সড়কে, ফুটপাতে ছড়ানো ছিটানো ব্যানার-পোস্টার: নীরব বিসিসি সড়কে, ফুটপাতে ছড়ানো ছিটানো ব্যানার-পোস্টার: নীরব বিসিসি - ajkerparibartan.com
সড়কে, ফুটপাতে ছড়ানো ছিটানো ব্যানার-পোস্টার: নীরব বিসিসি

4:18 pm , June 14, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ নির্বাচন শেষ হওয়ার তিনদিন পরও নগরীর সড়ক, ফুটপাত ও অলিগলিতে যত্রতত্র ছড়ানো ছিটানো ব্যানার-পোস্টার অপসারন করা হয়নি। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক পথচলা। অথচ এসব দেখেও না দেখার ভান করছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবী এগুলো প্রার্থীরাই অপসারণ করবেন, তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। আর প্রার্থীদের অনেকেই বলছেন এটা অপসারণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের। ১২ জুন সোমবার বিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং সরকার দলীয় প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বিপুল ভোটে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত চতুর্থ পরিষদের মেয়র দায়িত্ব পালন করবেন।  নির্বাচন শেষ হওয়া মাত্রই নগরীর পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পালন করবেন বিসিসি কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানালেন ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার। তিনি বলেন, প্রার্থীদের অনেকেই পরাজিত হয়ে মন খারাপ আবার যারা জয়ী হয়েছেন তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এ কারণে প্রার্র্থীরা ব্যানার-পোস্টার অপসারণে আগ্রহী না।
এদিকে এসব ব্যানার পোস্টারের কারণে বড় গাড়ি চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি ছাড়াও শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পথে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরাও। নগরীর রুপাতলী থেকে নথুল্লাবাদ মহাসড়কসহ জিলাস্কুলের সামনের সড়কে, সিটি করপোরেশন ভবন এলাকায়, বাংলা বাজার, নতুন বাজার, বটতলা মোড়  প্রতিটি স্থানে ব্যানার-পোস্টারের ছড়াছড়ি দেখা গেছে বুধবার বিকেলেও। রয়েছে প্রার্থীদের প্রচারণা ক্যাম্পগুলোও। জিলাস্কুলের সামনে পোস্টার বাধা রশিতে পা আটকে  যাওয়া একজন বয়ষ্ক নাগরিক অভিযোগ করে বলেন, এগুলো এখনো সরায় না কেন? দেখেনতো ঝড় বৃষ্টিতে ভিজে রশি ছিঁড়ে সড়কের কি বেহাল অবস্থা করেছে।
তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশনের চতুর্থ পরিষদের লোকজন কি করছে? গত কদিন তো তাদের কোনো কাজকর্মই চোখে পড়েনি। নির্বাচন শেষ হওয়া মাত্রই তো এগুলো পরিষ্কার করা উচিত ।
এসময় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছিড়ে যাওয়া দঁড়িতে ভেজা পোস্টার, পলিথিন মোড়ানো পোস্টার, লিফলেট ইত্যাদি পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
এদিকে বিবির পুকুর পাড়ের এনেক্স ভবনে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখায় অভিযোগ দিতে গিয়ে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানালেন আমতলা এলাকার বাসীন্দা মিরাজ। তার বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় গত প্রায় এক বছর ধরে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্থায়ী সমাধান না করে মাঝেমধ্যে সিটি করপোরেশনের লোক ধরে এনে কাজ করাতেন তিনি। গত তিন/চার দিন কাউকে খুঁজে না পেয়ে নিজেই পরিচ্ছন্ন বিভাগে যান। কিন্তু কাউকে না পেয়ে ফিরে আসেন বলে জানান সিরাজ।
অন্যদিকে মশার জ্বালাতনে অস্থির নগরীর রসুলপুর ও পলাশপুর এলাকার বাসিন্দারা।  তারাও গত কয়েকদিন ধরে সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মীকেই দেখেননি বলে অভিযোগ করেন।
বরিশাল অর্থনীতি সমিতির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, সিটি নির্বাচনের হাজার হাজার (হয়ত লাখ লাখ) ব্যানার পোস্টার, বিলবোর্ড এখন অপ্রয়োজনীয় ঝঞ্জাল হিসাবে ঝুলছে। শেষ বিকেলের ঝড় বৃষ্টির কারনে কিছু মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। পরিবেশ দূষন করা এসব বর্জ্য দ্রুত অপসারণ জরুরি। নালা, নর্দমা, খাল সর্বত্রই এগুলি ছড়িয়ে পরে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দেবে। যার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ুক না কেন অবিলম্বে এগুলি অপসারণ অত্যাবশ্যক। প্লাস্টিক কভারযুক্ত হওয়ায় পোড়ালে বাতাস দূষণ হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে জনস্বার্র্থে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান কাজী মিজানুর রহমান।যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ভোটের দিন ছাড়া প্রতিদিনই মশা নিধন কার্যক্রম অব্যাহত ছিলো, আজো পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে সবখানে। তিনি আরো বলেন, ব্যানার পোস্টার সরানোর দায়িত্ব প্রার্থীদের। নির্বাচন কমিশন আইনানুযায়ী একজন প্রার্থী তার নিজের ব্যানার পোস্টার সরিয়ে নেবেন। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান বিসিসির এই কর্মকর্তা। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, এমন কোনো বিধিমালা নির্বাচন কমিশনের নেই। এটা যে বলেছেন, ভুল বলেছেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই শহর পরিচ্ছন্ন করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT