বাস টার্মিনালের বহুমুখী উন্নয়নের ঘোষণায় টালমাটাল একটি গোষ্ঠী বাস টার্মিনালের বহুমুখী উন্নয়নের ঘোষণায় টালমাটাল একটি গোষ্ঠী - ajkerparibartan.com
বাস টার্মিনালের বহুমুখী উন্নয়নের ঘোষণায় টালমাটাল একটি গোষ্ঠী

4:04 pm , May 5, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রন নিতে মরিয়া একটি গ্রুপ শ্রমিকদের সামনে রেখে নতুন কৌশলে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ কারনেই হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা। কোন ধরনের কারন ছাড়াই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত শনিবার দুপুর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বাস শ্রমিক এবং থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশত থ্রি-হুইলার ভাংচুর এবং হামলায় থ্রি-হুইলারের ১০ শ্রমিক কমবেশী আহত হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য বাস মালিক গ্রুপের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হয়। এমনকি পরিবর্তন আসে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের নেতৃত্বেও। কিন্তু তা মানতে পারেনি বাস টার্মিনালে অরাজকতা ও চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ করে রাখা ওই গ্রুপটি। নতুন নেতৃত্ব আসার পর থেকেই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টিতে বিভিন্নভাবে পায়তারা করে আসছিল। বিশেষ করে সর্বশেষ পহেলা মে দিবসে বাস মালিক গ্রুপ ও বাস শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সভা। সেই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। এছাড়া মেয়র এবং নতুন নেতৃত্বের কারনে বাস টার্মিনালে শৃঙ্খলা  ফিরে আসাটাকেও ভালোভাবে নেয়নি ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাস শ্রমিকদের সাথে বাস মালিক গ্রুপের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। এরপর হামলায় আহত সোহাগকে ওই গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা চৌমাথা এলাকা থেকে অপহরণ করে বিষয়টি আরো ঘোলাটে করার চেষ্টা চালায়। এতে করে বাস শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই গ্রুপের লোকজন বাসস্ট্যান্ডে থাকা শ্রমিকদের কক্ষে ভাংচুর চালায়। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি। তারা বাসস্ট্যান্ডে থাকা কাউন্টারেও ভাংচুর চালায়। সেখানকার আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে চলে তাদের রামরাজত্ব।
এ ঘটনায় শেষ হতে না হতেই সন্ধ্যায় আবারো বাস শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষ হয় থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের। এতে সরাসরি মদদ দেয় লিটন মোল্লার সন্ত্রাসী বাহিনী। তুচ্ছ ঘটনা ঘটলেও লিটন মোল্লার সন্ত্রাসী বাহিনী থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে নথুল্লাবাদ এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করে। সেখান থেকে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে করে দুই প্রান্তে বিপুল যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় তাদেরই একটি গ্রুপ বাস শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে থ্রি-হুইলার ভাংচুর শুরু করে। নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে শুরু করে ব্রিজ পর্যন্ত চলে তাদের তান্ডব। কোনভাবে তান্ডব না থামায় রাতে পুলিশ এসে সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপর পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। কোনভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। তাতেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় দুই রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ ব্যাপারে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী কবির বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে তা দিয়ে সারাদিনব্যাপী হামলা-ভাংচুর চলতে পারে না। এখানে একটি গ্রুপের সন্ত্রাসী বাহিনী বাস শ্রমিকদের সাথে যোগ দিয়ে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তারা।
বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি অসীম দেওয়ান বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকেই ওই গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী বাহিনী মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের বিরুদ্ধাচারন করে আসছে। তারা সিটি মেয়রের উন্নয়ন বানচালের সাথে সাথে বাস টার্মিনালকে বহুমুখী করার যে ঘোষনা দিয়েছেন তাও বানচাল করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। এসব বিষয় নগরবাসী অবহিত। তবে কোন ধরনের হামলা-ভাংচুর এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে বাস টার্মিনালের উন্নয়ন বানচাল করা যাবে না। এমনকি বাস টার্মিনাল একটা সেবা দান প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠান দখলের পায়তারা করলে তাতেও দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। এখানকার শ্রমিক এবং মালিক এক হয়ে কাজ করে। সেখানে কোনভাবেই ভাঙন ধরানো যাবে না।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT