গভীর সমুদ্রে চলে যাচ্ছে ইলিশ গভীর সমুদ্রে চলে যাচ্ছে ইলিশ - ajkerparibartan.com
গভীর সমুদ্রে চলে যাচ্ছে ইলিশ

3:46 pm , April 16, 2024

মৌসুমের সর্বাধিক তাপপ্রবাহে বরিশালে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ মৌসুমের সর্বাধিক তাপ প্রবাহে বরিশালে শিশু এবং বয়োবৃদ্ধ সহ সাধারন মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ এখন বর্ণনার বাইরে। তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ৪.২ ডিগ্রী ওপরে উঠে যাওয়ায় সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ‘হিট স্ট্রোক’ থেকে সবাইকে সাবধান করে দিয়ে প্রয়োজন ছাড়া রোদে ঘোরাফেরা করা থেকে বিরত থাকা সহ পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। গ্রীষ্মের শুরুতে চলমান তাপদাহে বরিশাল মহানগরীর রাস্তাঘাট দুপুরের অনেক আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
অব্যাহত তাপপ্রবাহে প্রায় ৪ লাখ হেক্টরের বোরো ধানের পরিচর্যা ব্যাহত হবার পাশাপাশি নদীর পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ইলিশের গভীর সমুদ্রে চলে যাওয়ার আশংকার কথাও বলেছে মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। প্রখর রোদের সাথে তাপ প্রবাহে জেলেরা নৌকা নিয়ে নদ-নদীতে নামতে পারছেন না। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সাগর পাড়ের খেপুপাড়াতে ৪০.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮ ডিগ্রী বেশী। বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রাও এখন স্বাভাবিকের ২-৩ ডিগ্রী ওপরে থাকছে। ফলে ভোরে একটু ঠান্ডা হাওয়ার স্বস্তিও মিলছে না।
গত তিনদিন ধরে অব্যাহত তাপ প্রবাহে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গ্রীষ্মের শুরুতে এসময়ে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসের স্থলে সোমবার দুপুরে তা ৩৭.৬ ডিগ্রী থেকে মঙ্গলবার আরো দশমিক ১ বেড়ে ৩৭.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছুঁয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। অব্যাহত এ তাপপ্রবাহের সাথে বরিশালে বৃষ্টিরও দেখা মিলছেনা। আবহাওয়া বিভাগের মতে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসেই বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের অনেক নিচে রয়েছে। গত মাসেও বরিশালে স্বাভাবিকের ৩০% কম বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসেও স্বাভাবিক অপেক্ষা কম বৃষ্টিপাতের খবর জানিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস। এপ্রিল মাসে ৬-৮ দিনে বরিশালে ১২০ থেকে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম ১৬দিনের মধ্যে গত ৮ এপ্রিল মাত্র ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চৈত্রের শেষভাগ থেকেই তাপমাত্রার পারদ ক্রমশ ওপরে ওঠা সহ বৃষ্টিপাতের ঘাটতিতে জনস্বাস্থ্যের সাথে কৃষি ও মৎস্য খাতেও বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভরা বোরো মৌসুমের এসময়ে পর্যাপ্ত সেচ ও সার প্রয়োগ এবং আগাছা দমন সহ মাঠে মাঠে ধানের ব্যাপক পরিচর্যা প্রয়োজন হলেও কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা খরতাপে জমির কাছেই যেতে পারছেন না। এমনকি বৃষ্টির অভাবে অতিরিক্ত সেচ প্রদানে এবার বরিশালে বোরো ধানের উৎপাদন ব্যায় বৃদ্ধির আশংকা করছেন কৃষিবীদরা। চলতি মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ১৮ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে ৪ লাখ হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে প্রখর রোদের সাথে অব্যাহত তাপ প্রবাহে জেলেরাও নদ-নদী ও বাওরে স্বাভাবিক মৎস্য আহরণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছে। চলমান তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে বরিশালের অভ্যন্তরীণ ও উপকূল অভ্যন্তরের নদ-নদী থেকে ইলিশের ঝাক গভীর সমুদ্রে চলে যাওয়ার আশংকা করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা। মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক জানান, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করে জেলেদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি’। তার মতে, তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ইলিশের মাইগ্রেশন-এর আশংকা তৈরী হতে পারে’। তবে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তনেরও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT