দক্ষিণাঞ্চলের নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোয় দূর্ভোগ নেমে আসছে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোয় দূর্ভোগ নেমে আসছে - ajkerparibartan.com
দক্ষিণাঞ্চলের নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোয় দূর্ভোগ নেমে আসছে

3:29 pm , May 2, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা ভাইরাসে প্রাদূর্ভাবে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন সম্পূর্ণ স্থবির থাকলেও ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল হয়ে আসায় ঝুকিও বাড়ছে। তবে লক ডাউনে সবচেয়ে বড় ঝুকির কবলে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি। মাসাধীককালের এ স্থবিরতা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের জীবনও আর চলছে না। বরিশাল বিভাগের ৬টির মধ্যে ৫টি জেলা লকডাউনে। দ্বীপজেলা ভোলাতেও আংশিক লকডাউন। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ছুটির মেয়াদ কয়েক দফায় বেড়ে ৫ মে পরবর্তীতে গতকাল ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলেও কবে তার শেষ তা এখন সবার কাছেই অজ্ঞাত। নিম্নবিত্ত পরিবারে অচলবস্থার পরে মধ্যবিত্তের সংসারেও টান ধরেছে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে নিরব হাহাকার শুরু হয়েছে আরো আগেই। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কোন বিকল্প না থাকায় সব কষ্টকে মেনে নিতে হচ্ছে। এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সংসারের চাকা ক্রমশ স্লথ হয়ে ইতোমধ্যে স্তিমিত হতে শুরু করেছে। আইন-শৃংখলা বাহিনী সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ করোনা ভাইরাস রোধে স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে অনুসরনে দক্ষিণাঞ্চলের রাস্তায় নামলেও নারায়নগঞ্জ থেকে আসা শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষের চোরাই স্রোত পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে কেভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১১৭তে পৌছেছে। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা-উপজেলার হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ২২০ জনে উন্নীত হলেও ছাড়া পেয়েছেন ১১২জন। হোম কোয়ারিন্টিনে আছেন ৯ হাজার ৬৬৬ জন। তবে সুস্থভাবে কোয়ারিন্টিন শেষ করেছেন ৬ হাজার ৮৭৩জন। নিয়ম মেনে ওষুধ ও মুদি দোকানের বাইরে অন্য ব্যবসা-বানিজ্য প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ। এমনকি কাঁচা বাজারেও ক্রেতার অভাব। পোল্টী শিল্পে ধশ নেমেছে ইতোমধ্যে। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট-এর তত্বাবধানে আইনÑশৃংখলা বাহিনী প্রায়ই সরকারী নির্দেশনা অনুসরনে বাধ্য করছে অবাধ্য মানুষকে। তবে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ শহরেই যানবাহনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। মোট বাইক চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও তা শুনছেন না অনেকেই। সরকারী কর্মীদের বেতন মিললেও বেশীরভাগ বেসরকারী প্রতিষ্ঠানেই মার্চের বেতন হয়নি এখনো। এপ্রিলের বেতনের সম্ভবনা নিয়ে এখন আর ভাবছেন না কেউ। বৈশি^ক এ সংকটে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণ স্থবির করে দিয়েছে। বিশেষকরে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা সব বর্ণনার বাইরে। এরই মধ্যে রোজার শুরু থেকে চাল, ডাল, পেয়াঁজ, আঁদা ও ভোজ্যতেল সহ অনেক নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি দূর্ভোগের মাত্রা আরো বাড়িছে। যদিও প্রশাসন সহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সিমিত আকারে ত্রান বিতরন করছে। কিন্তু তা প্রকৃত চাহিদা মেটাতে পারছে না। কিন্তু নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কথা ভাবছেনা কেউ। ত্রান নিয়ে দূর্ণীতিও মানুষের ভাগ্য বিড়ম্বনা ঘটাচ্ছে। এ দূর্যোগে বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ রাস্তাঘাটেই অস্বাভাবিক স্তব্ধতা। তবে জাতীয় মহাসড়কে থ্রী-হুইলার সহ পণ্যবাহী যানবাহন চলছে। গত কয়েকদিনে যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও স্থবিরতাও রয়েছে। এর কোন বিকল্পও জানা নেই কারো। জীবন বাঁচানোর তাগিদে বর্তমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতিকে সবাই মেনে নিলেও তা আর কতদিন ধরে রাখতে পারবেন সেবিষয়টি বলতে পারছেন না কেউই। তবে লক ডাউন কঠোরভাবে প্রয়োগ না করলে তা আরো প্রলম্বিত হতে পারে বলেই মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল। সেক্ষেত্রে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ না করলে চলমান স্থবিরতা থেকে মুক্তি অস্বাভাবিক বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। যা হয়ত পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিতে পারে বলেও মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল। আর এ অবস্থায় সমাজের একটি বড় অংশ, দক্ষিণাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষ খুব কষ্টে আছে। সবাই বর্তমান পরিস্থিতিকে মেনে নিতে বাধ্য হলেও তা থেকে পরিত্রানে মহান আল্লাহর দরবারে পানাহ চাচ্ছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT