4:01 pm , September 14, 2022
বিশেষ প্রতিবেদক ॥ বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের দরিয়াবাদ গ্রামটি যেন রতœগর্ভ একটি গ্রামের নাম। একজন প্রায়ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ওহাব খান সম্পর্কে জানতে চেয়ে একে একে পরিচয় ঘটছে শিক্ষা – সংস্কৃতি – রাজনীতির ও সমাজসেবায় রাষ্ট্রীয়ভাবে উল্লেখযোগ্য সব মানুষের সাথে। বর্তমান রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী রাশেদ খান মেনন ও তার বোন সেলিমা রহমান এই বাবুগঞ্জের সন্তান। বরিশালের আগামী মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা জাতীয় পার্টির রাজনীতিবিদ প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস এবং একজন সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ তাহমিনা আক্তারকে খুঁজে পেলাম এই বাবুগঞ্জ এসে। তাহমিনা আক্তার বর্তমানে চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ। তবে তার অন্যতম আর একটি পরিচয় হচ্ছে তিনি একজন রতœগর্ভা মা। তার দুই ছেলের বড়জন মামসাদ শানজারি খান একজন স্বনামধন্য ডাক্তার আর ছোট ছেলে তকি তাহমিদ খান দেশের সেবায় নিয়োজিত ভবিষ্যৎ পাইলট। কিছুদিন আগে শিক্ষানবিশ হিসেবে নিজেই বিমান চালিয়ে বরিশাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেন ও বাবা-মাকে সালাম করে আবার ফিরে যান। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় শিরোনাম হন তকি।
মা তাহমিনা আক্তার বলেন, আমার সন্তানরা দেশ সেবার ব্রত নিয়েই জন্মেছে। ওরা দেশের খাঁটি সৈনিক হবে এটাই আমাদের চাওয়া।
নিজের সম্পর্কে অধ্যক্ষ তাহমিনা আক্তার বলেন, আমার বাবা সফিজ উদ্দীন হাওলাদার বরিশালের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের একজন হিসাবরক্ষক ছিলেন। তবে প্রথম জীবনে তিনি শিক্ষকতা করতেন। তাই এলাকাবাসী বাবাকে মাষ্টার বলে ডাকতেন। বাবার আদর্শেই আমরা চারভাই ও একবোন বড় হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই আমি শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। তবে বিএম কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে চট্টগ্রামে একটি জামানীজ অটোমোবাইল কোম্পানির চাকুরীতে ঢুকে যাই। পরে ২০০৪ সালে সহকারী প্রভাষক হিসেবে এই চাঁদপাশা হাইস্কুল ও কলেজে চাকুরীতে যোগ দেই। তখন টিনসেডের স্কুল এন্ড কলেজে ঘরে বৃষ্টির সময় পানি পড়তো। স্কুলের প্রধান শিক্ষকই তখন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন মাত্র ৫০ জন ছাত্রছাত্রী ছিলো। ২০১৭ সালে এই কলেজে আমি যখন অধ্যক্ষ হলাম ছাত্রছাত্রী সংখ্যা তখন ২৫০ জন।
তাহমিনা আক্তার আরো বলেন, বর্তমান সরকারের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হয়েছে। আমারা জেলা তথা দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।
বরিশালের গার্লস গাইড, নারী ঐক্য পরিষদ এবং স্থানীয় সমাজসেবা সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে অসংখ্য পদক সম্মাননায় ভূষিত অধ্যক্ষ মোসাম্মৎ তাহমিনা আক্তার ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সফিজ উদ্দীন হাওলাদার এবং মা জাহানারা বেগম। ১৯৮৪ সালে তিনি বায়লাখলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং বরিশাল কলেজ থেকে এইচএসসিতে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি বিএম কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকুরী জীবনে প্রবেশ করেন। চার ভাই একবোন হবার সুবাদে বাবা-মা ও ভাইদের খুব আদরের বোন তিনি। তাই কেউই তাকে চোখের আড়াল করতে রাজী নয়। যে কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলেও এড়িয়ে যান বাবা ও ভাইয়েরা। পরে ১৯৮৮ সালের ১৫ জুন বাবার পছন্দের এবং তারই অফিসের কর্মকর্তা সাইনুর আজম খানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাহমিনা আক্তার। সাইনুর আজম খান মূলত বরিশালের মুলাদী উপজেলার সন্তান। তিনি তখন ৭ম বিসিএস দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা হয়েছেন।