2:52 pm , December 26, 2021
হেলাল উদ্দিন ॥ চিকিৎসক সংকটে গত ২০ মাস ধরে বন্ধ বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট চালুর বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শেবাচিম হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালুর বিষয়ে গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. সামিউল ইসলাম। তবে তদ্বিবরের কারনে চিকিৎসক পদায়ন প্রক্রিয়া বার বার থেমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, লঞ্চ দূর্ঘটনার কারনে নয়, মন্ত্রনালয় থেকে একাধিকবার শেবাচিম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জন্য চিকিৎসক পদায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই তদ্বিরের কারনে তা সম্ভব হয়নি। কোন চিকিৎসকই শেবাচিম হাসপাতালে যেতে আগ্রহী নয়। এ বিষয়ে গনমাধ্যমের সহযোগীতা চেয়ে তিনি বলেন, এবার সর্বাতœক চেষ্টা করছি চিকিৎসক পদায়নের বিষয়ে। মন্ত্রনালয়ের হাসপাতাল শাখার অতিরিক্ত সচিব নাজমূল হক খান বলেন, মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে আন্তরিক রয়েছে। অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. সামিউল ইসলাম বলেন, বরিশালের বার্ন ইউনিটটি বন্ধ হয়ে পড়ে থাকাটা খুবই দুঃখজনক। দুর্যোগের এই সময়ে আরো বেশী অনুধাবন করেছি। তিনি বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে বন্ধের দিন শুক্রবার। শনিবারও সরকারী বন্ধ। তাই এই দুই দিনে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ দৃশ্যয়িত হয়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করে রেখেছি। কিভাবে বার্ন ইউনিট চালু করা যায়, সে বিষয়ে দু এক দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা প্রেরন করবো। আশা করছি মন্ত্রনালযের সাথে সমন্বয় করে খুব দ্রুত সময়ে বরিশালে বার্ন ইউনিট চালু করতে সক্ষম হব। তিনি আরো বলেন, অধিদপ্তর থেকে মেডিকেল অফিসার পদায়ন করতে পারি। অধ্যাপক লেভেলের চিকিৎসক মন্ত্রনালয় থেকে পদায়ন করা হয়। আর বার্ন ইউনিট চালু করতে হলে অধ্যাপক লেভেলের চিকিৎসক লাগবেই। চিকিৎসক শূন্যতায় ১ বছর ৮ মাস ধরে বন্ধ পড়ে আছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাষ্টিক সার্জারি ইউনিট। প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ২৮ এপ্রিল শেবচিম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের এক মাত্র চিকিৎসক এম এ আযাদের আকস্মিক মৃত্যু হয়। নতুন কোন চিকিৎসক পদায়ন না করায় এর পরপরই বন্ধ হয়ে যায় বরিশাল বিভাগে থাকা এক মাত্র বার্ন ইউনিটটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলেও অধিদপ্তর বা মন্ত্রনালয় থেকে কোন চিকিৎসক পদায়ন করা হয় নি। ২০১৫ সালের ১২ মার্চ হাসপাতালের নিচতলায় আটটি শয্যা নিয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ চালু হয়েছিল। বিভাগে আটজন চিকিৎসক ও ১৬ জন নার্সের পদ রাখা হয়। পরে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিটটি ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। চালু থাকা অবস্থায় পাঁচ বছরে পাঁচ হাজারেরও বেশি রোগী বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়েছেন।