নগরী লকডাউনের বার্তা প্রেরন নগরী লকডাউনের বার্তা প্রেরন - ajkerparibartan.com
নগরী লকডাউনের বার্তা প্রেরন

2:47 pm , June 6, 2020

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। এর মধ্যে বরিশাল মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। তাই নগরবাসীর মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, আর কত আক্রান্ত হলে নগরী লকডাউনের আওতায় আনা হবে। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ার কারনে নগরবাসীর মাঝে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কে কখন মরে যাই এই আতঙ্কে দিন-রাত কাটছে নগরবাসীর। আর এই কারণেই বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকেও ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশী, সিটি করপোরেশন এলাকা পূর্ণ লকডাউন রাখা জরুরী’ বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরকে বার্তা দেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল ও পিরোজপুরে আরো দুজনের মৃত্যু সহ দক্ষিণাঞ্চলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৭ জন। এরমধ্যে বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৩৪ জন। এর মধ্যে মহানগরীতেই এ সংখ্যা প্রায় ৩০। আগের দিনের তুলনায় গোটা বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মহানগরীতে পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। ইতোমধ্যে এ নগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫শ হয়েছে। গোটা নগরী জুড়েই করেনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। তবে এরপরেও নগরীতে কোন স্বাস্থ্য সচেতনতা নেই। বরিশালের জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান জানিয়েছেন, লকডাউনের কোন পরিকল্পনা তার নেই। শুধু মাত্র সরকারের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত হলেই তা বিবেচনা করা হতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলে মোট করোনা ভাইরাস সনাক্ত রোগীর সংখ্যা সরকারীভাবে ৯৩২-এ পৌছেছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬৬। শনিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ঝালকাঠীর নলছিটির তিমিরকাঠীর দেলোয়ার হোসেন (৪৫) ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে আবদুল খালেক খান(৫৫) মারা গেছে। এছাড়া পিরোজপুরে অপর এক করোনা সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে পিরোজপুর, ঝালকাঠী ও ভোলার পরিস্থিতিও ক্রমশ উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। পটুয়াখালী ও বরগুনার অবস্থা আগে থেকেই খারাপ। ঝালকাঠীতে পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তাও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বরিশাল মহানগর পুলিশেও আক্রান্তের সংখ্যা ১শ ছাড়িয়েছে। এছাড়া শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ইতোমধ্যে ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসাকর্মী সহ আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। প্রতিদিনই শেবাচিমে চিকিৎসা কর্মীর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কি কারনে এ হাসপাতালটিতে প্রতিদিন একাধিক চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী আক্রান্ত হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে। শনিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পিরোজপুরে ৮, ভোলাতে ৭ ও ঝালকাঠীতে আরো ৫ জনের নাম যুক্ত হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীতেও দুই এবং বরগুনাতে আরো ১ জন আক্রান্ত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে মোট করোনা ভাাইরাস সনাক্ত রোগীর তালিকায় ৮৬ জন আক্রান্ত নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থান পিরোজপুরের। বরগুনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০, পটুয়াখালীতে ৭৫, ঝালকাঠীতে ৬৩। আর ভোলাতে আক্রান্ত ৬২ জন। মৃত্যুর মিছিলেও প্রতিদিন নতুন নাম যোগ হচ্ছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। যার মধ্যে বরিশালে ৫, পটুয়াখালীতে ৪, পিরোজপুরে ৩ এবং ভোলা, বরগুনা ও ঝালকাঠীতে আরো দুজন করে মারা গেছেন। এর বাইরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে। যার মধ্যে ৩ জনের রক্তের নমুনা পরিক্ষার রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। তবে শনিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমিত ২১৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে বলা হয়েছে। এর মধ্যে পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায়ই এ যাবতকালের রেকর্ড সংখ্যক ৪০ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে এখনো করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সিংহভাগ রোগীই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। শণিবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ রোগী ভর্তির মোট সংখ্যা ছিল মাত্র ২০৭। অথচ এ সময় পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৩২। এমনকি গত ২৪ ঘন্টায় মোট আক্রান্ত ৫৭ জনের মধ্যে বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলাতে ১ জন করে মাত্র ৩ জন কোভিড-১৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তিকৃত ১৭ জনের রক্ত পরীক্ষায় ৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে ৯০ জন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৯০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। যার মধ্যে করোনা ওয়ার্ড থেকে সুস্থাবস্থায় ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ৪৩ জনকে। আর ৬জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান হয়েছে। এছাড়া আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ১১৭ জনকে সুস্থাবস্থায় ছেড়ে দেয়া হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০ জনকে ঢাকায় পাঠান হয়েছে। শণিবার সকাল পর্যন্ত শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৫১ জন চিকিৎসাধীন ছিল। যার মধ্যে করোনা ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ছিল ৩২।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT