ময়লার ভাগাড়ে পরিনত নগরীর কাটপট্টি পুকুর, মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা স্থানীয়দের ময়লার ভাগাড়ে পরিনত নগরীর কাটপট্টি পুকুর, মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা স্থানীয়দের - ajkerparibartan.com
ময়লার ভাগাড়ে পরিনত নগরীর কাটপট্টি পুকুর, মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা স্থানীয়দের

4:04 pm , March 2, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ স্থানীয়দের কাছে থানার পুকুর নামে পরিচিত বরিশাল নগরীর কাটপট্টি এলাকার পুকুরটি দূষণের কবলে পড়েছে।লিজ দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করা ও যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনা ফেলার কারনে  পানি দূষিত হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে পুকুরটি রক্ষায় কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ওই এলাকার বসিন্দারা। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কাটপট্টি এলাকার পুকুরটি একসময় শত-শত মানুষ ব্যবহার করতো। কোতয়ালী মডেল থানা মসজিদের মুসল্লিরা পুকুরটিতে ওযু করতেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপুজার দশমীর দিনে পুকুরটিতে সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষেরা সেই সাঁতার প্রতিযোগিতা দেখতে ভীড় করতো। কিন্তু কয়েক বছর আগে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে চারদিকে স্টল নির্মান করে বানিজ্যিকভাবে ভাড়া দেয়ার কারণে ওই পুকুর জনসাধারণের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পুকুরটি বর্তমানে ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের প্রসাবখানা আর স্থানীয়দের ময়লা ফেলার ডাস্টবিনে পরিনত হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েকজন প্রবীন ব্যক্তি জানান, পুকুরটি চোখের সামনে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে গেছে। পুকুরটি যখন ব্যবহার উপযোগী ছিলো তখন কাটপট্টিসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা গোসল করতেন। মুসল্লীরা ওযু করতেন। সর্বোপরি পুকুরটি না থাকলে হয়তো এ এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই সাঁতারই শিখতে পারতেন না। স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর হাসান লাবলু জানান, পুকুরটি আমাদের কাছে ঐতিহ্যের। মায়ের মুখে শুনেছি ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পুকুরটিতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষদের প্রতিক নৌকা ভাসিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছিলো। তিনি বলেন, আমাদের মা-বাবা, ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই পুকুরে গোসল করেছি। সাঁতার কেটেছি, সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছি। আজ তা শুধুই স্মৃতি। পুকুরটি আগের মতো ব্যবহারের উপযোগী করার জন্য তিনি সিটি মেয়রের প্রতি আহবান জানান। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রেজাউল হাসান মুন্না জানান, পুকুরটি আমাদের অস্বিত্ব বলেই মনে করি। বোঁধ করি পুকুরটি না থাকলে আমাদের পূর্ব পুরুষসহ কয়েক প্রজন্ম সাঁতার শিখতে পারতো কিনা সন্দেহ। তার মতে কাটপট্টি এলাকার পঁচিশ উর্ধ্ব যেসকল স্থায়ী বাসিন্দা রয়েছে তাদের বেশীর ভাগই পুকুরটিতে সাঁতার শিখেছে।সংস্কারের অভাব ও মাছ চাষে এ পুকুরের পানি দূষিত হয়ে উঠেছে বল মনে করেই স্থানীয়দের অনেকে। তাদের অভিযোগ পুকুরের চারিপাশে স্টল নির্মান না করা হলেও সেখানকার ব্যবসায়ীদের জন্য কোন টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ী ও পথচারিরা পুকুরটিকে স্থায়ী প্রসাবখানা হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত বাসা-বাড়ীর বর্জ্য ফেলার কারনে পুকুরের পানি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা পুকুরটি ব্যবহারযোগ্য করতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহর (খোকন সেরনিয়াবাত) জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT