4:07 pm , December 17, 2023
পৌষের প্রথম দিনেই তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের নিচে
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পৌষের প্রথম দিনেই তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের নিচে নেমে গিয়ে বরিশালবাসীকে যথেষ্ট কাবু করল। কুয়াশাচ্ছন্ন হিমেল হাওয়ার সাথে প্রায় ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার কনকনে ঠান্ডায় সমগ্র বরিশাল অঞ্চলেই জনজীবন বিপর্যস্ত। শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডাজনিত রোগ ব্যাধি বাড়ছে। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া শনিবার সকাল থেকে কেউ ঘর থেকে বের হননি। অগ্রহায়নের শেষ সপ্তাহজুড়েই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কিছুটা নিচেই ছিল। সাথে কয়েকদিন দুপুরের আগে সূর্যের দেখা মিলছিল না। আবহাওয়া বিভাগের হিসেবে ডিসেম্বরে বরিশালে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৩.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে থাকার কথা।
কিন্তু তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের নিচে নেমে যাবার সাথে উত্তর-পশ্চিমের হিমেল হাওয়ায় শীতের অনুভুতি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ মাসের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ বাংলাদেশ উপকূল থেকে প্রায় সাড়ে ১২শ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আছড়ে পরে দুর্বল হয়ে ক্রমশ উত্তরে এগিয়ে স্থল নি¤œচাপ আকারে মিলিয়ে যাবার পরেই সাইবেরিয়ান বায়ু বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল হয়ে সারা দেশে ঢুকে পড়ে। ফলে মাত্র ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই বরিশালে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৯ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস পাবার সাথে উত্তর-পশ্চিমের কনকনে হাওয়ায় জনজীবন ক্রমশ বিপর্যস্ত হতে শুরু করে। চলতি মাসের শেষ দিকে ১-২টি মৃদু থেকে মাঝারী শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাবার খবর দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ। তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকর নিচে নেমে যাবার সাথে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরী’ সহ গোল আলু ‘লেট ব্লাইট’ রোগে আক্রান্ত হবারও প্রবনতা বাড়ছে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে আগামী কয়েক দিনে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পারদ হ্রাস পাবার কথাও বলা হয়েছে। সাথে গত কয়েকদিন ধরে রাতের শেষ প্রহর থেকে মেঘনা অববাহিকা সহ বরিশাল অঞ্চল মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে থাকছে অনেক বেলা পর্যন্ত। এমনকি গত মঙ্গলবার রাতের প্রথম প্রহরে দুটি যাত্রিবাহী বেসরকারী নৌযানের সংঘর্ষে মেঘনার হাইমচরে ‘এমভি সুরুভী-৮’এর ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও নৌযানটির এক যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এ বিরুপ আবহাওয়ায় শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হবার প্রবনতাও বাড়ছে। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেনারেল হাসপাতাল সহ বরিশাল অঞ্চলের সব হাসপাতালেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এসময়ে শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা এড়িয়ে চলার পাশাপাশি হালকা গরম পানিতে গোসল করারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি সব বয়সী মানুষকেই যতটা সম্ভব গায়ে রোদ লাগানোরও পরামর্শ দিয়েছেন।