3:24 pm , July 16, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজীর মামলায় তিন পুলিশ সদস্য ও দুই নারী সহ ৬ জনকে জেলে পাঠিয়েছেন আদালত। বরিশালের মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আনিচুর রহমান মঙ্গলবার ওই ৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে পাঠানো তিন পুলিশ সদস্য হলো জেলা পুলিশের সদস্য বেলাল হোসেন ও মো. ইলিয়াস এবং মহানগর (বিএমপি) পুলিশের সদস্য আনিচুর রহমান মৃধা। এছাড়াও তাদের সহযোগী শিরিন সুলতানা, সুর্বণা আক্তার ও সুভাষ চন্দ্র শীলকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত সোমবার দুপুরের পর ওই ৬জনকে নগরীর বিভিন্নস্থান থেকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন।
নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর মল্লিক তিন পুলিশ সদস্য সহ ৬জনকে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি নানাভাবে নগরীতে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করছিল।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জানান, নগরীর জুমির খান সড়কে ভাড়া বাড়িতে থাকেন সবুজ মোল্লা। গত ১১ জুলাই পূর্ব পরিচিত শিরিন সুলতানা নামে এক নারী অপরিচিত আরেক তরুনীকে নিয়ে সবুজ মোল্লার বাসায় ঢোকেন। কিছুক্ষণ পরেই শিরিন সুলতানার ফোন পেয়ে ওয়াকিটকি হাতে সবুজ মোল্লার বাসায় হাজির হন দুই পুলিশ সদস্য। আসেন আরো এক ব্যক্তি। এর পরপরই ওই দুই পুলিশ সদস্য নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সবুজ মোল্লার সঙ্গে ওই তরুনীর একাধিক আপত্তিকর ছবি তোলেন। পরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সবুজ মোল্লার কাছ থেকে নগদ ১৩ হাজার এবং বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় ওই চক্র।
এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে সবুজ মোল্লা নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে গেলে তাকে নিশ্চিত করা হয় জুমির খান সড়কে নগর গোয়েন্দা পুলিশ গত ১১ জুলাই কোন অভিযান করেনি। গোয়েন্দা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে গত সোমবার সবুজ মোল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় পুলিশ পরিচয়ে চাঁদাবাজি অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই গোয়েন্দা পুলিশ প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে এবং একই দিন নগরীর মুক্তিযোদ্ধা পার্ক এলাকা থেকে প্রথমে গ্রেফতার করা হয় শিরিন সুলতানাকে। শিরিন সুলতানা বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই গ্রামের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ডাকাত শুক্কুর আলীর স্ত্রী। পরবর্তীতে শিরিন সুলতানার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের সদস্য বেলাল হোসেন ও মো. ইলিয়াস এবং মেট্রোপলিন পুলিশের সদস্য আনিচুর রহমান মৃধা এবং তাদের সহযোগী সুজন চন্দ্র শীল ও সুর্বনা আক্তার নামের আরেক তরুনীকে গ্রেফতার করা হয়। সুজন চন্দ্র শীল পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জ উপজেলার এবং সুর্বণা আক্তার ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসিন্দা।
বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাকিব হোসেন ও মহানগর ডিবি’র উপ-কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর মল্লিক জানিয়েছেন, ওই তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সব ধরনের বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।