পাকা সেতুর দাবীতে মানববন্ধন করেছে বদিউল্লাহ সহ ৫ গ্রামের বাসিন্দারা পাকা সেতুর দাবীতে মানববন্ধন করেছে বদিউল্লাহ সহ ৫ গ্রামের বাসিন্দারা - ajkerparibartan.com
পাকা সেতুর দাবীতে মানববন্ধন করেছে বদিউল্লাহ সহ ৫ গ্রামের বাসিন্দারা

3:50 pm , March 10, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলার ৯ নং টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ফুলতলা শাখা নদীর উপরে পাকা সেতুর দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বদিউল্লাহ সহ মোট ৫ টি গ্রামের বাসিন্দারা। বদিউল্লাহ গ্রামের প্রায় ৫০ বছর আগের খেয়া পারাপারের দুর্ভোগ দেড় বছর আগে কিছুটা নিরসন হয়েছিল শাখা নদীর উপর এলাকাবাসীদের নিজেদের অর্থায়নে তৈরি একটি কাঠের সেতুতে। তবে এই কাঠের সেতুটি দিন দিন চলাচলের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন সেতুটি দিয়ে বর্তমানে ছোট যানবাহন সহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও মেহেন্দিগঞ্জের কমপক্ষে ৩/৪ হাজার লোকের চলাচল। বদিউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ স্থানীয় এবতেদায়ী ও হাফেজি মাদ্রাসার কয়েকশ শিশু শিক্ষার্থীদের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম এই সেতুটি। তাই অতি প্রয়োজনীয় এই সেতু পাকা করে নির্মানের দাবী জানিয়ে রোববার সকালে মানববন্ধন করেছে গ্রামবাসী।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া বদিউল্লাহ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ফুলতলা নদীর দুই পাড়ের বদিউল্লাহ, ফরফরিয়াতলা, চরকেউটিয়া, শালুকা, পশ্চিম চরকেউটিয়া, তালুকদারচর গ্রাম সহ মেহেন্দিগঞ্জের বাসিন্দাদের যাতায়াতের একটি অন্যতম সহজ পথ এটি। এই স্থান দিয়ে মানুষ দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর খেয়া পার হয়ে যাতায়াত করছে। খেয়া পারাপার করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বদিউল্লাহ গ্রামের শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। গর্ভবতি নারী ও অসুস্থ মানুষ খেয়া পারাপারের কারণে সময় মত চিকিৎসা নিতে পারেনি এমন ঘটনা আছে অনেক। সর্বশেষ দেড় বছর আগে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ করে খেয়ার বদলে পারাপারের জন্য কাঠের এই সেতুটি নির্মান করে। শুধু তাই নয় তারা এই সেতু পর্যন্ত আসতে ব্যবহৃত সড়কটিও ঠিক করে নেয় নিজেদের উদ্যোগে। কাঠের এই সেতু নির্মানের পর সাধারন জনগন এতে বেশ উপকৃত হয়। বর্তমানে সেতু দিয়ে যাতায়াতকারীদের পাশাপাশি বদিউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবতেদায়ী মাদ্রাসা, হাফেজি মাদ্রাসার কয়েকশ শিক্ষার্থী পারাপার করে। এছাড়া মসজিদ ও গোরস্থানে লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমও এই কাঠের সেতু। বদিউল্লাহ সরকারি আবাসনের ১৫০ পরিবারের সদস্যরাও সেতুটি ব্যবহার করে। কোন কারিগরি জ্ঞান ছাড়া নির্মিত এই কাঠের সেতুটি দীর্ঘ বছর ব্যবহারের কারণে বর্তমানে নাজুক হয়ে পড়েছে। যা দ্রুত পাকা করা না হলে ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাকা সেতুর দাবী জানানো হয়েছে।
বদিউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি ১৪ বছর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বদিউল্লাহ গ্রামের মাঝ দিয়ে ফুলতলা নদীটি বহমান। এই নদীর খেয়াটি এলাকার দুর্ভোগ হিসেবে পরিচিত ছিল। যে খেয়ায় শিক্ষক সহ অনেক শিক্ষার্থী দুর্ঘটনাকবলিত হওয়ার পর এলাকাবাসী কাঠের এই সেতুটি নির্মান করে। এটিও বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। হাজারো মানুষের সুবিধার্থে কাঠের সেতুটি পাকা হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এই শিক্ষক।
বদিউল্লাহ গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামটি একটি নদীবেষ্টিত গ্রাম। এই নদী পার হয়ে এলাকার মানুষের দৈনন্দিন চলাচল। জনগনের ভোগান্তী লাঘবের জন্য গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ির বাগানের গাছ দিয়ে এই কাঠের সেতুটি তৈরি করেছে। এই সেতুটি দিয়ে বর্তমানে বদিউল্লাহ আবাসন, গুচ্ছগ্রাম সহ সদর উপজেলা ও মেহেন্দিগঞ্জের হাজারো লোকের চলাচল। কাঠের এই সেতুটি এখন ঝুঁকিপূর্ন। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই কাঠের সেতুর স্থানে একটি পাকা সেতুর দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, গ্রামবাসী তাদের দাবী জানিয়ে শান্তিপূর্ন কর্মসূচী পালন করেছে। এই দাবী স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে তাদের কাছে উপস্থাপন করা হলে যথোপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান এই কর্মকর্তা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT