দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রকাশক জাহিদুল ইসলাম মামুন দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রকাশক জাহিদুল ইসলাম মামুন - ajkerparibartan.com
দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রকাশক জাহিদুল ইসলাম মামুন

4:13 pm , February 3, 2024

হেলাল উদ্দিন ॥ ‘অ’ তে অজগর; অজগরটি আসছে তেড়ে। কিংবা ‘ই’ তে ইক্ষু রস অতি মিষ্টি। মূলত এসব লেখা পড়েই বড় হয়েছে আমাদের জেনারেশনের বড় একটি অংশ। যা ছিলো শিশুদের জন্য অনেকটা জটিল, অর্থ-ভিত্তিহীন ও দুর্বোধ্য। এসব বাক্যের পরিতর্তে সন্নিবেশ করানো হয়েছে নীতিকথার সব বাক্যের। যেমন ‘অ’ তে অসৎ সঙ্গ ভাল নয়, অহংকারীর পতন হয়।‘ ই’ তে ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, এই কথা মিথ্যে নয়। শুধু আদর্শ লিপির আদলে তৈরী করা বইটি নতুন করে প্রকাশ করেছেন জাহিদুল ইসলাম মামুন। বইটির নাম হচ্ছে ‘বর্নমালায় নীতিকথা’। টিআইবি ২০১৩ সালে পরীক্ষামূলক সংস্করন করেন। এরপর সম্প্রতি বরিশাল বিভাগ তথ্য গাইড প্রকাশনা পরিষদ বইটি প্রকাশ করে। তবে বিস্ময়ের বিষয হচেছ প্রকাশক জাহিদুল ইসলাম মামুন বইটি বাজারজাত করার জন্য প্রকাশনা করেননি। আপাতত স্কুলে স্কুলে গিয়ে বিনা মূল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে বইগুলো বিতরণ করবেন তিনি। শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করাই তার একমাত্র লক্ষ্য। এই বইটির বাইরেও মামুনের রয়েছে বই প্রকাশনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। ইতিপূর্বে বরিশালের ডায়েরী,তথ্য গাইড,স্বপ্নের বরিশাল,আমদের বরিশাল বিভাগ নামে বেশ কয়েকটি বই প্রকাশনা করেছেন তিনি। সবগুলো বই জনস্বার্থে প্রকাশিত এবং বেশ সমাধৃত হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত তথ্য গাইড প্রকাশ করে আসছেন জাহিদুল ইসলাম মামুন। যা দেশ, মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে ধারাবাহিকভাবে তথ্য গাইড প্রকাশ করার পিছনের গল্প আজকের পরিবর্তনকে বলেছেন জাহিদুল ইসলাম মামুন। আগামী প্রজ¤œ ও শিশুদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এই অজানা কথাগুলো পাঠকের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয় আজকের পরিবর্তন।
দেশ মাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা :
মামুনের কথা শুনে অনেকটা অবাক ও বিস্মিত হলাম। জনস্বার্থে তাঁর সাতটি গাইড বই প্রকাশ করার পিছনে রয়েছে শুধুই দেশ মাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত ধারাবাহিকভাবে তথ্য গাইড প্রকাশে প্রমাণ করে মানুষের মাঝে দেশের সম্মান তুলে ধরার কত যে গভীর ভালোবাসা ও আপ্রাণ চেষ্টায় ব্রত জাহিদুল ইসলাম মামুন। তাঁর প্রথম তিনটি গাইড বই বরিশাল বিভাগের সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ফোন, মোবাইল ও ই-মেইল ঠিকানা ছিল। মানুষের প্রয়োজনে প্রকাশিত বইগুলো খুবই জনপ্রিয়তা পায়। ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে মানুষ যখন ঘরবন্দী ঠিক সেই সময় ফেসবুকে নিজস্ব একাউন্ট থেকে ১৫০ জন গুনি মানুষের জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা করে পোস্ট করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে আলোচিত ছিল তাঁর নামটি।
সাদামাটা জীবনযাপন করতে ভালোবাসেন মামুন :
তথ্য ভিত্তিক গাইড এর প্রকাশক ও সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মামুন বলেন, বরিশাল বিভাগ ও জেলার জনস্বার্থে বিজ্ঞাপন মুক্ত সাতটি তথ্য ভিত্তিক প্রকাশিত গাইড বই গুলো বিভাগের ৬ জেলা ৪২ উপজেলার সব বয়সের পাঠকদের মাঝে খুব স্বল্প মূল্যে বিশ হাজার কপি বই ইতিমধ্যে বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সমর্থকও নই। কারণ হিসেবে মামুন বলেন, আমি সময় পেলে কোনো বিষয়ে লেখালেখি করি। এটা আমার শখ। মামুন এর ভাষ্য, সাহসী কলম যোদ্ধাদের নিকট থেকে সংবাদের নিরপেক্ষতা শিখেছি। এজন্যই নিজেকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে চেষ্টা করেছি। সকলের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে সাদামাটা জীবনযাপন করতে ভালোবাসি। কতটা নিজে সফল হয়েছি বা কি পেয়েছি তা ভাবিনি কখনও। তথ্য ভিত্তিক গাইড প্রকাশক ও সম্পাদক মামুন বলেন, আমি যা-ই লিখি অন্তত কোনো পাঠক যাতে বলতে না পারে টাকা খেয়েছে অথবা এই লোক অমুক দলের কান্ডারি। আমার একটি লেখা যদি কমপক্ষে দশজনে পড়ে আর যদি ছয়জনে মনে করে লেখাটি নিরপেক্ষ সেটাই আমার অর্জন।
নিজের লেখা বই নিজেই ফেরি করেন মামুন :
বরিশাল বিভাগের সংক্ষিপ্ত তথ্য ভিত্তিক ইতিহাস, ঐতিহ্য, গৌরবময় অর্জন, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন এবং বরেণ্য ব্যক্তিদের জীবনীর ওপর লেখা বইটি জাহিদুল ইসলাম মামুন নিজেই বরিশাল বিভাগের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ সহ আরও বিভিন্ন স্থানে আট বছর ধরে ফেরী করে বিক্রি করে আসছেন । তিনি ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর নতুন তথ্য সংযুক্ত করে নতুন নামে বরিশাল বিভাগের জনস্বার্থে তথ্য ভিত্তিক গাইড বই প্রকাশ করেন। তাঁর প্রকাশিত বই এর সংখ্যা ৭টি। বিক্রির সংখ্যা বিশ হাজার কপি। নিজের লেখা বই নিজেই ফেরি করে বিক্রি করে আনন্দ পান মামুন।
জাহিদুল ইসলাম মামুন এর বাড়ি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুর এলাকায়। তাঁর পিতা সনদ বিহীন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা প্রয়াত আবদুল জব্বার হাওলাদার। তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে “পূর্ব বাংলা শ্রমিক আন্দোলন”-এর ব্যানারে আটঘর কুড়িয়ানা পেয়ারা বাগানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঘাট শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক, হকার্স শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকায় শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি একজন শ্রমজীবী মানুষের বিপ্লবী নেতা ছিলেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT