পদ্মা সেতুর স্মারক নোট খুঁজছে গ্রাহক পদ্মা সেতুর স্মারক নোট খুঁজছে গ্রাহক - ajkerparibartan.com
পদ্মা সেতুর স্মারক নোট খুঁজছে গ্রাহক

3:33 pm , June 30, 2022

বরিশালে আসেনি নতুন টাকা

আরিফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিবেদক ॥ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন স্মারক নোট ও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেশকিছু নতুন টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে সরকার। বরিশাল সহ সারাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা ছাড়াও ঢাকার ৪০টি শাখার জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে বলে জানা গেছে। আর এই নতুন টাকা, বিশেষ করে পদ্মা সেতুর স্মারক নোট কিনতে ব্যাংক ও ডিলারদের কাছে ভিড় করছেন গ্রাহকেরা। অথচ এখনো বরিশালে আসেনি নতুন কোনো টাকা। এমনটাই জানালেন ব্যাংক কর্মকর্তা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন ও কালেক্টর ভবন সংলগ্ন এলাকার ডিলাররা। বরিশালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপক গোলাম মাওলা জানান, তাদের কাছে এখনো নতুন নোট আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে আগামী সপ্তাহ থেকে নতুন নোট পাবো আমরা। তিনি আরো বলেন, বেশিরভাগ ব্যাংকে এখন জুন ক্লোজিং চলছে। তাই গ্রাহকেরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ গ্রাহক পদ্মা সেতুর স্মারক নোট খুঁজেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রাইভেট ব্যাংক গুলো নতুন টাকা না পেলেও অনেকসময় রাস্তার পাশে টেবিল ভর্তি নতুন নোট নিয়ে বসে থাকেন ডিলারদের অনেকে। আর এই আশায় দিনে গড়ে বিশ পঁচিশ জন পদ্মা সেতুর স্মারক নোট খুঁজেছেন বলে জানালেন নতুন টাকা বেচাকেনার ডিলার খলিল। নগরীর কালেক্টর পুকুর পাড় সংলগ্ন এলাকায় ৩০ জুন বিকেলে চারজন ডিলারকে দেখা গেছে। তারা নতুন টাকা নিয়ে বসে থাকলেও পদ্মা সেতুর স্মারক নোট বা পাঁচ টাকার নতুন নোট দিতে পারছেন না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত এখানে টাকা কেনাবেচার এসব দোকানগুলো খোলা থাকে বলে জানান খলিল। তিনি বলেন, জুন ক্লোজিং চলার কারণে এই মাসে লেনদেন সীমিত ছিলো। তবে ভ্রাম্যমাণ ডিলারদের অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। নগরীতে প্রায় ১০০ জন ডিলার রয়েছে বলে জানান খলিল। অনেকেই এ দোকানগুলোতে আসেন টাকা ভাংতি কিংবা বদল করতে। পুরাতন টাকা নিয়ে নতুন টাকা পরিবর্তন করতে ১০০ টাকায় ৫ থেকে ১০ টাকা রাখেন ডিলাররা। ছেড়া টাকা কেনা হয় নোটের এবং ছেড়ার ধরন দেখে। সাধারণত ৫০০ টাকায় ৫০ থেকে ৮০ বা ১০০ টাকা করে রাখেন তারা।
নাম বলতে রাজী নয়, এমন একজন ডিলার জানান, ছেড়া টাকা জমা করে এ টাকাগুলো তারা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংকের লোকজনদের ১ থেকে ২ শতাংশ লাভ দিয়েও তারা ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করে দেন এসব ছেড়া টাকা। আবার একইভাবে নতুন টাকা বাজারে এলে প্রাইভেট ব্যাংকের আগে তারাই তা সংগ্রহ করেন।
ইতিমধ্যেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে স্মরণীয় করে রাখতে গত ২৫ জুন শনিবার নতুন স্মারক নোট অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি দেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ স্মারক নোট অবমুক্ত করেন তিনি। যা ২৬ জুন থেকে বাজারে দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির স্বাক্ষরিত ১৪৬ মিমি ৬৩ মিমি পরিমাপের পদ্মা সেতুর স্মারক নোটের সম্মুখভাগের বাম পাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি ও ব্যাকগ্রাউন্ডে পদ্মা সেতুর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরিভাগে সামান্য ডানে নোটের শিরোনাম ‘জাতির গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু’ লেখা রয়েছে। এছাড়া নোটের উপরে ডান কোণে স্মারক নোটের মূল্যমান ইংরেজিতে ‘১০০’, নিচে ডান কোণে মূল্যমান বাংলায় ‘১০০’ এবং উপরিভাগে মাঝখানে ‘একশত টাকা লেখা রয়েছে।
নোটের পেছন ভাগে পদ্মা সেতুর পৃথক একটি ছবি সংযোজন করা হয়েছে। নোটের উপরিভাগে ডানদিকে নোটের শিরোনাম ইংরেজিতেPadma Bridge The symbol of national pride ONE HUNDRED TAKA লেখা রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বাম কোণে ও নিচের ডান কোণে মূল্যমান ইংরেজিতে ‘১০০’ এবং নিচে বাম কোণে বাংলায় ‘১০০’ লেখা রয়েছে। এছাড়া নোটের নিচে মাঝখানে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং এর বাম পাশে BANGLADESH BANKÕ’ ও ডান পাশে ONE HUNDRED TAKA লেখা রয়েছে।
১০০ ভাগ কটন কাগজে মুদ্রিত ১০০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোটটির সম্মুখভাগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বামে ৪ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। নোটের ডান দিকে জলছাপ এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, ‘২০০’ এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া নোটের উত্তরা পৃষ্ঠে ভার্নিশের প্রলেপ সংযোজন করা হয়েছে।
১০০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোটটির জন্য পৃথকভাবে বাংলা ও ইংরেজি লিটারেচার সংবলিত ফোল্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে। ফোল্ডার ছাড়া শুধুমাত্র খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা এবং ফোল্ডার ও খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২০০ টাকা।এছাড়াও আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে সরবরাহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বুধবার (২৯ জুন) থেকে এসব নোট সারাদেশে সরবরাহ শুরু হয়েছে। গত ২৮ জুন মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানান, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৯ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত (সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অফিসের কাউন্টারের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় করা হবে। এছাড়া, ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৪০টি শাখা থেকেও উল্লিখিত সময়ে ১০, ২০ ও ১০০ টাকা মূল্যমান পর্যন্ত নতুন নোট বিশেষ ব্যবস্থায় একটি প্যাকেট করে বিনিময় করা হবে। প্রতিটি শাখার জন্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যে কেউ পুরনো নোট দিয়ে ব্যাংক থেকে নতুন নোট বিনিময় করতে পারবেন। তবে বরিশালের বাজারে কোরবানি উপলক্ষে নতুন টাকা এখনো ছাড়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT