6:30 pm , May 3, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শিশু চোর সন্দেহে নৌ পুলিশের কনস্টেবলকে গণধোলাই দিয়েছে রোগীর স্বজনরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। গণধোলাই’র শিকার পুলিশ কনস্টেবল’র নাম নজিবুল আহসান। তিনি সদর নৌ থানায় কর্মরত বলে জানা গেছে। প্রতক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পুলিশ কনস্টেবল নজিবুল আহসান শিশু ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করছিলো। তখন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন দুই বছর বয়সি শিশু তাইয়েবা’র শয্যাপাশে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরা ফেরা করছিলো। এসময় তাইয়েবার মা সাজেদা বেগম পুলিশ কনস্টেবল নজিবুল আহসানকে শিশু চোর বলে আখ্যা দেয়। এর কিছুক্ষন পরেই শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অন্যান্য শিশুদের অভিভাবকরা শিশু চোর সন্দেহে নজিবুল আহসানকে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধিক শিশু তাইয়েবা’র মা ও নগরীর কালিজিরা এলাকার বাসিন্দা রমিজ মিয়া’র স্ত্রী সাজেদা বেগম অভিযোগ করেন, ওই ব্যক্তি সন্দেহজনকভাবে তার চিকিৎসাধীন কণ্যার শয্যাপাশে ঘোরা ফেরা করছিলো। বিষয়টি লক্ষ্য করে আমি কন্যার শয্যা পাশে আসতেই নজিবুল আহসান নামের ব্যক্তি পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। তখন বাচ্চা চোর বলে ডাক-চিৎকার দেন। এসময় ওয়ার্ডে’র অন্যান্য শিশুদের অভিভাবকরা ওই ব্যক্তিকে ধাওয়া করে গণধোলাই দেয়। গণধোলাই’র শিকার নৌ পুলিশেল কনস্টেবল নজিবুল আহসান জানিয়েছেন, হাসপাতালের চতুর্থ তলায় তার একজন রোগী ভর্তি ছিলো। বৃহস্পতিবার ওই রোগীকে দেখতে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার রোগী চলে গেছে। তাই হাটতে হাটতে চতুর্থ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে যান। এসময় তাইয়েবা নামের শিশুর মা আমাকে প্রশ্ন করে “আপনি এভাবে ঘোরাঘুরি করেন কেন, আপনি কি বাচ্চা চুরি করবেন নাকি”? একথা বলায় শিশুর মায়ের সাথে তার একটু বাকবিতন্ড হয়। একপর্যায় আমি শিশু ওয়ার্ড থেকে চলে আসি। হাসপাতালের নিচ তলায় লাশ সংরক্ষন কক্ষের সামনে পর্যন্ত যাওয়া মাত্রই কিছু লোক বাচ্চা চোর বলে আমার উপর হামলা করে। এমনকি আমাকে টেনে হেচড়ে দ্বিতীয় তলায় শিশু বিভাগে নিয়ে যায়। অযথাই চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পুলিশ কনস্টেবল নজিবুল আহসানের।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। চুরির অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত এবং অপরাধ তদন্তের জন্য পুলিশ কনস্টেবল নজিবুল আহসান ও শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। তবে যতটুকু মনে হচ্ছে তাতে ভুল বোঝাবুঝি’র মাধ্যমে ঘটনাটি ঘটেছে।