ঘটছে হামলা, প্রচারণায় বাধা, পোষ্টার ছেঁড়া, মাইক ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে হামলা, প্রচারণায় বাধা, পোষ্টার ছেঁড়া, মাইক ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনা - ajkerparibartan.com
ঘটছে হামলা, প্রচারণায় বাধা, পোষ্টার ছেঁড়া, মাইক ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনা

3:58 pm , June 4, 2023

নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে
১৪ নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ শাকিল হোসেন পলাশ ও তার কর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাতে প্রচারনার গাড়ি (অটোরিক্সা) ও মাইক ভাংচুরের অভিযোগ করেছেন সংরক্ষিত-৫ (১৩, ১৪, ১৫) আসনের বই প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মোসাঃ কামরুন্নাহার রোজী।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারনায় বাধা, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুই কাউন্সিলর।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মারুফ আহম্মেদ য় জিয়া তার নির্বাচনী প্রচারনায় বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। হাতে গোনা কয়েকদিন বাকী থাকতেই কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধা, মারধর, পোষ্টার ছেড়া, মাইক ভাংচুরসহ নানান অভিযোগে নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। রোববার (০৪ জুন ) দুপুরে বরিশাল নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ শাকিল হোসেন পলাশ ও তার কর্মীদের মারধর এবং নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগে উঠেছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিয়াদ হোসেন খানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচার দাবিতে কাউন্সিলর প্রার্থী মোঃ শাকিল হোসেন পলাশের অনুসারীরা ওই এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে জড়ো হন। তারা সেখানে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। কাউন্সিলর প্রার্থী শাকিল হোসেন পলাশ জানান, নগরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের খালেদাবাদ কলোনীর পুকুর পাড়ে আমার নির্বাচনী কার্যালয়। ঘটনার সময় রোববার দুপুরে আমি অফিসে বসা ছিলাম, তখন ৫-৭ টি মোটরসাইকেল আকস্মিক আমার অফিসের সামনে আসে। পরবর্তীতে মোটরসাইকেলে থাকা লোকজন আমার অফিসে ঢুকে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মারধর করে। এসময় তারা পিস্তলের বাট ও আমার অফিসে থাকা টিফিন ক্যারিয়ার দিয়ে মারধর করে।
স্থানীয় রুবেল, রাজন, হীরাসহ ৭-৮ জন লোক এ ঘটনার সাথে জড়িত জানিয়ে বলেন, কোন ঘটনা ছাড়াই এরা আমার নির্বাচনকে বানচাল করতে এ হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় আমি আইনের আশ্রয় নিবো, প্রাথমিকভাবে বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই পলাশের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল করে পুলিশ কার্যালয় অভিমুখে রওয়ানা দেয়। সেখানে গিয়ে তারা বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম-বিপিএম বলেন, প্রার্থীর ওপর হামলার ওপর একটি ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনেছি। ওই এলাকার মানুষ আমার কাছে এসে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
এরআগে শনিবার দিবাগত রাতে প্রচারনার গাড়ি (অটোরিক্সা) ও মাইক ভাংচুরের অভিযোগ করেছেণ সংরিক্ষত-৫ (১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড) আসনের বই প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মোসাঃ কামরুন্নাহার রোজী। যে ঘটনায় রোববার (০৪ জুন) সকালে তিনি বরিশাল সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
মোসাঃ কামরুন্নাহার রোজী জানান, শনিবার রাতে নগরের ফরেষ্টার বাড়ি এলাকায় প্রচারনা চলাকালে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইসরাত জাহান লাভলীর সমর্থক শাহরুক, সাগর, শাওনসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন আমার প্রচার গাড়িতে হামলা চালায়। এসময় গাড়ি চালক সজলকে মারধর, অটোরিক্সা ভাংচুর, পোষ্টার ছিড়ে ফেলে। পরে খবর পেয়ে আমার কয়েকজন কর্মী সেখানে গেলে তাদেরও মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় আহতের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কোন বক্তব্য পাওয়া না গেলেও ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগটি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। এদিকে রোববার (০৪ জুন) দুপুরে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারনায় বাধা, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাধারণ কাউন্সিলর পদের ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী মোঃ সাফিন মাহামুদ (তারিক) ও ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী শরীফ মোঃ আনিছুর রহমান (আনিছ শরীফ)। বিকেল ৩ টায় নগরের চান্দুমার্কেট এলাকার নিজ নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাফিন মাহামুদ (তারিক) বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় সকালে আমার ৫ জন নারী কর্মী ঘুড়ি প্রতীকের হ্যান্ডবিল আর ৫ জন নৌকা প্রতীকের হ্যান্ডবিল নিয়ে প্রচারণায় নামে। তখন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আনিছ শরীফের লোকজন তাদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। এরপর দুপুরে আমি কয়েকজন লোক নিয়ে আনিছ শরীফের পুরান বাড়ি এলাকায় প্রচারণায় যাই। হঠাৎ আনিছ শরীফের ভাই মোহন শরীফসহ এক-দেড়শত লোক আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা এসে আমার লোকজনকে উদ্ধার করে। তবে আমার দুজন লোককে পুলিশ আবার গ্রেপ্তারও করেছে। তিনি বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্শান্বিত হয়ে বর্তমান কাউন্সিলর ও সিটি নির্বাচনে ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রর্থী আনিছ শরীফ এবং তার লোকজন আমাকে উৎখাত করতে চায়। আমার লোকজনেক প্রাণনাশসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এরআগে শনিবার আমি তাদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের হয়রানি ও হুমকির ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি চাই সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ যাতে বজায় থাকে। অপরদিকে ধানগবেষনা রোডের নির্বাচনী কার্যালয়ে বিকেল সাড়ে ৩ টায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী শরীফ মোঃ আনিছুর রহমান (আনিছ শরীফ) জানান, আমার পূরাতন বাড়িতে গিয়ে মোঃ সাফিন মাহামুদ (তারিক) ও তার লোকজন দিনের বেলা নৌকার পোষ্টার ছিড়ে ফেলে এবং আমাদের উদ্দেশ্যে গালাগালি করে। আমার ছোট ভাই আমাকে খবরটি জানালে আমি কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে গিয়ে একজনকে ধরে ফেলি। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তারিকের নির্দেশে নৌকার পোষ্টার ছেড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। এরপর চান নামে তারেকের বডিগার্ড ঘটনাস্থলে এসে হুমকি-ধামকি দিলে তাকেও স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্রসহ ধরে ফেলে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে আসলে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে তারেককে গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি বলেন, আমি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ কামনা করছি। ভোট চাইতে গিয়ে সকালে মিথ্যা, বিকেলে মিথ্যা বলার লোক আমিনা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফিরোজ আহমেদের বাড়িতে আমি ভোট চাইতে গেছি, সেখানে তো তারা আমাকে সরবতও খাওয়াইছে, আর আমার বাড়িতে অন্যরা আসতে পারে। নৌকার বিজয় না হলে আমাদের বিপদ আছে, নৌকা হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতীক। এই তারেক তিনদিন পূর্বে নৌকার বিরুদ্ধে খারাপ কমেন্টস করেছে। এদিকে নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মারুফ আহম্মেদ জিয়া তার নির্বাচনী প্রচারনায় বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে তিনি বেশ কয়েকটি অভিযোগ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত আকারে দিয়েছেন। যদিও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাননি মারুফ আহম্মেদ জিয়া। বিশেষ করে তার এলাকার বস্তিগুলোতে তাকে ঢুকতে দিচ্ছে না প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মজিবর রহমান।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT