3:43 pm , August 8, 2022
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর কর্মীবান্ধব গুণাবলির শতভাগই আমরা বেগম মুজিবের মধ্যে দেখতে পাই। দলীয় কর্মীদের সুখ-দুঃখের সাথী ছিলেন তিনি। হোক সে রাজনৈতিক কর্মী অথবা সাধারণ নি¤œবিত্ত মানুষ, তার কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে কেউ কখনও খালি হাতে ফিরে যেত না।
সোমবার (৮ আগস্ট) ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯২ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অসহায় দুস্থ নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদীর্ঘকাল বাঙালির জাতির অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার ও দৃঢ় প্রত্যয়ের নেপথ্যে আড়াল থেকে প্রচ্ছন্ন ভূমিকায় ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩ তম জন্মবার্ষিকী। কাল থেকে কালান্তরে জাতির পিতার বর্ণিল সময়, কারান্তরিত সময় কিংবা উত্তাল ছাত্র জীবনের বিদগ্ধ সময় সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দিনযাপনের ব্যবচ্ছেদ করলে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সর্বংসহা ভূমিকা বেরিয়ে আসবে। বঙ্গবন্ধুর চিরচেনা বাইগারের জলের সাথে বঙ্গবন্ধুর যতটা সখ্যতা রয়েছে, টুঙ্গিপাড়ার সেই নদীটির সাথে যেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবেরও ঠিক সেরকমই ভাবগাম্ভীর্য ও মিতালি রয়েছে।
তিনি বলেন, খোকা থেকে মুজিব, মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং সবশেষে বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হয়ে ওঠার পেছনে যে নারীর অবদান অনস্বীকার্য তিনি আর কেউ নন, তিনি আমাদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু তার জীবনের পুরোটা সময় ব্যয় করেছেন জনগণের সেবায়, দেশের কল্যাণে, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংকল্প ও স্বাপ্নিক সাহসে।সেই সাহসের অন্তমিলে যে নামটি জুড়ে রয়েছে তা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সাহসের অভিযাত্রায় দিগ্বিজয়ী দৃঢ়চেতা সুরে একটি নাম বারবার তিনি উচ্চারণ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে নামটি রেণু, আমাদের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। মানুষের ভালোবাসার কাঙ্গাল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। নেতা-কর্মীদের প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসতেন তিনি। নানক জানান, ১৯৪৬ সালে দাঙ্গার সময় বেগম মুজিব নিজে অসুস্থ থাকা অবস্থায়ও বঙ্গবন্ধুকে দাঙ্গা উপদ্রুত এলাকায় যেতে বারণ করেন নি। সেই সময় বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে চিঠিতে লিখেছেন – “আপনি শুধু আমার স্বামী হবার জন্য জন্ম নেননি, দেশের কাজ করার জন্য জন্ম নিয়েছেন। দেশের কাজই আপনার সবচাইতে বড় কাজ। আপনি নিশ্চিন্তমনে সেই কাজে যান। আমার জন্য চিন্তা করবেন না। আল্লাহর উপর আমার ভার ছেড়ে দিন।” এভাবে নিজের জীবনটা উনি দিয়ে গেছেন। সবাইকে নিয়ে চলে গেলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহাপ্রয়াণের পরও বঙ্গমাতা আজও স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর আত্মত্যাগের অবদানকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের সকলের।সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বধীনতা এনে দিয়েছেন। বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপ্রেরণার উৎস। সুখে-দুঃখে সবসময় পাশে থেকে অনুপ্রাণিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির করেছিলেন দেশের জনগণের জন্য এবং বেগম মুজিবের কর্মকা-ও ছিল এ দেশের মানুষের জন্য। তিনি ছায়ার মতো বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে দলের নেতাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।