3:04 pm , March 29, 2023
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ পরিবারের মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে দু মাসে ৩০ হাজার টন চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাশাপাশি খোলা বাজারে বিতরণ কার্যক্রম-ওএমএস’র আওতায় বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় ১৫৫ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০ টাকা কেজি দরে ১৭০ টন করে চাল এবং ২৪ টাকা দরে ৩৭ টন আটা বিক্রি করছে খাদ্য বিভাগ। চলতি মাসের মত আগামী মাসেও ‘সামাজিক খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় পরিবার প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ কার্যক্রম চলবে। গত কয়েক বছর ধরে মার্চ ও এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৫ মাস ১০ টাকা কেজি দরে এ চাল বিক্রি কার্যক্রম চলার পরে গত সেপ্টেম্বর থেকে তা ১৫ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
এসব কার্যক্রমের ফলে দক্ষিণাঞ্চলে চাল ও আটার মত জরুরী খাদ্য পণ্যের মূল্য কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে খাদ্য বিভাগ ও প্রশাসন দাবী করলেও তেমন কোন জোরালো প্রভাব এখনো লক্ষণীয় নয় বলে মনে করছেন ভোক্তা সাধারন। তবে এ সব কার্যক্রমের ফলে ‘খাদ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি অনেকটাই আটকানো গেছে বলে দাবী করছেন খাদ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল।
সামাজিক খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের বাইরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৩টি পরিবারের মাঝে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে মাসে ১৪ হাজার ৬০৭ টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চলতি মার্চ ও এপ্রিল মাসের মত আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
বরিশালের ১০ উপজেলার ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৩৬টি পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কেনার সুবিধা পচ্ছেন। এ কার্যক্রমে পটুয়াখালীতে ১ লাখ ১৮ হাজার ৯১৩, ভোলাতে ৮৩ হাজার ৪৩৭, পিরোজপুরে ৩৫ হাজার ৮০৯, বরগুনাতে ৫৫ হাজার ৮০৪ ও ঝালকাঠীতে ৩২ হাজার ১৪০টি পরিবার এ সুবিধার আওতায় রয়েছেন।
জনসংখ্যার অনুপাত সহ আর্থÑসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় ১৫ টাকা কেজি দরে চাল সংগ্রহের কার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে বলে খাদ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে। এ লক্ষ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বাছাই ও তদারকি কমিটির সুপারিশে উপজেলা কমিটি তালিকা চূড়ান্ত করে থাকে বলেও জানিয়েছেন বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক। বিষয়টি স্থানীয় সরকার থেকে উপজেলা ও জেলা প্রশাসন দেখভাল করে থাকে বলে জানিয়েছে খাদ্য বিভাগের দয়িত্বশীল মহল। বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি তালিকা যাচাই বাছাই করে বেশ কিছু নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রমের আওতায় বরিশাল মহানগরীতে প্রতিদিন ২১ জন ডিলারের মাধ্যমে ৩৬ টন চাল ও ১১ টন করে আটা বিক্রি করা হচ্ছে। ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ২৪ টাকা দরে এসব আটা বিক্রি হলেও মাত্র ১১টি দোকান থেকে চাল ও আটা বিতরণ হচ্ছে। ফলে এসব চাল ও আটা কেনার জন্য প্রতিদিনই ফজরের নামাজের পরেই দোকানগুলোর সামনে সাধারন ক্রেতাদের লাইন চোখে পড়ছে। এর বাইরে ১০টি ট্রাকে শুধু চাল বিক্রি করা হলেও তার পেছনে মানুষের দীর্ঘ লাইনে রোজাদারদের দুর্গতির শেষ নেই। বরিশাল মহানগরীর বাইরে জেলা সদরগুলোতে ৫ জন করে ডিলার প্রতিদিন ৫ টন করে চাল ও ৫ টন আটা বিক্রি করছেন । তবে ভোলা সদরে অতিরিক্ত একজন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর বাইরে উপজেলা সদরগুলোতেও ৩০ টাকা কেজি দরে শুধু চাল বিক্রি করা হচ্ছে। খোলা বাজারে বিক্রি কার্যক্রমের আওতায় এখন দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলা ও ৪২ উপজেলায় ৩০ টাকা কেজি দরে প্রতিদিন প্রায় ১৭০ টন চাল বিক্রি করা হচ্ছে। একই সাথে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ সবগুলো জেলা সদরে ২৪ টাকা কেজি দরে ৩৭ টন আটা বিক্রি করছে খাদ্য বিভাগ। তবে কতদিন খোলা বাজারে এ চাল ও আটা বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে তা বলতে পারেনি খাদ্য বিভাগ।