র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৬৩ সদস্য নিহত, ৩২৮ জনের আত্মসমর্পণ র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৬৩ সদস্য নিহত, ৩২৮ জনের আত্মসমর্পণ - ajkerparibartan.com
র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৬৩ সদস্য নিহত, ৩২৮ জনের আত্মসমর্পণ

2:52 pm , November 1, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গতকাল নভেম্বরের প্রথম দিনে সুন্দরবন জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত ঘোষনার এক বছর পূর্তি হয়েছে। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের অপরূপ লীলাভূমি সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত ঘোষনা করেন। র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সুন্দরবনে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৬৩ জন জলদস্যু ও বনদস্যু নিহত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে দস্যু বাহীনির প্রধানসহ ৫৮৬ জন সদস্য। এছাড়া আত্মসমর্পন করেছে ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু। র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে ই-মেইলে প্রেরিত এক তথ্য বিবরনীতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে সুন্দরবনকে জলদস্যু ও বনদস্যু মুক্ত করতে কাজ করে আসছে র‌্যাব-৮। এর ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা হতে এ পর্যন্ত সুন্দরবনে ২৪৬ টি সফল অভিযান পরিচালনা করে তারা। এ অভিযানে গ্রেফতার হয় ৫৮৬ জলদস্যু। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয় ১ হাজার ৭৮০ টি অস্ত্র ও ৪১ হাজার ৯৫৫ রাউন্ড গোলাবারুদ। বিভিন্ন সময়ে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৬৩ জন জলদস্যু ও বনদস্যু নিহত হয়েছে। পাশাপাশি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ৯টি জীবিত শাবক, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ২৩টি চামড়া, ২৯টি জীবিত হরিণ, ১২৯টি হরিণের চামড়া এবং বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল সংখ্যক পশু-পাখি উদ্ধার করা হয়েছে। এসব কারনে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং সচেতনতা সৃষ্টির কাজে বিশেষ অবদান রাখায় ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক র‌্যাব ফোর্সেসকে ‘বঙ্গবন্ধু’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। র‌্যাব জানায়, ‘উপকূলীয় জেলা সমূহে মৎস্যজীবী জেলেদের মৎস্য আহরণ নির্বিঘœ ও জলদস্যুদের দমনের লক্ষ্যে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে র‌্যাব মহাপরিচালককে প্রধান করে র‌্যাব, পুলিশ কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এর ফলে বেগবান হয় সুন্দরবনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান। লিড এজেন্সি হিসেবে র‌্যাবের ক্রমাগত সাঁড়াশি অভিযানে জলদস্যু ও বনদস্যুরা কোনঠাসা হয়ে পড়ে। দিশেহারা হয়ে জলদস্যুরা ফেরারী জীবনের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্ববধানে র‌্যাবের নিকট ২০১৬ সালের ৩১ মে হতে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ৩২ টি জলদস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু ৪৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ র‌্যাবের নিকট আত্মসমর্পণ করে। সর্বশেষ গত ২০ অক্টোবর সুন্দরবন অঞ্চলের কক্সবাজারের মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার ৬টি জলদস্যু বাহিনীর ৪৩ জন জলদস্যু ৯৪টি অস্ত্র ও ৭ হাজার ৬৩৭ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকৃত জলদস্যুদের সামজের মূল শ্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। র‌্যাবের পক্ষ হতে দেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা, শীতবস্ত্র, ১টি করে মোবাইল সেট ও নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার সামগ্রী এবং এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ হতে ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে। পূর্ববর্তী দক্ষতা অনুযায়ী এবং ক্ষেত্র বিশেষ নতুন করে সরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করে নতুন নতুন কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে সহায়তা করা হচ্ছে তাদেরকে। এসব কারনে জলদস্যু মুক্ত হয়ে সুন্দরবন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে জলদস্যু মুক্ত ঘোষনা করেন। বর্তমানে সুন্দরবনে শান্তির সু-বাতাস বইছে। অপহরণ, হত্যা এখন তিরোহিত। দিতে হচ্ছে না জেলেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের ভাগ। মাওয়ালী, বাওয়ালী, বনজীবী, বন্যপ্রাণী এখন সবাই নিরাপদ। নির্ভয়ে নির্বিঘেœ আসছে দর্শনার্থী-পর্যবেক্ষক, জাহাজ বণিকেরা।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT