দাসপাড়া নাকি আদমপুর, সেতু নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানিতে বিপাকে এলজিইডি দাসপাড়া নাকি আদমপুর, সেতু নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানিতে বিপাকে এলজিইডি - ajkerparibartan.com
দাসপাড়া নাকি আদমপুর, সেতু নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানিতে বিপাকে এলজিইডি

3:03 pm , January 16, 2023

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর দশমিনায় একটি সেতু নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানিতে দিশেহারা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। একপক্ষ চাচ্ছে সেতুটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যেখানে আছে সেই দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের দক্ষিন আদমপুর খান বাড়ির সামনেই থাকবে। অন্যপক্ষের নতুন দাবী দাসপাড়া নতুন বাজারে সেতুটি স্থানান্তর করতে হবে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি আন্দোলন করছে দু’পক্ষই। সাথে চলছে জোড় লবিং তদবির। এতে করে উপর মহলের পাল্টাপাল্টি ফোন ও সুপারিশে বিব্রত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারাও। তাদের দাবী, বিষয়টি জাইকা এর অর্থনৈতিক সহযোগিতায় হচ্ছে। সেতু স্থানান্তরিত হলে তারা অর্থনৈতিক সাহায্য তুলে নিতে পারে।
সরেজমিনে রোববার পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ঘুরে দক্ষিণ আদমপুর খান বাড়ি এলাকা, দাসপাড়া ও নতুন বাজার এলাকা ঘুরে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও যুক্তি শোনা যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মুখে। সেতু স্থানান্তরিত হবার দাবীতে সোচ্চারদের পক্ষে বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, সেতুটি একটু দক্ষিণে সরিয়ে নিলে সরকারের খুব একটা ক্ষতি হবে না বরং হাজারো মানুষের উপকার হবে। শুনেছি শুধুমাত্র সয়েল টেস্ট হয়েছে। অন্যদিকে আরেক পক্ষ যুক্তি দেখাচ্ছে সেতুটি যেহেতু আদমপুর এলাকায় খান বাড়ির সামনে ছিল তাই এটি এখানেই রাখা হোক। এদিকে গত শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের দক্ষিন আদমপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক মানুষ প্রায় ঘন্টাব্যাপী এ নিয়ে  বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। এ সময় মানববন্ধনে সেতুটি বর্তমান স্থানে রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রোকন উদ্দিন, হাফিজি মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আব্দুল কাইউম ও ইয়াকুব আলীসহ আরো অনেকে। বক্তারা বলেন, দক্ষিন আদমপুর খান বাড়ির সামনে বরাদ্দকৃত সেতু স্থানান্তর করার ষড়যন্ত্র করছে একটি কুচক্রি মহল। আমরা এখানেই ব্রীজটি নির্মাণের জোর দাবী জানাচ্ছি। এর আগে গত বছরের ৩১ অক্টোবর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও বহরমপুর এলাকাবাসী দক্ষিন দাসপাড়া নতুন বাজার চৌমহনিতে সেতুটি স্থানান্তরিত করার দাবীতে মানবন্ধন করেছেন।
“দুই মোরগের টানাটানি, খাবার খেল শিয়ালে” এমন একটি প্রবাদ আছে উল্লেখ করে দশমিনা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ বলেন, পত্রপত্রিকায় দীর্ঘদিন লেখালেখি হওয়ার কারণে পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য শাহজাদা সাজু ও এলজিডি কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় এই ব্রীজটি অনুমোদন হয়। টেন্ডার হয়ে কাজও শুরু হয়। কিন্তু দু’পক্ষের টানাটানিতে এখন কাজ বন্ধ। আমি বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়ে তাদের ঐক্যমত হওয়ার চেষ্টা করেছি, পারিনি। এখন বিষয়টি এলজিইডি কর্তৃপক্ষের হাতে। তারা যদি মনে করেন ব্রীজটি যেখানে আছে সেখানেই হবে তাহলে আমাদের সাহায্য প্রয়োজন হলে আমরা তা দিতে প্রস্তুত।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান বলেন,  ব্রীজটি নির্মাণের জন্য গত বছরের ১১ অক্টোবর  চুক্তি সম্পাদন করা হয়। বর্তমানে নির্ধারিত চেইনেজে (১৭৫০মিঃ) ব্রীজটি বাস্তবায়নের জন্য লে-আউট প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহনের সময় স্থানীয় জনগণ আপত্তি ও বাধা প্রদান করেন। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে উক্ত চেইনেজের পরিবর্তে ১৩০ দক্ষিনে সরিয়ে ১৬২০মিঃ চেইনেজে ব্রীজটি নির্মাণের সুপারিশ করে  তা বিবেচনার জন্য দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। আর এ জন্য ব্রীজটির সাইট স্থানান্তরের বিষয়ে জাইকার মতামত গ্রহন করা আবশ্যক। নতুন চেইনেজে ব্রীজ নির্মানকল্পে এ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই। ফলে এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের ভূমির নিশ্চয়তাসহ মাটি ভরাটের মাধ্যমে সংযোগ সড়ক নির্মিত হলেই কেবলমাত্র জাইকার নিকট প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা যেতে পারে। অন্যথায় ব্রীজটি অত্র প্রকল্প হতে নির্মাণ করা সম্ভব হবেনা বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT