শেবাচিমের মেডিসিন ওয়ার্ডের লিফট অকেজো !! ভোগান্তি চারিদিকে !!! শেবাচিমের মেডিসিন ওয়ার্ডের লিফট অকেজো !! ভোগান্তি চারিদিকে !!! - ajkerparibartan.com
শেবাচিমের মেডিসিন ওয়ার্ডের লিফট অকেজো !! ভোগান্তি চারিদিকে !!!

3:31 pm , January 26, 2023

আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক ॥ দুদিন ধরে লিফট বন্ধ। রোগীদের ট্রলিতে এনে স্ট্রেচারে শুইয়ে চার-পাঁচজন মিলে টেনে তুলছেন মেডিসিন ওয়ার্ডের ৪, ৩, ২ ইউনিটে। সিড়িতে হোঁচট খেয়ে পড়ছেন রোগী, কক্ষগুলোর আকৃতি ১০/১০ এর বেশি নয়। হলরুমে তাই বেডের সংখ্যা বেশি। তারপরও ফ্লোরিং চলছে। এটি দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রতিদিনের চিত্র। রোগীর চাপ কমাতে তাড়াহুড়ো করে করোনা ভবনে মেডিসিন ওয়ার্ড স্থানান্তরের পর ভোগান্তি যেন আরো চেপে বসেছে রোগীদের ঘাড়ে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, এটা কি কোনো হাসপাতাল? নতুন লিফট, অথচ বন্ধ। কর্তৃপক্ষ বলে নষ্ট হয়ে গেছে। সিঁড়িগুলা কি খাড়া, সুস্থ মানুষেরই উঠতে কষ্ট হয়, রোগীরা কেমনে ওঠে। তারউপর সিনিয়র কোনো ডাক্তার নাই, সব ইন্টার্নী। রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলছেন ‘রোগীরা কেবলমাত্র চিকিৎসকদের গবেষনার জন্য। প্রতিদিন বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে তিন চারবার পুরাতন ভবনে দৌঁড়ঝাপ করতে হয়। তাহলে এই নতুন ভবনে কেন আসা? ২৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার এভাবেই চিৎকার করে বলছিলেন শেবাচিম এর মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা নিতে আাসা রোগীর স্বজনরা।  তাদের কেউ ট্রলিতে রোগী নিয়ে স্ট্রেচারের জন্য অপেক্ষা করছেন, কেউ আবার স্ট্রেচারে শুইয়ে রোগীকে টেনে তুলছেন চারতলায়। বয়স্ক রোগীকে ধরে স্বজনরা হাঁপাতে হাঁপাতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা যে কি কষ্টকর অভিজ্ঞতা তা শুধু ভুক্তভোগীই জানেন।
অনুসন্ধানে জানা গেলো বিএনপির শাসনামলে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবন হিসেবে এই ভবনটির মামলা জনিত কারণে দীর্ঘ বছর পরিত্যক্ত রাখতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে করোনা মহামারী বৃদ্ধির সময়ে ২০২০ সালে ভবনটিতে ৩০০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়। গত বছর ডিসেম্বরে রোগীর চাপ সামলাতে তাড়াহুড়ো করে এই ভবনে করা হয় মেডিসিন বিভাগ স্থানান্তর। এতে আপত্তি তোলেন মেডিসিন বিভাগের প্রধান আনোয়ার হোসেন বাবলু। তিনি তখন এই ভবনটি উপযোগী নয় বলে দাবি করেন। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে আনোয়ার হোসেন বাবলু বদলি হয়ে যান বলে জানা গেছে। এই মুহুর্তে শেবাচিম এর মেডিসিন বিভাগের দায়িত্বে কে আছেন তা পরিষ্কার জানেন না ডাক্তারদের অনেকেই। তবে মেডিসিন ওয়ার্ড ৩ এ দায়িত্বরত নেফ্রলজি বিভাগের ডাক্তার হাফিজ জানালেন, মেডিসিন বিভাগের তথ্য এখন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল সাহেবের কাছ থেকে নিলেই ভালো হবে। আনোয়ার হোসেন বাবলু সাহেব কেন এই ভবনে আসতে গড়িমসি করছেন তা এখন ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে ।
তিনি বলেন, এই ভবন আসলে প্রশাসনিক ভবন হিসেবে পারফেক্ট। রোগীরা এখানে লিফট ব্যবহার করতে পারে না, কারণ একটি লিফটও স্ট্রেচার বা ট্রলি বহন উপযোগী নয়। এসময় পাশ থেকে কয়েকজন কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সিঁড়িগুলোও রোগীদের ব্যবহার উপযোগী নয়। তাই দুর্ঘটনার আশংকাও রয়েছে। একজন রোগীর স্বজন হোচট খেয়ে পা মচকানো অবস্থায় চিকিৎসা নিয়েছেন। আরেকজন পানি নিয়ে উঠতে যেয়ে হোচট খেয়ে পানি ফেলে আমাকেও ভিজিয়ে দিয়েছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
শেবাচিম এর পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, এটি প্রশাসনিক ভবনের জন্যই তৈরি হয়েছে। কিন্তু করোনাকালীন সংকট মুহুর্তে এটিকে দ্রুত করোনা ইউনিট করা হয়। প্রথমে ১০০, পরে ১৫০ ও ২০০ এবং তারও পরে ৩০০ শয্যার করোনা ইউনিট করা হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনিক ভবনে উন্নিত করার চিন্তাভাবনা যখন চুড়ান্ত ঠিক তখনই মেডিসিন বিভাগের চাপ সামলাতে মেডিসিনের চারটি ওয়ার্ড ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এটি সাময়িক। স্বাস্থ্য মন্ত্রী নিজে ঘুরে দেখেছেন আমাদের সমস্যা। তিনিও বলেছেন, হাসপাতালের অবকাঠামো পুণনির্মাণ করতে হবে। আরো ১০০০ বেড দিয়েও হবেনা। বেশী বেড প্রয়োজন হবে।
ডাঃ সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে এভাবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নয়, আমাদের স্থায়ী কর্মচারী প্রয়োজন। চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা দায়িত্বশীল হতে পারেন না বলে জানান সাইফুল ইসলাম।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT