জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকছে জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকছে - ajkerparibartan.com
জোয়ারের পানিতে দক্ষিণাঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের যানবাহন পারাপার বন্ধ থাকছে

3:41 pm , August 12, 2022

বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পূর্ণিমার ভরা কাটালে ভর করে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের পানিতে বিপুল ফসলী জমি সহ উপকুলভাগ সয়লাব হয়ে যাবার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কের ২৪টি ফেরি পয়েন্টের ৪৮টি ফেরি ঘাট দিনের বেশীরভাগ সময়ই ডুবে থাকছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন পারাপার থেকে শুরু সাধারন মানুষের চলাচলও এখন ভয়াবহ সংকটের কবলে। পাশাপাশি তিন দিন ধরে এ অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের বীজতলা ও রোপা আমনের একটি বড় অংশ প্লাবনের কবলে থাকায় ঝুকি বাড়ছে। তবে শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান হ্রাস পাওয়ায় নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি না ঘটলেও শণিবার থেকে শুরু হওয়া শ্রাবনের পূর্ণিমায় ভর করে জোয়ারের উচ্চতা আরো বাড়ার আশংকা রয়েছে। দক্ষিনাঞ্চলের সবগুলো পয়েন্টেই মেঘনা, তেতুলিয়া, আড়িয়াল খাঁ, বিষখালী, পায়রা, সন্ধা, সুগন্ধা, বুড়িশ^র, বলেশ^র ও কঁচা নদীর পানি এখনো বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে পূর্ণিমা ও বায়ুচাপের আধিক্যের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপকুলীয় জেলা সমুহ ও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এবং চরাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়োরের চেয়ে ২-৩ ফুট উচ্চতার বায়ুতারিত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হবার আশংকার কথা বলা হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরসমুহকে এখনো ২ নম্বর সতর্ক সংকেতের আওতায় রাখা হয়েছে। পায়রা বন্দরেও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। গত কয়েকদিনের মাঝারী বর্ষনের সাথে নগরীর পাশ^বর্তি কীর্তনখোলা নদীর পানি নগরীতে প্রবেশ করে বেশ কিছু এলাকা এখনো প্লাবিত। নগরীর কয়েকটি ব্যস্ততম সড়কেও গত তিন দিন ধরে পানি আটকে আছে।
এদিকে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে পূবালী হাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের ২৪টি ফেরি সেক্টরের ৪৮টি ঘাটের বেশীরভাগই জোয়ারের পানির তলায় চলে যাচ্ছে। এসব ফেরি ঘাটে দিনের বেশীরভাগ সময়ই যানাবাহন পারাপার বন্ধ থাকছে। সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ অবস্থা তৈরী হয়েছে বরিশালÑভোলাÑলক্ষ্মীপুর-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ইলিশা ও লাহারহাট ঘাটে। মেঘনা ও তেতুলিয়ার জোয়ারে এসব ফেরি ঘাট দিয়ে যানবাহন উঠানামাই করতে পারছে না গত কয়েকদিন। বরিশালÑপটুয়াখালীÑবরগুনা মহাসড়কের আমতলী ও মির্জাগঞ্জের পায়রাকুঞ্জ ফেরি সেক্টরের উভয় প্রান্তের ঘাটের অবস্থাও অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। বরিশাল-বাউফলÑদশমিনা সড়কের বগা ফেরিঘাটও জোয়ারের পানিতে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পৌছেছে।
এসব ঘাটের মধ্যে ইলিশা ও লাহারহাটে বিআইডব্লিউটিসি ফেরি পরিচালন করলেও ঘাটগুলো সচল রাখার দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিএ’র। এ অঞ্চলের অপর ২২টি ফেরি সেক্টর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। এসব ঘাট সচল রাখা সহ ফেরি পরিচালনের দায়িত্ব সড়ক বিভাগের হলেও ফেরি ও পন্টুন সমুহ মেরামত এবং রক্ষনাক্ষেনের দায়িত্ব ফেরি বিভাগের। কিন্তু পন্টুন, গ্যাংওয়ে ও ফেরি সমুহ সচল থাকলেও জোয়ারে ফেরি ঘাট প্লাবিত হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই ২৪টি ফেরি সেক্টরের বেশীরভাগেই যানবাহন পারপার ব্যাহত হচ্ছে।
তবে ঝুকিপূর্ণ ঘাটগুলোতে বর্তমানে যে স্বল্পদৈর্ঘের গ্যাংওয়ে ব্যবহার হচ্ছে, তার পরিবর্তে নুন্যতম ৬০ ফুট লম্বা গ্যাংওয়ে প্রতিস্থাপন করলে এ বিরূপ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন কারিগরি বিশেষজ্ঞগন। বিষয়টি নিয়ে সড়ক অধিদপ্তরের বরিশাল যান্ত্রিক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কোন মন্তব্য না করলেও সম্ভব সব কিছু করা হচ্ছে বলে জানিয়ে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তাদের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই বলেও জানান তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT