বাবুগঞ্জে ঘরে ঘরে গরুর খামার! বাবুগঞ্জে ঘরে ঘরে গরুর খামার! - ajkerparibartan.com
বাবুগঞ্জে ঘরে ঘরে গরুর খামার!

3:04 pm , May 28, 2025

বাবুগঞ্জ প্রতিবেদক ॥ ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার গরুর খামারি ও গেরস্তরা। অপরদিকে গরুর বায়না দিতে গ্রাম চষে বেড়াচ্ছেন বেপারীরা। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গেরস্তদের কাছে পছন্দের গরুটির বায়না দিচ্ছেন।
তবে গেরস্তদের দাবি, বেপারীরা দাম হাঁকছেন কম। অপরদিকে বেপারীরা বলছেন, পশু অনুযায়ী গেরস্তরা দাম চাচ্ছেন বেশি।
বাবুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পশু পালনে বাড়তি মনোযোগী হয়েছেন খামারি ও গেরস্তরা। সর্বক্ষণ পশুকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন। করছেন বাড়তি যতœ । গোসল দেয়া, কাঁচা ঘাস সংগ্রহ ও পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা যেন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিচ্ছেন তারা। তবে গো-খাদ্যের পাশাপাশি চিকিৎসা খরচ, ওষুধ ও পালন ব্যয় আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিচ্ছেন বেপারীরা। তারা সুযোগ বুঝে বায়না করছেন। ঈদের কয়েকদিন আগে বরিশাল জেলার বিভিন্ন  হাটে তুলবেন পশুগুলো।
পশু পালনকারীরা জানান, অনেক কষ্ট করে সব কিছু বাড়তি দামে কিনে পশু পালন করছেন তারা। ন্যায্য মূল্য না পেলে অনেকেই পথে বসবেন। বিশেষ গড়ন বা আকৃতির গরুগুলোকে যতœ করে বড় করা হয়। এদের জন্য ছোটবেলা থেকেই নিয়মিতভাবে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলসহ বিশেষ খাবার খাওয়াতে হয়। এদের থাকার জায়গাও আলাদা ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। এভাবেই একপর্যায়ে গরুগুলো সুঠাম ও বিশালদেহী হয়ে ওঠে। সৌখিন লোকজনের কাছে কুরবানির জন্য এসব গরুর বিশেষ চাহিদা থাকে। তাই এগুলোর দামও হয় বেশি। সখের পাশাপাশি লাভের আশায় এ ধরনের গরু পালন করে থাকেন অনেকে। আগের বছরগুলোতে বাবুগঞ্জ  উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের  বিভিন্ন বাড়ি থেকে বড় আকারের গরুগুলো ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। এবার বিপরীত চিত্র। বড় আকৃতির গরুগুলোর চাহিদা নেই বললেই চলে।
উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের রামপট্টি বাজারে ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এমইপি গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান (এমইপি) অ্যাগ্রো গড়ে তুলেছে বড় একটি গরুর খামার। এখানে ২৫০টি গরু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ২৭০টি গরু সরবরাহ করেছিল।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা ফার্ম থেকে প্রতিবছর  কেজি দরে গরু বিক্রি করেন, এবারও সেভাবেই করবেন। তবে এবার প্রতি কেজির মূল্য গতবারের চেয়ে কম নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার ১০০ কেজি থেকে ২৫০ কেজি ওজনের গরুর প্রতি কেজি মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭০ টাকা করে। গত বছর এই সাইজের গরুর প্রতি কেজির মূল্য ছিল ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ২৫০ কেজি থেকে ৫০০ কেজি ওজনের গরুর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৯০ টাকা। গত বছর এই মূল্য ছিল ৫৩০ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মো. রাফিউর রহমান বলেন, ‘খাবারের দাম বাড়লেও আমরা এবার মূল্য কম নির্ধারণ করেছি। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে, আমাদের ফার্ম বড়। তাই গড় অনুপাতে আমাদের ব্যয়ও ছোট ফার্মের চেয়ে কম হয়। এ জন্য আমাদের মূল্য কম নির্ধারণ করলেও লোকসানের ঝুঁকি থাকে না। তবে ছোট ফার্মের এই সুবিধা সীমিত। তাঁদের ফার্মের অধিকাংশ গরুই দেশি প্রজাতির, সামান্য কিছু গরু আছে শাহিওয়াল জাতের।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৮৮টি তবে চাহিদা আছে ১০ হাজার ৫৯৪টি।
উদ্বৃত্ত ২৮৯৪ টি গরু। খামারীর সংখ্যা এ উপজেলায় ৮৪০জন। পশু কুরবানি হাটে ৪ টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সজাগ রাখা হয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT