাত মাটি চাই তাদের। আর এ জন্য ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকার পাঁচ একর প্রায় স্থান নির্ধারণ করে যান প্রয়াত সুলতান চেয়ারম্যান। তারপর অনেক চেয়ারম্যান এসেছেন ও চলে গেছেন। সকলের কাছেই কান্নাকাটি করেছেন গুচ্ছ গ্রামবাসীরা। কিন্তু কেউই কোনো পদক্ষেপ নেন নাই। এবার নাদিরা রহমান খান চেয়ারম্যান হয়েই গুচ্ছগ্রামের ভিতরে পরিত্যক্ত দুটি জলাশয়ের একটি পূনঃখনন করে সেখান থেকে বালু নিয়ে ৫০০ মিটার দূরের পরিত্যাক্ত অন্য জলাশয়টি ভরাট করে কবরস্থানে বানানোর উদ্যোগ গ্রহণ নিয়েছেন। এতে করে দীর্ঘদিনের কষ্ট দূর হবে আমাদের। কিন্তু এই মহতী উদ্যোগে কিছু লোক বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। চেয়ারম্যান নাদিরা রহমান জানান, ভালো কাজে বাধা আসতে পারে। তবে সে বাধাকে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি না। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পূর্বেই আমার ওয়াদা ছিল এ অঞ্চলের মানুষের সুন্দর একটা কবরস্থান গড়ে দেয়া। আমি সে কাজে হাত দিয়েছি এবং তা দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। এতে সরকারের অনুদানের চেয়ে আমার ব্যক্তিগত অনুদানই বেশী থাকবে। তাছাড়া আমার প্রয়াত স্বামীরও ইচ্ছা ছিল এ কবরস্থান নির্মানের। এ অঞ্চলের মানুষ মারা গেলে তাদেরকে কবরস্থানের জন্য আর কারো কাছে কোন ধরনের কাকুতি-মিনতি করতে হবে না। তারা তাদের কবরস্থানে স্বজনদের দাফন সম্পন্ন করবেন। চেয়ারম্যান নাদির রহমান আরো বলেন, আমি এলাকার উন্নয়নের জন্য চেয়ারম্যান হয়েছি। সরকারের অনুদান পকেটে ভরার জন্য নয়। এটা সকলের মাথায় রাখা উচিত।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT